দক্ষিণ চীন মর্নিং পোস্ট, হংকং, ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১, ভারত-পাকিস্তান বিরোধ
ভারতীয় উপমহাদেশের বর্তমান গুরুতর পরিস্থিতির জন্য মূলত ইসলামাবাদ দায়ী। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সম্মেলন টেবিলে মিসেস ইন্দিরা গান্ধীকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন আলোচনা এবং তাদের পার্থক্য কমাতে চেয়েছিলেন এবং সীমান্ত এলাকা থেকে উভয়ের সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছলেন।
কিন্তু তিনি পূর্ব পাকিস্তানের সমস্যার মূল কারণ নিয়ে কোন কথা বলেননি যার জন্য ভারতকেও ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
মিসেস ইন্দিরা গান্ধী কয়েক মাস ধরে রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান এবং বিশ্বের অনেক দেশকে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতির সমাধান করার ব্যাপারে বলে আসছিলেন যাতে করে ৯ মিলিয়ন শরনার্থি দেশে ফিরে যেতে পারে।
শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে গিয়ে ভারত নিজেই বড় হুমকির সম্মুখীন।
কিন্তু বিশ্ব মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ ও অধিকার আদায়ের জন্য গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে তাদের প্রার্থীকে জয়ী করেছে – কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান রাজনৈতিক সমাধানের আবেদন নাকচ করছেন।
প্রায় ১০ মিলিয়ন উদ্বাস্তুকে দেখাশোনা করার মত ভারী বোঝা ভারতকে ক্রমাগত তলিয়ে দিচ্ছে – ভারতের এখন যে অবস্থা তাতে এই সমস্যার সমাধান করতে হলে তাকে বাংলাদেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে হবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে সাহায্য করতে হবে যাতে করে এই সব শরনার্থিরা তাদের বাড়িতে ফিরে যায়।
বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত হয়েছে। কিন্তু যদি কাউন্সিল হস্তক্ষেপ করে ভারতীয় উপ-মহাদেশের শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে চায় তবে আগে তাদেরকে পূর্ব পাকিস্তানের মৌলিক সমস্যাকে বাস্তবতার আলোকে স্বীকার করতে হবে।
যুদ্ধের পরিবেশ আরও ঘনীভূত হলে সেটা ভারত উপমহাদশের শান্তি বিনষ্ট করবে এবং বিশ্বশক্তিগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়াবে – এটা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে অনুধাবন করতে হবে।