বাংলাদেশে নয়
পশ্চিম পাকিস্তানী বিমান ঘাঁটিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘ পর্যবেক্ষক চাই
-বাঙলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মুজিবনগর, ২৩ জুলাই-ভারত-বাঙলাদেশে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বাঙলাদেশের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রসংঘ পর্যবেক্ষক মােতায়েনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব খােন্দকার মােস্তাক আমেদ রাষ্ট্রসঙ্ঘের কাছে এই মর্মে দাবি জানিয়েছেন যে “বাঙলাদেশে মুক্তি আন্দোলনের কণ্ঠরােধ করার জন্য যাতে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য ও অস্ত্রাদি প্রেরণ করা না হয় তা সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্য পশ্চিম পাকিস্তানী অঞ্চলভূক্তি সাগর ও বিমান ঘাঁটিসমূহে রাষ্ট্রসঙ্রে পর্যবেক্ষক প্রয়ােজন।
বাঙলাদেশে রাষ্ট্রসঙ্ পর্যবেক্ষক প্রেরণের প্রস্তাব যে প্রত্যেক অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর অবধারিত বিজয় প্রতিরােধের কুচক্রান্ত মাত্র তা রাষ্ট্রসঙ্ঘকে খুব সুষ্ঠুভাবে জানিয়ে দিয়েছেন জনাব আমেদ।
“বাঙলাদেশে মানবসভ্যতার বৃহত্তম গণহত্যার মূক দর্শক”-রূপে রাষ্ট্রসঙ্ঘকে অভিহিত করে তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “অমানুষিক পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক যন্ত্রের কাঁটামারা জুতাের তলায় গণতন্ত্র পদদলিত হওয়ায় ঘটনাটি রাষ্ট্রসঙ্ নিশ্চিন্তচিত্তে উপেক্ষা করে ছিল, কিন্তু এখন যখন রক্তের নদীতে আমরা স্বাধীনতার মূল্য দিয়েছি, তখন শােনা যাচ্ছে রাষ্ট্রসঙ্রে নিদ্রা ভেঙেছে। তবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের উচিত হবে না ইয়াহিয়ার চক্রান্ত কর্তৃক ব্যবহৃত হওয়া। আমরা জানিয়ে রাখছি মুক্তি সাধনের পর দেশ পুনর্গঠনের কাজে আমরা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সহায়তা গ্রহণ করব। বাঙলাদেশের যে সবুজ ক্ষেত এখন লক্ষ কোটির রক্তে রক্তিম হয়ে উঠেছে, সেখানেই আমাদের ভাগ্য আজ নির্ধারিত হবে।”
সূত্র: কালান্তর, ২৪.৭.১৯৭১