দৈনিক পয়গাম
৩রা মার্চ ১৯৬৯
‘বঙ্গবন্ধু খেতাব স্বার্থক হইয়াছে’
সুনামগঞ্জ, ১লা মার্চ। সুনামগঞ্জ থানা মুসলীম লীগের সম্পাদক ডাঃ আবদুল মন্নান আকঞ্জী শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি এবং দেশের সংকট মুহূর্তে নিজের মান অভিমান, হিংসা-বিবাদ ত্যাগ করিয়া দেশের মঙ্গলের জন্য প্রেসিডেন্ট আইয়ুবের আমন্ত্রণে গোলটেবিল বৈঠকে যোগদান করায় শেখ মুজিবকে আন্তরিক অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন এবং বলেন যে, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জনাব তোফায়েল আহমদ দেশবাসীর পক্ষ হইতে শেখ মুজিবর রহমানকে যে “বঙ্গবন্ধু” উপাধিতে ভূষিত করিয়াছেন তাহা স্বার্থক হইয়াছে।
ডাঃ আঃ মন্নান আকঞ্জী বলেন, “দেশের এহেন দুর্দিনে দুইজন লোকেরই দেশ প্রেমের পরিচয় পাইয়াছি। একজন শেখ মুজিবর রহমান অন্যজন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান। জানিনা, অনেকের মতে একথা সত্য হইবে কি-না। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হইল দেশের বর্তমান পরস্থিতিতে যদি প্রেসিডেন্ট আইয়ুব গোলটেবিল বৈঠকের ব্যবস্থা না করিতেন তাহা হইলে দেশে যে সংগ্রামের আগুন জ্বালিয়া উঠিয়াছিল সেই আগুনে পাকিস্তানের বুকে দুর্দিন নামিয়া আসিত। আবার দেশ দরদী শেখ মুজিবর রহমান যদি কারাগার হইতে মুক্তির পর তাহার উপর যে নির্যাতন করা হইয়াছে তাহার প্রতিশোধ নিতে চাহিতেন এবং প্রেসিডেন্ট আইয়ুবের আমন্ত্রণে গোলটেবিল বৈঠকে যোগদানে অমত প্রকাশ করিতেন তাহা হইলে এতদিন পাকিস্তানের বুকে রক্তগঙ্গা বহিয়া যাইত। তাই শেখ মুজিবর ও প্রেসিডেন্ট আইয়ুব যে ত্যাগ দেখাইয়াছেন তাহাতে প্রমাণিত হইয়াছে যে, উভয়ই নিজের চাইতে দেশকে বেশী ভালবাসেন।”
ডাঃ আকঞ্জী একজন নাগরিক হিসাবে উভয়কে আন্তরিক অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন এবং উভয়ের দেশ প্রেমের দৃষ্টান্ত অনুসরণের মাধ্যমে পাকিস্তানের জনগণ যাহাতে সুখ শান্তি ফিরিয়া পান সে জন্য আল্লাহর দরবারে মোনাজাত জানান। -সংবাদদাতা
সুত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু: পঞ্চম খণ্ড ॥ ষাটের দশক ॥ চতুর্থ পর্ব ॥ ১৯৬৯