১৫-১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ সিলেট দখল ও আত্মসমর্পণ
১৫ ডিসেম্বর সিলেট কে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়। দক্ষিন দিক থেকে ভারতীয় ৫৯ ব্রিগেড তৎসহ মুক্তিবাহিনী পূর্ব দিক থেকে ইকো সেক্টর তৎসহ মুক্তিবাহিনীর ৪ নং সেক্টর পশ্চিম দিক থেকে ৩ বেঙ্গল। ১৫ ডিসেম্বর রাতে ব্রিগেডিয়ার ওয়াদকে তার ৫/৫ গুর্খা এবং ৮৬ বিএসএফ এর অংশ আক্রমনে নিয়োজিত করেন। সারা রাত যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর সকালে খাদিম নগর মুক্ত হয়। এখানে দুই কোম্পানি পাক সৈন্য ছিল। ইকো সেক্টর এম সি কলেজে ক্যাম্প করে। ১৬ ডিসেম্বর সকালে ভারতীয় ৪/৫ গুর্খার সিও এবি হারলিকার এর কাছে ২ জন সৈনিক পাঠিয়ে সিলেট গেরিসন আত্মসমর্পণের প্রস্তাব পাঠায়। হারলিকার এ প্রস্তাব ডিভিশন সদরে মেজর জেনারেল কেভি কৃষ্ণা রাওকে জানান। রাও তার ব্রিগেড কম্যান্ডার কুইনকে এ বিষয়ে বেবস্থা নিতে বলেন। পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে একজন অফিসার আত্মসমর্পণের শর্তাবলী চূড়ান্ত করার জন্য হারলিকার এর সাথে সিলেট রেল ষ্টেশনে সভা করেন। এর মধ্যে আত্মসমর্পণের কাজে ভারতীয় বাহিনী নৌকা যোগে সুরমা পার হয়ে উত্তরে প্রবেশ করতে থাকে। পাক বাহিনী ভয়ে এসময়ে কিন ব্রিজের একাংশ উড়িয়ে দেয়( ভিন্নমত আছে) ১৭ তারিখ বিকাল ৩ টায় সিলেট পাকবাহিনী ৮ ডিভিশন জিওসি কৃষ্ণা রাও( ভিন্নমত) এর কাছে সিলেট ক্যাডেট কলেজে আত্মসমর্পণ করেন। এখানে তিন ব্রিগেডিয়ার সহ ১০৭ জন অফিসার এবং প্রায় ৬৫০০ জন সৈনিক আত্মসমর্পণ করে।
ইকো সেক্টর ছিল ১ বেঙ্গল এর ব্রিগেড। ব্রিগেডিয়ার ওয়াদকে, লেঃ কঃ জিয়াউর রহমান এবং দেওান ফরিদ গাজী প্রায় এক সাথে থাকতেন এবং শলা পরামর্শ করতেন। বিনা যুদ্ধে সিলেটে পাকবাহিনীকে আত্মসমর্পণ করার জন্য দেওয়ান ফরিদ গাজী একটা প্রচেষ্টা নিয়েছিলেন বলে ব্যাপক ভাবে প্রচারিত একটা তথ্য আছে যদিও সেটা জামালপুরের বশির ও সঞ্জুর মত আন্তজার্তিক পর্যায়ে প্রচারিত নয় সেটি হল ১৪/১৫ ডিসেম্বর ২ জন মুক্তিযোদ্ধাকে একটি জিপে করে শহরে প্রবেশ করান ফরিদ গাজী। তাদের গাড়িতে মাইক ছিল। সে মাইকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ প্রচার করছিল। পাক বাহিনী তাদের আটক করে এবং নির্যাতন করে পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এই দুই মুক্তিযোদ্ধার নাম আনোয়ার হোসেন গোরা এবং ফুরকান আলি কুটু মিয়া। এদের দুজনের ওয়াদকের এবং দেওয়ান ফরিদ গাজীর সাথে গ্রুপ ছবি থাকায় অনুমিত হয় তারা দুজনের প্রিয়ভাজন ছিলেন।
নোটঃ বাংলাদেশের লেখকদের বর্ণনা ভারতের হিসাবের একদিন আগে (১৪ ডিসেঃ) ভারতের সরকারী প্রকাশনার তারিখ বাংলাদেশের হিসাবের(১৫ ডিসেঃ)একদিন পরে। তাই এমসি কলেজের যুদ্ধ বর্ণনা বাদ দেয়া হল।