You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.22 | গরিবপুর যুদ্ধ ২য় দিন - পাকবাহিনী এই যুদ্ধে ১৩টি ট্যাঙ্ক এবং বেশ কিছু সৈন্য হারাতে বাধ্য হয় - সংগ্রামের নোটবুক

২২ নভেম্বর, ১৯৭১ঃ গরিবপুর যুদ্ধ ২য় দিন

ভারতের ১৪নং পাঞ্জাব ব্যাটেলিয়ন ২১ নভেম্বর তারিখে পূর্ব পাকিস্তানের যশোরের চৌগাছায় অবস্থিত গরিবপুরের পার্শ্ববর্তী এলাকা দখল নেওয়ার জন্য ৪৫ ক্যাভার্লি থেকে প্রাপ্ত ১ স্কোয়াড্রন ১৪ পিটি-৭৬ ট্যাংক বহরের সহায়তায় অগ্রসর হয়। এম ২৪ চ্যাফি হালকা ট্যাংকে সজ্জিত ৩য় স্বতন্ত্র আর্মার্ড স্কোয়াড্রন দ্বারা সমর্থিত ১০৭ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড( ৬, ১২,২১ পাঞ্জাব ২২ এফএফ) যোগদানের মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনা দলের সংখ্যা বৃদ্ধির দ্বারা অবিলম্বে এই অগ্রগমণের প্রত্যুত্তর দেয়ার চেষ্টা করে। পাকবাহিনী পরাজয়ের মুখে এই যুদ্ধে বিমান বাহিনীর সাহায্য নিয়েছিল। ২২ নভেম্বর সকালে ঢাকায় অবস্থিত পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর সদর দপ্তর থেকে ১৪নং স্কোয়াড্রন টেইল-চপার্স এর কিছু স্যাবর এমকে-৬ প্রেরণের মাধ্যমে তাতে সাড়া দেওয়া হয়। পাকিস্তান বিমান বাহিনীর এই স্কোয়াড্রনটির নেতৃত্বে ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পারভেজ মেহেদী কোরেশী যিনি পরবর্তীকালে বিমান বাহিনী প্রধান হিসাবে নিযোগ লাভ করেন। মিত্রবাহিনীও পাল্টা আক্রমনে বিমান ব্যবহার করে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর ইউনিটটি ছিল কালাইকুন্ড বিমান বাহিনী ঘাটি ভিত্তিক আইএএফ ২২নং স্কোয়াড্রন সুইফ্টস্ । এই ইউনিটটির নেতৃত্বে ছিলেন উইং কমান্ডার বিএস সিকান্দ (যিনি পরবর্তী কালে ‘এয়ার মার্শাল’ পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন)।

প্রথম দুই দফা ভারতীয় আক্রমন বেরথ হওয়ার পর ৩য় দফায় বিকালে ঘাঁটির অধিনায়ক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট রায় অ্যান্ড্রু ম্যাসের নেতৃত্বে ফ্রাইং অফিসার এসএফ সরোজ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম এ গণপতি ফ্রাইং অফিসার ডি লাজারাস চারটি জিনাট ধেয়ে যায়।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম এ গণপতি ফ্রাইং অফিসার ডি লাজারাস কয়েকবারের চেষ্টায় ২০মিমি কামান থেকে গোলাবর্ষণ শুরু করলে পাক বিমান বাহিনীর উভয় স্যাবরই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাকিস্তানি চালক পারভেজ মেহেদী কোরেশি এবং খালিল আহমেদ বয়রার আকাশে প্যারাস্যুটের মাধ্যমে নিরাপদে অবতরণ করেন কিন্তু মিত্র বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরিত্যক্ত স্যাবরগুলোর ধ্বংসাবশেষ ভারতের বনগাঁ গ্রামের কাছাকাছি গিয়ে ছিঁটকে পড়ে। ৩য় একটি সেবর জেট আক্রান্ত হলেও যুদ্ধ পরবর্তী প্রতিবেদন থেকে জানা যায় সেই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত স্যাবরকে উড়িয়ে ঢাকার অদূরে অবস্থিত তেজগাঁও বিমানবন্দরে ফিরিয়ে নিয়ে এসে ম্যাসের দ্বারা আক্রান্ত উইং কমান্ডার চৌধুরী।
যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৩ খানা স্যাবার জেট ধ্বংস ছাড়াও পাকবাহিনী এই যুদ্ধে ১৩টি ট্যাঙ্ক এবং বেশ কিছু সৈন্য হারাতে বাধ্য হয়।