You dont have javascript enabled! Please enable it!

১২ নভেম্বর ১৯৭১ঃ যুক্তরাষ্ট্রের উচিত শেখ মুজিবের সাথে রেড ক্রসের সাক্ষাতের ব্যাবস্থা করে দেয়া– কেনেডি
মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি পূর্ব পাকিস্তানে একটা রাজনৈতিক সমাধান বের করার উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানান। তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত লক্ষ লক্ষ পাকিস্তানী শরণার্থীর দুঃখ দুর্দশা মোচনের জন্যও উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য তাগিদ দেন। এসকল বিষয় ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের উচিত শেখ মুজিবের সাথে রেড ক্রসের সাক্ষাতের ব্যাবস্থা করে দেয়া। এ ধরনের সাক্ষাৎকার শেখ মুজিবের ভাগ্য ও কুশলাদি সম্পর্কে তথ্য আদান প্রদান করবে এবং সমগ্র এলাকায় উত্তেজনা প্রশমনে সাহায্য করবে। এছাড়াও এই এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘে একটা বিতর্ক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের উৎসাহ প্রদান করা উচিত। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পূর্ব পাকিস্তানের দুর্দশা গ্রস্থ নারী শিশুদের সাহায্য করার জন্য আবেদন জানান।

১২ নভেম্বর ১৯৭১ঃ বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক বাহিনী
ফরাসী সাবেক সাংস্কৃতিক মন্ত্রী ও বামপন্থী নেতা মালরো বাংলাদেশের বিদ্রোহীদের পক্ষে লড়বার জন্য আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন করছেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে এ সকল সৈন্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই বাহিনী আগেও নাইজেরিয়ায় বায়াফ্রার পক্ষে যুদ্ধ করেছিল। ইন্দিরা গান্ধীর ফ্রান্স সফরের সময় মালরো গান্ধীর সাথে দেখা করেন এবং এ বাহিনীকে ভারতে নেয়ার জন্য করনীয় বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ সৈন্যই ব্রিটিশ এবং বেলজীয়। মালরো প্যারিসে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের দুত রেহমান সোবহানের সাথেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ডাঃ ডেভিড নলিন ফ্রেন্ডস অফ বাংলাদেশ খেতাব প্রাপ্ত । আইসিডিডিআরবিতে কাজ করেছিলেন। ৭১ এ শরণার্থীদের জন্য চিকিৎসা সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।

মেজর( ব্রিগেঃ) তারিক মেহমুদ ,সিতারা-ই-জুরাত ১৯৭১
মেজর( ব্রিগেঃ) তারিক মেহমুদ ১ কম্যান্ডো ব্যাটেলিয়নের শাহীন কোম্পানী কম্যান্ডার ছিলেন। এপ্রিলে যখন ২ ও ৪ ইবি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শক্ত অবস্থানে এবং মুক্তিবাহিনীর ( তখন বিদ্রোহী হিসাবে অভিহিত) একাংশ আশুগঞ্জ এ প্রতিরক্ষা অবস্থানে ছিল। ভৈরব ব্রিজ রক্ষার্থে ১৪ ডিভিশনের জিওসি (এপ্রিলে) মেজর জেনারেল রহিম জরুরী ভিত্তিতে ১ কম্যান্ডো ব্যাটেলিয়ন এর সিও লেঃ কঃ আব্দুল সাকুর জানকে কিছু কম্যান্ডো দিতে বলেন। সাকুর জান তার শাহীন ও জংলু কোম্পানীকে সেখানে দিয়েছিলেন। দুই কোম্পানীতে ৩ জন ক্যাপ্টেন দায়িত্ব পালন করেন তারা হলেন ক্যাপ্টেন আফজাল জাঞ্জুয়া , ক্যাপ্টেন আরিফ এবং ক্যাপ্টেন শওকত (কমব্যাট টীম লিডার ) মেজর তারিকের শাহীন কোম্পানী সেই যাত্রায় ভৈরব ব্রিজ রক্ষা করতে পেরেছিলেন। এই অপারেশনে তাদের একজন সৈনিক নিহত হয় ২০ জন আহত হয়। মুক্তিবাহিনীর ২০০ জন নিহত হয়( প্রকৃত সংখ্যা ১০ জনেরও কম)। ৪ জন আটক হয়। একটি এনটি ট্যাঙ্ক রিকয়েলস রাইফেল, ৩টি মেশিন গান, ১০০ এসলট রাইফেল, ১০০০ গুলি, একটি কমপ্লিট সেট ওয়ারলেস, আটক করা হয়( অতিরঞ্জিত) । সকল কৃতিত্ব তার কোম্পানীকে দেয়া হলেও কৃতিত্ব ছিল পাক বিমান বাহিনির। এ ছাড়াও তাদের আক্রমন ছিল হেলিবরন। ৪টি হেলিকপ্টার দিয়ে তারা মুক্তিবাহিনীর ১টি কোম্পানিকে ধাওয়া করেছিল। এর পরে শাহীন কোম্পানীকে নতুন বিমান বন্দর প্রতিরক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয় বলা হয় তখন বিদ্রোহী আতঙ্কে এই বিমান বন্দর নো ফ্লাই অবস্থায় ছিল। তিনি সে দায়িত্ব সফল ভাবে(আসলে সেখানে হুমকি সৃষ্টির মত কোন বিদ্রোহী ছিলই না ) পালন করেন। তার পর তার কোম্পানীকে ময়মনসিংহ পাঠানো হয় শম্ভুগঞ্জ রেল সেতু রক্ষার কাজে। বাকি সময়টাতে তিনি ঢাকায় অনেকগুলি বিদ্রোহ নির্মূল অভিযানে অংশ নেন এবং আত্মসমর্পণের আগে সর্বশেষ সি- ১৩০ বিমানে পলায়ন করেন। ১৯৮৯ সনের ২৯ মে প্রদর্শনী প্যারা জাম্পে তার দুইটি প্যারাসুট না খোলায় তিনি নিহত হন।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!