বাঙলাদেশের সমর্থনে কমিউনিস্ট পার্টির নবম কংগ্রেস
বিদেশ থেকে যেসব ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিনিধি এসেছেন তাদের ভাষণে পাকিস্তানী অত্যাচারের নিন্দা ও বাঙলাদেশের জনসাধারণের প্রতি পূর্ণ সমর্থনই ফুটে উঠেছে। সােভিয়েত দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের নেতা শ্রী কুনায়েভ যখন বলেন যে, বাঙলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণের উপর পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষের অত্যাচারের নিন্দা সােভিয়েত সরকার দৃঢ়কণ্ঠেই করেছেন; তখন সভামণ্ডপে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে মুহুর্মুহু করতালি ধ্বনি হতে থাকে। বাঙলাদেশের জনগণের আইনসঙ্গত স্বার্থ ও অবিচ্ছেদ্য অধিকারের ভিত্তিতেও সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের কথা যে সােভিয়েত সরকার বলেছেন এবং শেখ মুজিবর রহমান ও অন্য যেসব নেতা গত বছরের নির্বাচনে তাদের জনগণের কাছ থেকে গণ-সমর্থন পেয়েছেন তাদের মুক্তি যে সােভিয়েত সরকার চান, সে কথাও তিনি তাঁর ভাষণে সুস্পষ্টভাবেই ব্যক্ত করেন।
বুলগেরীয় প্রতিনিধিদলের নেতা শ্রী দেমিতার জুলেভ শ্রীকুনায়েভের বক্তব্য সমর্থন করে বলেন যে, বাঙলাদেশের যে জনগণ পাকিস্তানী সামরিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ সগ্রাম করছেন তাদের প্রতি তাঁর পার্টির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ফ্রান্স থেকে আগত সেখানকার কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি শ্রী গুই বেস বলেছেন। বাঙলাদেশের স্বাধীনতা সগ্রামকে ফ্রান্সের জনসাধারণ সর্বান্তঃকরণে সমর্থন করেন।
বিশ্বের শ্রমিক-কৃষক পার্টিগুলির পূর্ণ সমর্থন যে রয়েছে বাঙলাদেশের সংগ্রামী জনসাধারণের দিকে, কমিউনিস্ট পার্টির নবম কংগ্রেসে ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিনিধিদের ভাষণেই তার উজ্জ্বল স্বাক্ষর। বাঙলাদেশের প্রশ্নে সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ার দোদুল্যমানতা আবিষ্কার করার জন্য যারা মাথার চুল ছিড়ছেন, এতেও যদি তাদের মাথা ঠাণ্ডা না হয় তবে একমাত্র মধ্যমনারায়ণ তেলের ব্যবস্থাপত্রই তারে জন্য বিধেয়।
সূত্র: কালান্তর, ৭.১০.১৯৭১