You dont have javascript enabled! Please enable it!

১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ চাপাই নওয়াবগঞ্জ আক্রমন

ভারতীয় বাহিনীর অপারেশন প্ল্যানে রাজশাহী এবং চাপাই নওয়াবগঞ্জ আক্রমন বা দখল পরিকল্পনা ছিল না। তখনকার রাজশাহী জেলার নওগাঁ এবং নাটোর দখল পরিকল্পনার অংশ ছিল। এ জন্য রাজশাহী বা চাপাই এর বিপরীতে ভারতীয় অবস্থানে কোন সেনা মোতায়েন ছিল না। এখানে পাকিস্তানী ফরমেশন ছিল নিম্নরূপ নাটোর ৩৪ ব্রিগেড সদর, রাজশাহী, রহনপুর, শিবগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ৩২ পাঞ্জাবের কোম্পানি, পত্নীতলা, সাপাহার, রসুলবিল, গণ্ডার ডাঙ্গা ১৩ এফএফ কোম্পানি। ৩ তারিখের সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হলে এখান থেকে অতিরিক্ত পাকিস্তানী সৈন্য ঝিনাইদহ ফ্রন্টে এবং ৭-৮ তারিখে বগুড়া ফ্রন্টে পাঠানো হয়। ভারতীয় পরিকল্পনার কারনে এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা একক দায়িত্ব হিসাবে যতটুকু পারেন তত টুকু আক্রমন পরিচালনা করে আসছিলেন। ৭ নং সেক্টর ১০ তারিখে চাপাইনবাবগঞ্জ দখলের উচ্চাভিলাষী আক্রমন পরিকল্পনা নেয়। (বিভিন্ন সুত্রে উল্লেখ আছে এই বাহিনীকে ভারতীয় বাহিনী সহায়তা করার কথা ছিল বাস্তবে কিন্তু তা ছিল না)
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের উদ্দেশে ১০ ডিসেম্বর প্রায় ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর দুই কোম্পানি মুক্তিবাহিনীসহ সোনামসজিদ সীমান্ত অতিক্রম করে শিবগঞ্জ দখল করেন। ১৩ ডিসেম্বর চাপাই নবাবগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন অবস্থান থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীর তাঁর দলকে নিয়ে কয়েক ভাগে শহরে ঢুকে পড়েন। রাতে শহর দখলের পরিকল্পনা প্লাটুন ও সেকশন কমান্ডারদের বুঝিয়ে দেন। ১৪ ডিসেম্বর সকাল আটটায় জাহাঙ্গীর তাঁর দল নিয়ে তিনি দক্ষিণ দিক দিয়ে অগ্রসর হয়ে ১০টির মতো বাংকার দখল করলেন। এর পর এগিয়ে যান বাকি বাংকারগুলো দখলের জন্য। একপর্যায়ে সিঅ্যান্ডবি ঘাটের কাছে রাস্তার পাশের একটি বাড়ি থেকে একটি গুলি এসে তাঁর কপালে লাগে। ঘটনাস্থলেই শহীদ হন ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। নেতার মৃত্যুতে যুদ্ধ-পরিস্থিতি পাল্টে যায়। মুক্তিবাহিনী পিছিয়ে আসে। জাহাঙ্গীরের লাশ উদ্ধার করাও সম্ভব হয় নি। মেজর গিয়াস, লে. রফিক, লে. কাইউম একযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আক্রমণ করলেন।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!