০৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ
এদিন নূরুল আমিন প্রধানমন্ত্রী হবার পর তার প্রথম সাক্ষাৎকারে দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করে বলে যে, পাকিস্তান ধৈর্য ও সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে শত্রুর উপর চরম আঘাত হানবে। তিনি বলেন বর্তমান পরিস্থিতিতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগন যে ধৈর্য ধারন করছেন তার জন্য আমি গর্বিত। তিনি পাকিস্তানের উপর ঘৃণ্য হামলার পরিনতি সম্পর্কে ভারতকে হুশিয়ার করে দেন।
ঢাকা শহর শান্তি কমিটির এক সভায় কনভেনশন মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক এ.এন.এম ইউসুফ নাগরিকদের বিশেষ করে মুসলিম লীগ কর্মীদের গভর্নরের যুদ্ধ তহবিলে মুক্তহস্তে দান করার অনুরোধ জানান।
জমিয়ত প্রাদেশিক সভাপতি পীর মোহসেন উদ্দিন দুদু মিয়া বলেন দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় আত্মনিয়োগ করার জন্য দেশের ছাত্র কৃষক সহ সর্বশ্রেণীর মানুষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন ভারতকে এবার সমুচিত শিক্ষা দিতে হবে।
জামাতের মহানগর সাধারন সম্পাদক তথাকথিত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ায় ভারতের কঠোর নিন্দা করে বলেন ব্রাহ্মণ্যবাদীদের কঠিন শিক্ষা দেয়ার জন্য সশস্র বাহিনী ও দেশপ্রেমিক জনগনের প্রতি আহবান জানান। তিনি শত্রু নিধনে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্যে সবার প্রতি আহবান জানান।
নেজামে ইসলাম নেতা ও মৌলিক গনতন্ত্র মন্ত্রী মোঃ ইসহাক সহ ১০ জন নেতা যুব সমাজ ও মহিলাদের সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়ার আহবান জানিয়েছেন। তারা বলেন মহান আল্লাহতালার নাম করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলনে জনগণকে ঝাপাইয়া পড়ার আবেদন জানান।
রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণে অর্থমন্ত্রী ও কাউন্সিল মুসলিম লীগ প্রাদেশিক সভাপতি আবুল কাসেম বলেন ভারতীয় বাহিনীর আগ্রাসন প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান। তিনি বলেন পাকিস্তানের উপর ভারতের নগ্ন হামলা ইসলামের উপর হামলা। এই যুদ্ধ জেহাদের সমতুল্য । ন্যায় যুদ্ধে আমাদের জয় অবশ্যম্ভাবী।
পিডিপি ও সংযুক্ত কোয়ালিশন দল নেতা মাহমুদ আলী আফ্রিকা সফর করে রাওয়ালপিন্ডি ফিরে বলেন সোভিয়েত ইউনিয়ন পাকিস্তানের বন্ধু তা তারা প্রমান করুক। তিনি ভারতে সোভিয়েত সামরিক সাহায্য বন্ধ করার দাবী জানান।
কাইউম মুসলিম লীগ প্রাদেশিক সভাপতি খান সবুর এক বেতার ভাষণে বলেছেন পাকিস্তানের জনগন স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সরবচ্চ ত্যাগ স্বীকার করবে। স্বাধীনতার পর থেকেই পাকিস্তান ধ্বংসের জন্য ভারত উঠে পড়ে লেগেছে ।