You dont have javascript enabled! Please enable it! 1969.03.01 | মুজিবের মুক্তিতে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় আনন্দোচ্ছাস | আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

আজাদ
২রা মার্চ ১৯৬৯
মুজিবের মুক্তিতে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় আনন্দোচ্ছাস
(সংবাদদাতা প্রেরিত)

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২২শে ফেবরুয়ারী। দুপুরে রেডিওযোগে সরকার কর্তৃক আগরতলা মামলা প্রত্যাহার ও সকল আসামীদের মুক্তিদানের খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরবাসীর মধ্যে আনন্দের শিহরণ খেলিয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রদের একটি বিরাট শোভাযাত্রা বাহির হইয়া শহর প্রদক্ষিণ করে। অর্ধ-লক্ষাধিক পটকা বাজি পোড়ান হয়। তদুপলক্ষে পাঁচটায় স্থানীয় রিপাবলিক স্কোয়ারে পূর্ব্ব পাক ছাত্র লীগ সহ-সভাপতি জনাব মাহবুবুল হুদার সভাপতিত্বে জনসভায় বিভিন্ন ছাত্র নেতা শেখ মুজিবের মুক্তিকে জনগণের দুর্ব্বার সংগ্রামের শুভ ফল বলিয়া বর্ণনা করেন। সভাশেষে তথায় একটি সংগীতানুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

আর্ট কাউন্সিলে অগ্নিসংযোগ
ঐদিন অপরাহ্নে রিপাবলিক স্কোয়ারে জনসভা চলাকালীন কতিপয় ছাত্র সঙ্গীতানুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় হারমোনিয়ামের জন্য নিকটস্থ আর্টস কাউন্সিল ভবনে যায়। জনৈক কর্ম্মচারী ছাত্রদেরকে হারমোনিয়াম দিতে অস্বীকার করে এবং ছাত্রদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। ইহাতে ক্ষিপ্ত হইয়া ছাত্ররা আর্টস কাউন্সিল ভবনে হামলা চালায় এবং ভবনের আলমারী হইতে কতিপয় মদের বোতল উদ্ধার করে। সরকার পরিচালিত একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মদের বোতল আবিস্কার করিয়া ছেলেরা বিক্ষুব্ধ হইয়া উঠে এবং ভবনটিতে অগ্নিসংযোগ করে। দমকল বাহিনীর প্রচেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আসে।
সঙ্গীতানুষ্ঠান শেষে ছাত্র নেতৃবৃন্দের একটি প্রতিনিধিদল জনৈক প্রশাসনিক অফিসারের সঙ্গে দেখা করিয়া ঘটনা বিশ্লেষণ করে। এবং প্রমাণ স্বরূপ প্রাপ্ত মদের বোতলগুলি তাহার নিকট জমা রাখেন। তিনি ইহার উপযুক্ত ব্যবস্থা করিবেন বলিয়া আশ্বাস দেন। সন্ধ্যায় স্থানীয় উভয় প্রেক্ষাগৃহে ও রাত্রিতে শেখ মুজিবের বিভিন্ন ফটো সম্বলিত নিউজ রিলে টেলিভিশনে প্রদর্শিত হইলে উৎসাহী দর্শকবৃন্দ তাহা দর্শন করেন।

টাঙ্গাইল
গত ২২শে ফেবরুয়ারী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও শেখ মুজিব সহ সকলের মুক্তি লাভের খবর রেডিওতে প্রচার হওয়ার পরই এখানে একটি বিজয় মিছিল বাহির হয়। মিছিল বিভিন্ন রাস্তা পরিভ্রমণ করে এবং পরে সাধারণ পাঠাগারের সম্মুখে এক সভায় মিলিত হয়। বিভিন্ন ছাত্রনেতা বক্তৃতা
করেন।

সুত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু: পঞ্চম খণ্ড ॥ ষাটের দশক ॥ চতুর্থ পর্ব ॥ ১৯৬৯