অমৃতবাজার পত্রিকা, ১১ এপ্রিল ১৯৭১, বাংলাদেশের গণহত্যার ব্যাপক নিন্দা
৩ এপ্রিল তারিখে পারুলিয়ায় অনুষ্ঠিত বার এসোসিয়েশনের সভায় সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ, নিরস্ত্র ও গণতান্ত্রিক জনগণের বিরুদ্ধে ব্যাপক আক্রমণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অযাচিত হত্যা, বৃদ্ধ, যুবতী, নারী ও শিশুদের অমানবিকভাবে হত্যার খবর সারা বিশ্বের মানুষের মাঝে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এসোসিয়েশন পাকিস্তান সামরিক সরকারের কাজের নিন্দা করেছে।
বর্ধমান বার এসোসিয়েশন সম্প্রতি একটি সভায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে যে, ৭০ মিলিয়ন মানুষের মুক্তি আন্দোলনকে থামানোর জন্য একনায়ক সামরিক বাহিনী দ্বারা যে নির্দয় নিপীড়ন ও সন্ত্রাসের শাসন চলছে তা উদ্বেগজনক। তারা ভুক্তভোগী মানুষের প্রতি পূর্ণ আন্তরিক সহানুভূতি এবং সমর্থন প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশকে অবিলম্বে স্বীকৃতির জন্য এই সভায় ভারত সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাঁকুড়া সমমিলনী কলেজের শিক্ষক পরিষদ সীমান্তের অন্য দিকের ঘটনার ওপর তার উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং ইয়াহিয়া খান এর সামরিক চক্রের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার নিন্দা জানায়। এটি বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর – যারা কেবল তাদের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে তাদের উপর – পাক-সামরিক বাহিনীর অপরাধকে দৃঢ়ভাবে নিন্দা জানায়।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি সাম্প্রতিক এক বৈঠকে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। তারা বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় নিন্দা ও জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য নিন্দা জানিয়েছেন।
কৃষ্ণনগর বার এসোসিয়েশন পশ্চিম পাকিস্তানে সামরিক জান্তা কর্তৃক বাংলাদেশের নিরস্ত্র জনগণের ওপর অসমর্থিত ও অহংকারী আক্রমণের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে গভীরতর উদ্বেগ ও নিন্দা জ্ঞাপন করে। পশ্চিমবঙ্গের সামরিক শাসকদের দ্বারা অব্যাহতভাবে নিরীহ জনসাধারণের উপর করা অন্যায়ের সর্বাত্মকভাবে নিন্দা জানান এবং বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী সরকারকে স্বীকৃতি দিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।