ঘটনাপঞ্জী
১৯৬৯
২৫ মার্চ-জেনারেল ইয়াহিয়া খা সমগ্র দেশে সামরিক আইন জারি করে জাতীয় এবং প্রাদেশিক আইন সভাগুলি ভেঙে দিলেন। ২৬ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়ার প্রতিশ্রুতিঃ “সুস্থিরতা এনে জনগণের হাতে ক্ষমতা প্রত্যাপর্ণ করব। তার ঘােষণা : “একটি সংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপারে উপযুক্ত পরিস্থিতি গড়ে তােলা ছাড়া আমার আর কোনও উদ্দেশ্য নেই।”
২৭ মার্চ-সামরিক আইন ভঙ্গকারীদের উপর সামরিক বাহিনীর আক্রমণ। আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবর রহমানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামাের পরিকল্পনা সম্পর্কে ঘােষণা। কাগমারির গ্রামের বাড়িতে জাতীয় আওয়ামী পার্টির প্রধান মৌলনা আবদুল হামিদ ভাসানীর অন্তরীণ।
৩০ মার্চ-একটি জাতীয় সরকার গঠনের জন্য মৌলানা ভাসানীর দাবি।
৩১ মার্চ-সমস্ত রাজনৈতিক কাজকর্ম বন্ধ করে সরকারী আদেশ জারি।
১এপ্রিল জেনারেল ইয়াহিয়া খা প্রেসিডেন্টের আসনে বসলেন।
৩ এপ্রিল-প্রেসিডেন্টকে প্রশাসন কাজে সাহায্য করার জন্য ৩ জনকে নিয়ে একটি সামরিক পরামর্শদাতা কমিটি গঠিত।
৮ এপ্রিল-দুজন সামরিক পরামর্শদাতাকে গভর্নর হিসাবে নিয়ােগ।
১০ এপ্রিল-প্রাপ্ত বয়স্ক ভােটাধিকারের ভিত্তিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ঘােষণা।
২৮ জুলাই-বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার হিসাবে নিয়োেগ।
৪ আগস্ট-৮ জনকে নিয়ে প্রেসিডেন্টের অ-সামরিক মন্ত্রিমণ্ডলী গঠিত। পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা এবং যােজনার দায়িত্ব স্বহস্তে রাখলেন। ৩০ আগস্ট-সােয়াতে সরকার বিরােধী জনতার সংগে সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষ।
২৮ নভেম্বর-জেনারেল ইয়াহিয়া খার ঘােষণা ঃ ১৯৭০, ৫ অক্টোবর জাতীয় সভায় নির্বাচন।
১৯৭০
১ জানুয়ারি-রাজনৈতিক দলগুলির ওপর থেকে বাধা নিষেধ প্রত্যাহার।
২৯ মার্চ-নির্বাচনের জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।
১ এপ্রিল-পাক প্রেসিডেন্ট কর্তৃক পশ্চিম পাকিস্তানের এক ইউনিট প্রথা বাতিল এবং পুরা চারটি প্রদেশের পুনরুজ্জীবন।।
সেপ্টেম্বর-অভূতপূর্ব বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত।
৪ ডিসেম্বর- জেনারেল ইয়াহিয়া খাঁর সতর্কবাণী ও সংবিধান সম্মত ভাবে জনপ্রিতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরেও সামরিক আইনই দেশে সর্বোচ্চ স্তরে থাকবে।
৭ ডিসেম্বর-জাতীয় সভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন। ভূট্টোর দলের দ্বিতীয় স্থান অধিকার।
৯ ডিসেম্বর- মুজিবর রহমানের দাবি : সংবিধানের ভিত্তি হবে তাঁর দলের ছয় দফা কর্মসূচী।
১০ ডিসেম্বর স্বাধীন এবং সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তান গঠনের জন্য মৌলানা ভাসানীর আহ্বান। এই সময় রাজনৈতিক দলগুলি সংবিধান রচনার জন্য আলােচনা করছিলেন।
১২ ডিসেম্বর- পূর্ব পাকিস্তানের আরও তিনটি দল স্বাধীনতা দাবির সমর্থক হলেন।
১৭ ডিসেম্বর-প্রাদেশিক আইনসভায় আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক আসন লাভ। ভূট্টোর দলের স্থান দ্বিতীয়।
২৮ ডিসেম্বর প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের ব্যাপারে রহমানের সঙ্গে ভুট্টোর বিরােধ।
২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করার জন্য মুজিবরের দাবি স্বীকৃত।
১৯৭১
১৪ জানুয়ারি- ইয়াহিয়ার ঘােষণা ও পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবর রহমান।
২৯ জানুয়ারি ঢাকায়, ভুট্টো- রহমান আলােচনা।
১৩ ফেব্রুয়ারি-৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের বৈঠক বসবে বলে ইয়াহিয়ার ঘােষণা।
১৫ ফেব্রুয়ারি পিপলস্ পার্টির দাবির ভিত্তিতে সংবিধান রচনার কাজে যদি মুজিব আপসজনক মনােভাব গ্রহণ না করে তবে ভুট্টো জাতীয় পরিষদে যােগ দেবে না বলে হুঁশিয়ারী।
১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা দেশের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য ইসলামকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে মুজিবরের ঘােষণা।
২১ ফেব্রুয়ারি-জেনারেল তার মন্ত্রিপরিষদ ভেঙে দিলেন।
১ মার্চ-জেনারেল ইয়াহিয়া জাতীয় পরিষদের বৈঠকের তারিখ স্থগিত রাখলেন এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ভাইস এ্যাডমিরাল এস, এম হাসানকে বরখাস্ত করলেন। জাতীয় পরিষদের বৈঠক স্থগিত রাখার প্রতিবাদে দেশব্যাপী মুজিবরের হরতাল আহ্বান।
২ মার্চ-ঢাকা এবং অন্যত্র জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ। সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ এবং সান্ধ্য আইন জারী।
৩ মার্চ আওয়ামী লীগের অহিংস অসহযােগ আন্দোলনের কথা ঘােষণা।
১০ মার্চের-ইয়াহিয়া প্রস্তাবিত বৈঠকে যােগ দেওয়ার অনুরােধ মুজিব কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত।
৫ মার্চ সামরিক বাহিনীর হাতে ৩ শশা জন নিহত।
৭ মার্চ কর না দেওয়ার জন্য মুজিবরের আহ্বান। পূর্ব-পাকিস্তান রাইফেলস্ বাহিনী কর্তৃক বাঙ্গালী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে অস্বীকৃতি।
৮ মার্চ-অসহযােগ আন্দোলন শুরু।
৯ মার্চ-গভর্নর হিসাবে লেঃ জেঃ টিক্কা খাকে শপথ গ্রহণ করাতে হাইকোর্টের বিচারপতিদের অসম্মতি।
১৪ মার্চ -১৫ মার্চের মধ্যে কাজ যযাগ দেওয়ার জন্য সরকারী কর্মচারীদের প্রতি ইয়াহিয়া প্রশাসনের হুমকী।
১৫ মার্চ-একতরফা ভাবে শেখ মুজিবরের স্বাধিকারের কথা ঘােষণা।
১৭ মার্চ -সামরিক বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তদন্তের কথা ঘােষণা। ইয়াহিয়ার ঢাকায় আগমন।
১৮ মার্চ শেখ মুজিবর কর্তৃক তদন্তাদেশ অগ্রাহ্য।
১৯ মার্চ-সংবিধানের ব্যাপারে ইয়াহিয়া মুজিব আলােচনা।
২১ মার্চ-ভুট্টোর ঢাকায় আগমন।
২২ মার্চ-আবার জাতীয় পরিষদের বৈঠক স্থগিত রাখার জন্য ইয়াহিয়ার ঘােষণা।
২৫ মার্চ-আরও হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিত সংবিধানের জন্য আলােচনায় অচলাবস্থায় পৌছেছে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া।
সূত্র: কালান্তর, ২৭.৩.১৯৭১