You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.18 | ২ পৌষ ১৩৭৮ শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ | একাত্তরের দশ মাস - রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী - সংগ্রামের নোটবুক

২ পৌষ ১৩৭৮ শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর ১৯৭১

মুক্তিবাহিনী বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধের মাধ্যমে বৃহত্তর রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হলেও সামগ্রিকভাবে রাজশাহী মুক্ত হয় এ দিন (১৮ ডিসেম্বর) নাটোর পাক-সেনাদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। এদিন (১৮ ডিসেম্বর) পাকহানাদার বাহিনী, রাজাকার ও আলবদরদের পরাজিত করে পাবনা কালেক্টরেট ভবনে বাংলাদেশ পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে পাবনা শত্রুমুক্ত ঘোষণা দেয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। শুরু হয় জয়বাংলা ধ্বনি দিয়ে বিজয় মিছিল। উল্লেখ্য, মুজিব বাহিনী (১২ ডিসেম্বর) সুজানগর থানা আক্রমণ করে এবং ১৩ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত ঘোষণা দেয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। ১৪ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী পাবনা শহরে মর্টার ও শেল বর্ষণ করে। এদিনে পাকসেনারা নাজিরপুর গ্রামের ৫৮ জন নিরীহ লোককে গুলী করে হত্যা করে।

১৬ ডিসেম্বর মুক্তি ও মিত্রবাহিনী পাবনা শহর ঘিরে ফেলে এবং প্রবল সংঘর্ষ চলতে থাকে। পাকসেনা পাবনা থেকে ঈশ্বরদীর পথে পালাতে থাকে অবশেষে এদিন (১৮ ডিসেম্বর) পাবনা সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়। মুজিববাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথ আক্রমণে ঈশ্বরদী মুক্ত হয় ডিসেম্বর ১৯। নীলফামারীর হিমকুমারী ক্যাম্পের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী যৌথবাহিনী আক্রমণ চালিয়ে সৈয়দপুর শত্রুমুক্ত করে (১৮ ডিসেম্বর)। উল্লেখ্য, অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে সৈয়দপুর বিহারী ও পাকসেনারা সাধারণ বাঙ্গালীদের ওপর বেশ ক’বার হামলা করে। ২৫ মার্চের কালো রাতে ১৫০ জন প্রভাবশালী লোককে সৈয়দপুর সেনানিবাসে ধরে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে গণপরিষদ সদস্য ডাঃ জিকরুল হক ছিলেন। উনিশ দিন অমানবিক শারীরিক অত্যাচার করে পরে তাকে গুলী করে হত্যা করে। অলৌকিকিভাবে জনৈক কমল প্রসাদ আগরওয়ালা রক্ষা পায়।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব কামরুজ্জামান মুজিবনগরে এদিন বলেন যে, আমাদের রক্তস্নাত দেশে লাখো লাখো উৎপীড়িত মা-বোনদের ‘যুদ্ধবীরের’ সম্মানে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা হবে।

Professor Muzaffar Ahmed, leader of the Pro-Soviet wing of the National Awami Party, called on Dec.18 for the formation of a coalition Government and new elections.

এদিন বাংলাদেশ সরকার সকল সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নিজ কর্মস্থানে যোগদান করার নির্দ্দেশ দেয়। 18 Dec Bangladesh govt. Called upon all its employees those who had left their posts during enemy occupation but remained inside Bangladesh and those who had left posts and crossed over to neighboring country- to return to their posts.  ঢাকায় ন্যূনতম প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলার উদ্দেশ্য বাংলাদেশ সরকারের সেক্রেটারী জেনারেল জনাব রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্ব বাংলাদেশ সরকারের সচিবদের একটি দল ভারতীয় বিমান বাহিনীর ষ্টলফ্লাইটে ঢাকা এসে পৌঁছান। এদিন  আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতৃস্থানীয়  ব্যক্তিত্ব ঢাকা আসেন। সংস্তাপন সচিব জনাব নূরুল কাদের খানও এদের সাথে ছিলেন।

১৮ ডিসেম্বর পিন্ডিতে সরকারী মুখপাত্র বললেন, মুজিবের বিচার শেষ তবে রায় এখনও দেওয়া হয়নি সারা পৃথিবীতে রাষ্ট্র প্রধানদের কণ্ঠে শেখ মুজিবকে মুক্তি দেওয়ার দাবি উঠলো।

Reference:

একাত্তরের দশ মাসরবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী