৯ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ আশুগঞ্জ ফ্রন্ট
ভারতীয় বাহিনী ৬ তারিখে রেডিও ইনটারসেপট এর মাধ্যমে জানতে পারে নিয়াজি মৌলভিবাজারে অবস্থান করা ৩১৩ ব্রিগেড এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অবস্থানরত ২৭ ব্রিগেডকে ঢাকায় ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে। ৭ তারিখ ২৭ ব্রিগেড আশুগঞ্জের পূর্বে অবস্থান নেয়। মৌলভিবাজারের ৩১৩ ব্রিগেড (১৮ রাজপুত,১০ বিহার ) জলপথে আশুগঞ্জ আসতে পারে ভারতীয় ৩১১ ব্রিগেড অধিনায়ক তার ১৮ রাজপুত ব্যাটেলিয়ন আশুগঞ্জের উত্তরে নদী ঘেঁষে, আশুগঞ্জের উত্তরে রাজপুতের দক্ষিনে ১০ বিহারকে, ৪ গার্ড আশুগঞ্জের দক্ষিনে মোতায়েন করার জন্য অগ্রসর করান। সাথে ২ বেঙ্গল এবং পিছনে ১১ বেঙ্গল এবং সেক্টর বাহিনীর অবস্থান করে। ১০ বিহার ছিল একেবারেই পাক অবস্থানের কাছাকাছি। আশুগঞ্জে পাকবাহিনী নাই ১০ বিহার আশুগঞ্জের ব্রিজের কাছাকাছি চলে যায় এবং সেখানে পাক বাহিনীর উপস্থিতি থাকায় যুদ্ধে লিপ্ত হয়।
১৮ রাজপুতের সি ও ডি কোম্পানি ব্রিজ দখলে উদ্যত হলে পাকবাহিনী ব্রিজের উপর হামলা করে ফলে একটি স্পান ধ্বংস হয়। এই যুদ্ধে ভারত বিমান বাহিনীর সাহায্য নেয়। তা সত্ত্বেও পাক বাহিনীর আক্রমনে ভারতীয় বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়। ভারতের ৪ টি ট্যাঙ্ক ধ্বংস হয় মারা যায় ৬০-৭০ জন সৈন্য। পাক বাহিনীর শতাধিক নিহত হয়। মিত্র বাহিনী পিছনে হটে যায়। এই ঘটনার পরপর ৪ কোর কম্যান্ডার তার পরিকল্পনা পরিবর্তন করেন তিনি আশুগঞ্জের দক্ষিন প্রান্ত থেকে ১৪টি হেলিকপ্টারে ৪ গার্ডকে মেঘনা পার করালেন। ৭৩ ব্রিগেডকে আরও দক্ষিনে নৌকায় মেঘনা পার করালেন। ৭৩ ব্রিগেডের ট্যাঙ্ক গুলি ছিল উভচর কিন্তু লম্বা পথে দুর্বল। কষ্টকরে সেগুলিকে মেঘনা পার করা হয়। সিলেট হেলি লিফট এর দায়িত্ব পালনকারী গ্রুপ ক্যাপ্টেন চন্দন সিং এর দল এই দায়িত্ব পালন করেন। প্রতি হেলিকপ্টারে ১৪ জনের স্থলে ২৩ জন করে ৩৬ ঘণ্টায় ১১০টি ট্রিপে তাদের পারাপার করা হয় প্রথম দিনে ৬০০ জন পার করা হয়। তারা ভৈরব এবং রায়পুরার মাঝমাঝি ওপার পৌঁছলেন। এই দিন তারা বিশ্রামে ছিলেন। এখানে তাদের উপর পাকিস্তানী ৫৩ ফিল্ড রেজিমেন্ট এর একটি ইউনিট ছোট খাটো একটি হামলা করে কিন্তু পরে তারা পিছু হটে। ভারতীয় বাহিনীর মেঘনা অতিক্রম করায় ভৈরবে অবস্থান করা পাকিস্তানী ১৪ ডিভিশন সদর এবং ২৭ ব্রিগেডের ঢাকার দিকে যাওয়া বন্ধ হল। হেলি লিফট এর আগে ঢাকার জন্য নৌপথে আখাউরার বাহিনী ১২ এফএফ এর দুই কোম্পানি পাঠাতে পারলেন কিন্তু তারা ১৬ ডিসেম্বরের পর ঢাকা পৌঁছায়।