ইন্দোনেশিয়ান অবজারভার, (জাকার্তা) | ৭ অক্টোবর ১৯৭১ | সম্পাদকীয় – পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী কোণঠাসা
জেনারেল ইয়াহিয়া খানের পাকিস্তানের সামরিক শাসনামল খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে। বিশ্বের সাথে দেশের অভ্যন্তরের জনগণ দ্রুত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের চাপ দিচ্ছে। দেউলিয়া অবস্থা এড়াতে ইয়াহিয়া খানের সাধারণ ক্ষমা এবং বেসামরিক লোক দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক গভর্নরকে প্রতিস্থাপনের ঘোষণা ভারতে অবস্থিত ৯ মিলিয়ন শরণার্থীদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ সৃষ্টি করেনি। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মূল সমস্যাকে স্পর্শই করেননি। শরনার্থিদের ব্যাপারেও কোমল মনোভাব দেখান নি। তিনি গত ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অপ্রতিরোধ্য বিজয়ের পর পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ আইনসভা কি হবে সে সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করেননি।
এই সমস্যা এড়িয়ে গেলে পাকিস্তানের সঙ্কট এক ইঞ্চিও সমাধান হবেনা। এদিকে, স্পষ্ট রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া পাকিস্তানের দুর্দশা আরও অসহনীয় হয়ে উঠছে। আর্থিক দেউলিয়াত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। এমনকি ইয়াহিয়া খানের শাসনামলের সবচেয়ে আশাবাদী সমর্থক ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবেন না যে এই সমস্যা কতদিন স্থায়ী হবে।
বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের ভূমিকা নিয়ে কথা বলে বিশ্ববাসীর সহানুভূতি আদায়ের পাকিস্তানী প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়েছে। আজ না হোক কাল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে এবং সাধারণ নির্বাচন অনুসারে পদক্ষেপ নিতে হবে। যত দ্রুত তিনি এটা করবেন ততো দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে।