জঙ্গীশাহী যুবকদের ‘বন্দী শিবিরে’ নিয়ে গিয়ে গুলি করে মারছে
একজন শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মঙ্গলবার কলকাতায় বলেন : পাঁচদিন আগে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের মধ্যে বুড়িগঙ্গায় শত শত মৃতদেহ ভেসে যেতে দেখা যায়। ইনি ঢাকা থেকে মঙ্গলবার কলকাতায় এসেছেন। আওয়ামী লীগ নেতা পায়ে হেঁটে ও নৌকায় করে ঢাকা, ফরিদপুর ও যশাের জেলা ঘুরে আসেন। তিনি বলেন : এক সঙ্গে আট-দশটি করে মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায় এবং এদের অধিকাংশই তরুণ।
ঢাকা থেকে ১০ কিলােমিটার মত দূরে ধলেশ্বরী বুড়িগঙ্গার তীরে সামরিক আইন প্রশাসন একটি বন্দী শিবির’ খুলেছে। সেখানে যুবকদের (এদের অধিকাংশই শ্রমিক ও বাঙালী সরকারী কর্মচারী) নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তারপর সেতুর ওপর তাদের সারি দিয়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মেরে নদীতে ছুড়ে ফেলা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের ওই নেতা আরও বলেন : একজন যুবক পাকিস্তানী সেনাদের খপ্পর থেকে পালিয়ে এসে আমাকে নারায়ণগঞ্জে বলেন : সৈন্যরা যুবকদের গুলি করে মারার আগে তাঁদের শরীর থেকে রক্ত বের করে নিচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযােগী আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন : ঢাকা থেকে ১৫ কিলােমিটার মত দূরে মীরপুরে বেঙ্গল রেজিমেন্টের বহু জওয়ানও নিহত হয়েছেন। তাঁদের উলঙ্গ করে গুলি করে মারা হয়। কারফুর সময় সৈন্যরা প্রায় প্রতি রাত্রেই ঢাকায় বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। এর জন্য জনসাধারণ এখনও শহর থেকে পালাচ্ছেন অথবা রাত্রে গুপ্তস্থানে ঘুমুচ্ছেন।
Reference:
১২ মে ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা