You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.15 | রংপুর আক্রমণ- এই যুদ্ধে ভারতের নিহত ৯ অফিসার সহ ১৪৯ - সংগ্রামের নোটবুক

১৫-১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ রংপুর আক্রমণ

যৌথবাহিনীর ৬৯ আরমার্ড রেজিমেন্ট বিভিন্ন দিক থেকে মিঠাপুকুর দিকে অগ্রসর হয়। রাতে তাঁরা চারদিক থেকে মিঠাপুকুর শহর ঘিরে ফেলে। উভয় বাহিনীর মধ্যে গোলাবর্ষণে ভারতীয় বাহিনীর ১১ জন নিহত হয় ১৫ জন আহত হয়। ভারতীয় ৩টি পিটি- ৭৬ ট্যাঙ্ক এর দুটি আরসিএল গানের গোলার আঘাতে ধ্বংস হয়। তা সত্ত্বেও পাকিস্তানীদের পশ্চাদপসরণে বাধ্য করা হয় এবং দুপুরে মিঠাপুকুর দখলে আসে। এখানে ৮পাঞ্জাব এর ৬ জন আটক হয়। ২টি এইচএমজি, ১টি চাইনিজ রাইফেল আটক করা হয়। ভাটটির ৬৬ ব্রিগেড তারপর আক্রমণ করার জন্য অগ্রসর হয়। এখান থেকেই ভাটটির আরমার্ড বাহিনীকে ঢাকায় পাঠানো হয় ফলে রংপুর আক্রমন স্থগিত রাখা হয়। পরে তাকে আক্রমনের নির্দেশ দেয়া হলে তার বাহিনী ১৫ তারিখ শেষ আলোতে ঘাঘট নদীর তীর পর্যন্ত অগ্রসর হয়। ২০২ ব্রিগেডকে মিঠাপুকুর নাসিরাবাদ ফতেহপুর দিক থেকে রংপুর আক্রমন করতে বলা হয়। তারাও ঘাঘট নদীর তীর পর্যন্ত অগ্রসর হয়।

সেখানে তারা ৩ কোম্পানি পাক সৈন্য এর মুখোমুখি হয়। দুদিকের বাহিনী তাদের ঘিরে ফেললে তাদের ৮ পাঞ্জাবের সিও সহ ১৪ জন অফিসার ৮ জন জেসিও ৩২২ জন জওয়ান আত্মসমর্পণ করে। পরে ১৫-১৬ ডিসেম্বর রাতে ২০২ ব্রিগেডের প্রায় এক ব্যাটেলিয়ন সৈন্য ফতেহপুর দিয়ে রংপুর অগ্রসর হয় কিন্তু ২২ মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রির সাথে আরমার্ড দলটি সময়মত একত্র হতে না পারায় আর অগ্রসর হয়নি। ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টায় পাক বাহিনীর পক্ষ থেকে ৩৪ ব্রিগেড অধিনায়ক নাইমের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব আসে। তিনি রংপুরে ভারতীয় ৬৬ ব্রিগেডের অধিনায়ক শর্মার কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং তার নির্দেশে বিভিন্ন অংশে তার ব্রিগেডের বাকি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে। নওগাতে ২০২ ব্রিগেড অধিনায়ক ভাটটির কাছে ১৩ এফএফ। বগুরায় ৩৪০ ব্রিগেড অধিনায়ক বকশির কাছে সেখানকার বাকী সৈন্য, ঈশ্বরদীতে ১৬৫ ব্রিগেড অধিনায়ক পান্নুর কাছে ৫৭ ব্রিগেড (পরে) ও ১২ পাঞ্জাবের সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করে। আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ অবশ্য পরে হয়। ২০ ডিভিশন এলাকায় ৩-১৬ ডিসেম্বর সময়ে (বর্তমানের সমগ্র রাজশাহী বিভাগ এবং দিনাজপুর রংপুরের দক্ষিনাংশ) মোট আত্মসমর্পণ ৩০৪ জন অফিসার, ৩৭১ জেসিও ১১২১৮ জওয়ান। (লচমন সিংহ এর বেশী বলেছেন সম্ভবত সরকারী তালিকায় ৫৭ ব্রিগেডের হিসাব বাদ দিয়ে বলা হয়েছে ৫৭ ব্রিগেড ১৭ ডিসেম্বর ঈশ্বরদীতে আত্মসমর্পণ করে)। এই যুদ্ধে ভারতের নিহত ৯ অফিসার সহ ১৪৯। আহত ২৭ অফিসার সহ ৪৪৯।