You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.05 | দ্যা সানডে টাইমস অব জাম্বিয়া, ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১, তৃতীয় বিশ্বের জন্য শিক্ষা - সংগ্রামের নোটবুক

দ্যা সানডে টাইমস অব জাম্বিয়া, ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১, তৃতীয় বিশ্বের জন্য শিক্ষা

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্বের সূত্রপাতে, যা খোলাখুলি যুদ্ধে জড়িয়ে পরিণত হতে পারে। কারণ বিশ্ব এতে আক্রান্ত নয়। এদিকে দশ কোটি শরণার্থীর ভারতে পালিয়ে গেছে।

এটি উল্লেখ করা আবশ্যক যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের নেতাদের উদ্বাস্তু সমস্যার ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে তার দেশের অবস্থা তুলে ধরেছেন এবং তিনি যা করেছেন তার জন্য তিনি কৃতিত্বের দাবিদার। সম্প্রতি বিশ্বের রাজধানীগুলিতে সফরে তিনি স্পষ্টতই চেষ্টা করেছেন তারা যেন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানকে ভারত ও বাংলাদেশের আন্দোলনের প্রতি তার শত্রুতা নিয়ন্ত্রণ এবং সমস্যাটির শান্তিপূর্ণ সমাধান করার চেষ্টা করতে অনুরধ করেন।

যদি ইয়াহিয়া তাদের বিরুদ্ধে অভিযান না করেই শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার সামান্যতম পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে আমরা বিশ্বাস করি না যে, ভারত এই অবস্থায় থাকবে যার জন্য তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টকে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হয়।

অবশ্যই, বিশ্বের নেতারা ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আগে থেকে খেলা শুরু করেছিলেন। তারা যেভাবে চেয়েছেন সবকিছুই সেভাবে যাচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বলে চলেছে যে এটি ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের মধ্যে ঢুকে পড়ার প্রচেষ্টার প্রতিফলন করবে। সম্ভবতঃ এটি মিসেস গান্ধীর প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছে – যা খুব কাজে দিয়েছে – যার জন্য ইয়াহিয়া খান বাস্তবে বুঝেছেন যে শুধুমাত্র ভারতের সাথে যুদ্ধ তার অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলির মেটানোর সর্বোচ্চ চাবিকাঠি না।

এটি এখন নিশ্চিতভাবে মনে হচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত হওয়ার অনিচ্ছা মূলত স্বার্থপরতার জন্য। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীন তাদের অবস্থানে আছেন। রাশিয়া ভারতীয়দের সমর্থন করে এবং চীনারা পাকিস্তানীদের সমর্থন করছে। সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যে সবসময় গোপনে একটি চীন-সোভিয়েত দ্বন্দ্বের জন্য আশাবাদী, এই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই পরিস্থিতিতে কমিউনিস্টরা একে অপরকে ঘৃণা করতে শুরু করবে।

জাতিসংঘ – যারা যুদ্ধ লাগার আগে ব্যাবস্থা নেয় তাদের ভূমিকাও ততটা জোরালো নয়। তারা নয়াদিল্লি বা ইসলামাবাদের উপর তেমন কোন কাজ করছেনা। কিন্তু সম্ভবত যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর টুকরাগুলি তুলে নেবে জাতিসঙ্ঘই।

এই পর্যায়ে যুদ্ধ থামানো খুব কঠিন। কারণ বেশিরভাগ যুদ্ধে সাধারণত কোন একটি দল আশা ছেড়ে দেয় অথবা ছেড়ে দিতে বাধ্য করে। পাকিস্তান থেকে ভারতে বিপুল সংখ্যক সামরিক বাহিনী আছে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়াকে জানতে হবে যে তিনি কী করছেন।

যুদ্ধ নিজেই বড় ক্ষমতাগুলোর কাছে অগ্রহণযোগ্য চ্যালেঞ্জবিহীন যা সরাসরি তাদের সম্প্রসারণের সাথে সম্পৃক্ত না। এটি তৃতীয় বিশ্বের জন্য একটি শিক্ষা, যাতে করে তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে তাদের উচ্চাভিলাষী আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে “জোটনিরপেক্ষ” হওয়া সত্ত্বেও তারা এখনও বড় শক্তিগুলির খেলার উপকরণ।