ছাত্রদের রাজনীতি করা উচিৎ এবং সত্যিকারের শিক্ষিত হতে হবে
১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ তারিখের গোয়েন্দা রিপোর্টে জানা যায়, ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ তারিখে ঢাকার তাজমহল সিনেমা হলে পূর্ব বাংলা মুসলিম ছাত্রলীগের একটি ক্যামেরা মিটিং হয়। সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী মুসলিম লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি শেখ মুজিবুর রহমান। এতে প্রাদেশিক কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দবিরুল ইসলাম (নিরাপত্তা বন্দী), ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে সিরাজুল ইসলাম ও আজিজ আহমেদ, সেক্রেটারি হিসেবে আব্দুল খালিক নেওয়াজ খান সহ আরও ২৫ জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠিত হয়। সভাপতির ভাষণে শেখ মুজিব বলেন, পাকিস্তানের মত দেশ যেখানে শতকরা মাত্র পাঁচ শতাংশ লোক শিক্ষিত, সেখানে দেশের নানাবিধ সমস্যা ও অধিকার আদায়ে ছাত্রদের এগিয়ে আসতে হবে। সকল শোষণ ও নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে তাদের চুপ করে থাকা চলবেনা। সম্প্রতি সরকার নিয়ম করেছে, যেসব ছাত্র এসব কাজ করবে তাদের বৃত্তি বাতিল করা থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। তিনি এই আইনের চরম সমালোচনা করেন এবং অতি সত্বর এটি তুলে নেবার দাবী করেন। শেখ মুজিব ছাত্রদের শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, বরং প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে অনুরোধ করেন। এর জন্য পাঠচক্র, ডিবেট সোসাইটি সহ দেশে শিক্ষিতের হার বাড়ানোর জন্য প্রচার চালাতে বলেন। অতি দ্রুত সরকার যাতে একটি নির্বাচন দেয় তিনি সেই দাবী করেন। সারা দেশে সরকার কর্তৃক মানুষের স্বাধীনতা হরণ, সংগঠন ও সংবাদপত্রের উপর কালো আইন – ইত্যাদি তুলে নিতে বলেন। এছাড়া সরকার কর্তৃক আরবি হরফে বাংলা চালু করার প্রতিবাদ করেন। সরকার তাদেরকে অন্যায়ভাবে ‘কমিউনিস্ট’ হিসেবে আখ্যা দেয়, যা তিনি অস্বীকার করেন। তবে তিনি এও বলেন, সত্যিকারের মুসলমান জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করে যাবেন। [1, p. 269]
Reference:
[1] S. Hasina, Secret Documents of Intelligence Branch on Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, Vol I 1948-1950. Hakkany Publisher’s, 2018.