১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ঃ আত্মসমর্পণ দলিল চূড়ান্তকরণ
গত তিনদিন ভারতীয় ইস্টার্ন আর্মি হেড কোয়ার্টার আত্মসমর্পণের দলিল রচনায় ব্যাস্ত ছিল। কিভাবে তা তৈরি করা হবে আন্তজার্তিক আইন বিশেষজ্ঞদের ডাকা হল। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সারেন্ডার ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা হল। সব দিক খুঁটি নাটি বিবেচনা করে একটি ডকুমেন্ট দাড়া করা হল। বেলা একটা নাগাদ কলকাতা থেকে ঢাকা এসে পৌঁছান যৌথ বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল জ্যাকব এবং জেকবের স্টাফ অফিসার কর্নেল খাড়া। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পাকিস্তান ইস্টার্ন কম্যান্ড সিজিএস ব্রিগেডিয়ার বাকির সিদ্দিকি এবং মেজর জেনারেল নাগড়া। তারা সকলে ব্রিঃ বাকিরের গাড়িতে করে নিয়াজির কাছে গেলেন। জেকব পৌছার আগেই শহরে ঢুকে গেছে উত্তরের ৬৩ কেভেলরি(বগুড়া থেকে) ২প্যারা ব্যাটেলিয়ন(ফাইটার অব টাংগাইল), উত্তর পূর্বের ৪গার্ড(ফাইটার অব গঙ্গাসাগর) পূর্বদিকের ১৮ রাজপুত, ১০ বিহার, ১৪ গার্ড এর সামনের অংশ। কাদেরিয়া বাহিনী সমগ্র বিমান বন্দর ঘিরে আছে। বিমানবন্দরে অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে ২ প্যারা ব্যাটেলিয়নকে মোতায়েন করা হয়েছে।
৪ টার দিকে অরোরা, মিসেস অরোরা, এয়ার মার্শাল দেওয়ান, ৪ কোর কম্যান্ডার সগত সিং, ভাইস এডমিরাল কৃষ্ণান, গ্রুপ ক্যাপ্টেন খোন্দকার এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছেন। ২ প্যারা তাদের গার্ড অব অনার প্রদান করেন। তাদের রিসিভ করেন নিয়াজি। দুপুর একটার পর জেনারেল হেড কোয়ার্টারে বসে আত্মসমর্পণের দলিল তৈরির বৈঠক। এক পক্ষে নিয়াজি, ফরমান আলী ও জামশেদ। অপর পক্ষে জ্যাকব, নাগরা ও কাদের সিদ্দিকি। নিয়াজি গং কোনমতেই যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করবে না। পৃথক ভাবে মুক্তিবাহিনীর কাছে তা তো প্রশ্নই আসে না।এর কারন হল তাদের প্রেস্টিজ ইস্যু। সিদ্ধান্ত হয় দলিলে স্বাক্ষর করবেন বিজয়ী বাহিনীর পক্ষে পূর্বাঞ্চলীয় ভারতীয় ও বাংলাদেশ বাহিনীর জয়েন্ট কমান্ডিং ইন চিফ লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এবং বিজিত বাহিনীর পক্ষে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লে. জেনারেল এ.এ.কে. নিয়াজি।