১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ ভারত মহাসাগরে সোভিয়েত নৌ বহর
৩ ডিসেম্বরের সর্বাত্মক যুদ্ধের পর থেকে নয়াদিল্লীর সোভিয়েত সামরিক এটাচের ব্যাস্ততা বেড়ে যায়। তার মাধ্যমেই সোভিয়েত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ভারতীয় নৌ বাহিনীর সাফল্য সংবাদ প্রেরিত হচ্ছিল। সোভিয়েত প্রতিরক্ষা মন্ত্রী Andrey Grechko নিজে সম্পূর্ণ একক ভাবে যুদ্ধ মনিটর করছিলেন। সোভিয়েত সামরিক এটাচের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলেন একাত্তরে সোভিয়েত গোয়েন্দা প্রধান Gen. Pyotr Ivashutin । এর মধ্যে গোয়েন্দারা খবর দিয়েছিল ব্রিটিশ নৌযান ‘ঈগল’ ওমানের ঘাটি ছেড়ে ভারতীয় সমুদ্রসীমায় আসছে। সে কথা জানা মাত্রই সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের ১০ অপারেটিভ ব্যাটেল গ্রুপ (প্যাসিফিক ফ্লিট কমান্ডার ভ্লাদিমির ক্রুগলিয়াকফের (Vladimir Kruglyakov ) নেতৃত্বে একটি নৌযুদ্ধ ইউনিট প্রেরণ করে।
এই বহর ছিল জাপানের উত্তরে যা সেখান থেকে রওয়ানা হয় ১০ ডিসেম্বর। ভারত মহাসাগরে আগে থেকেই একটি নৌ বহর আগে থেকেই ছিল তবে তা মার্কিন মোকাবেলায় যথেষ্ট ছিল না। ১২ ডিসেম্বর করাচী থেকে সব বিদেশির উদ্ধারকাজ শেষ হওয়ার পর পরই ব্রিটিশ নৌবহর বঙ্গোপসাগর ত্যাগ করে মালদ্বীপের পশ্চিমে সরে আসে। মালদ্বীপ তখন একটি ব্রিটিশ নৌঘাঁটি। ফলে ১০ অপারেটিভ ব্যাটেল গ্রুপ (প্যাসিফিক ফ্লিট সেখানে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি। এর মধ্যে সপ্তম নৌবহরের ৭৪ টাস্ক ফোরসের এন্টারপ্রাইজ ১৪ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর ত্যাগ করে আন্দাবার সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে ও অবস্থান গ্রহণ করে। সোভিয়েত ১০ অপারেটিভ ব্যাটেল গ্রুপ (প্যাসিফিক ফ্লিট) কে তাদের মোকাবেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। তারা প্রশান্ত মহাসাগর থেকে দ্রুত ছুটে যায়। তখন সোভিয়েত মিসাইল রেঞ্জ ছিল ৩০০ কিমি। তাদের মোকাবেলা করতে এই দূরত্ব এর মধ্যে থাকতে হবে। তারা এর মধ্যেই ১৭ ডিসেম্বর এই রেঞ্জ এ পৌঁছে যায় এবং মার্কিন বেতার সঙ্কেত ধারন করতে থাকে। মার্কিন ফ্লিট প্রধান admiral Dimon Gordon তাদের সদরে সংবাদ পাঠান আমাদের দেরী হয়ে গেছে। তারা আমাদের কাছাকাছি চলে এসেছে। পরে ৭ম নৌবহর শ্রীলঙ্কার দিকে চলে যায় তাদের ফলো করতে থাকে সোভিয়েত নৌ বহর।
নোটঃ সপ্তম নৌবহর কোন সময়ে বঙ্গোপসাগরে পৌঁছেনি এমনকি আন্দামান নিকোঁবর দ্বীপের উত্তরেও আসেনি।