প্রসঙ্গক্রমে শ্রমিক ঐক্য ও বাঙলাদেশ
বাঙলাদেশ -এর মুক্তিসংগ্রাম এমন একটি প্রসঙ্গ, যা দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকেই আন্দোলিত করে তােলে। সম্পূর্ণ বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গীর রাজনৈতিক দলগুলিও সংসদের ভিতরে ও বাইরে সার্বভৌম বাঙলাদেশ
এর সমর্থনে স্বাধীনতার পর এই সর্বপ্রথম ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছেন। একনায়কত্ব ও সামরিক বর্বরতার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য মানুষের অঢেল রক্ত ও খুনের মূল্যে মরণপণ সংগ্রামকে মানবিকতার আদর্শে ন্যূনতম বিশ্বাসী ব্যক্তি ও দলমাত্রেই সমর্থন না করে পারে না। আমরা বারবার বলেছি, জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম ও শ্ৰেণী- সগ্রাম কোন বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়। বিপ্লবী জনতার অগ্রনায়ক জঙ্গী শ্রমিকবাহিনী। তাই শােষণের বিরুদ্ধে দেশজোড়া আন্দোলনে তাঁরা অগ্রসর না হয়ে পারেন না। বাঙলাদে এর মুক্তিযুদ্ধেও সামিল হয়েছেন হাজার হাজার চটকল মজদুর, বাগিচা ও সুতীকল শ্রমিক, পােতাশ্রয়ের শ্রমজীবী কর্মীরা আমরা একান্তভাবে চেয়েছিলাম তাদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামকে যেন পশ্চিম বাঙলার শ্রমিক সংস্থাগুলিও একযােগে ভ্রাতৃত্বমূলক সমর্থন জানান। কোন দেশের শ্রমিক আন্দোলন একটি বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়। তা শ্রমিকশ্রেণীর আন্তর্জাতিকতাবাদ ও শােষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংকল্পের সঙ্গে একাত্ম।
আনন্দের ও আশার কথা সমস্ত বিভেদ ও অনৈক্যকে দূরে ঠেলে একই রাজ্যের প্রতিটি শ্রমিক সংস্থার ঐক্যবদ্ধ ডাকে ১৯ জুন বাঙলাদেশ’ দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। বাঙলাদেশের সংহতির জন্য ভারতীয় ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের জাতীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সর্বত্র সভা ও সমাবেশ হবে। এই ঐক্য সম্প্রসারিত থােক।
সূত্র: কালান্তর, ১৮.৬.১৯৭১