You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.14 | বগুড়া দখল ও আত্মসমর্পণ - সংগ্রামের নোটবুক

১৪-১৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ ঃ বগুড়া দখল ও আত্মসমর্পণ

চূড়ান্ত বগুড়া আক্রমনের আগেই ভাটটির ব্রিগেডকে ক্ষেতলাল থেকে ঢাকা যেতে বলা হয়। গোবিন্দগঞ্জে অবস্থান নেয়া ৩৪০ ব্রিগেডকে বগুড়া দখলের দায়িত্ব দেয়া হয়। বগুড়ায় এসময়ে পাকিস্তানী বাহিনীর ১৬ ডিভিশন সদর, ২০৫ ব্রিগেড সদর, ৮ বালুচ, এবং কিছু আর্টিলারি বাহিনী ছিল। আক্রমন শুরু হলে মেজর মেহরা এর ৬৯ আরমার রেজিমেন্ট এক দল মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে গাবতলি দখল করে। ৫ মাদ্রাজকে একটি আর্টিলারি দল সহ বগুড়ার উত্তর ও দক্ষিন দিক থেকে আক্রমনের নির্দেশ দেয়া হয়। তারা বগুড়ার রেল লাইনের উত্তর পর্যন্ত দখলে সক্ষম হয়। পাকিস্তানী বাহিনী পুলিশ লাইন এবং পৌরসভা অফিসে অবস্থান নেয়। বগুড়ায় দুপুরে বিমান হামলা করা হয় এবং রাতে আর্টিলারি ফায়ার করা হয় সে সাথে টি-৫৫ ট্যাঙ্কের গোলাবর্ষণের সাথে পাকিস্তানী সৈন্যদের কাবু করে ক্যান্টনমেন্টে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। উত্তরে মহাস্থানগড়ে অপর এক দল করতোয়া ব্রিজ দখল করে। পূর্ব দিক থেকে ৬ রাজপুত আক্রমন করে। তারা বগুড়া – নাটোর, বগুড়া – সিরাজগঞ্জ রাস্তা ব্লক করে। ২/৫ গুর্খা দক্ষিন দিক থেকে আক্রমণ করে। এ আক্রমনে তারা ১৬ ডিভিশন সদর দপ্তর দখল করে।

১৫ ডিসেম্বর সকালে পাকিস্তানী বাহিনী কেবল থানা এবং পুলিশ লাইনে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ১৫ তারিখ সন্ধ্যা থেকে দলে দলে পাক বাহিনী সাদা পতাকা হাতে অগ্রবর্তি মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। সকাল সাড়ে ৮ টায় ব্রিগেড অধিনায়ক বাদে সমগ্র ২০৫ ব্রিগেড ভারতীয় ২/৫ গুর্খা ব্যাটেলিয়ন এর সিও লেঃ কঃ বিলমালিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করে। ব্রিগেড অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার তাজাম্মুল নওগাঁর দিকে পলায়ন করেন। তিনি নওগাঁয় তার বাহিনীর সাথে মিলিত হওয়ার জন্য সেখানে যাচ্ছিলেন। তাকে ১৭ তারিখে মুক্তিবাহিনীর একটি দল আটক করে এবং আহত অবস্থায় ভারতীয় বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। বগুড়ার দক্ষিনে আক্রমনের জন্য জয়পুরহাটে থাকা ১৬৫ ব্রিগেডকে বগুড়ায় যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। লুটপাট বন্ধে, অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে ১৭ তারিখে বগুড়ায় কারফিউ জারী করে ভারতীয় কম্যান্ড। ১৮ তারিখে নজর হোসেন শাহকে ভারতীয় হেলিকপ্টারে বগুড়া আনা হয় এবং সেদিন মেজর জেনারেল লচমন সিংহ লেহ্ল এর কাছে আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ করেন মেজর জেনারেল নজর হোসেন। বগুড়ায় ৬১ জন পাক অফিসার, ৫৭ জন জেসিও,১৭০১ জন জওয়ান আত্মসমর্পণ করে। নিহত হয় ২ জন অফিসার ৬৩ জন সৈনিক আহত হয় ১ জন জেসিও ও ৩০ জন সৈনিক। ভারতের পক্ষে নিহত হয় ১ জন অফিসার,১৬ জন জওয়ান আহত হয় ৩ জন জে সি ও সহ ৪৯ জন।