You dont have javascript enabled! Please enable it!

পঃ পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ড বন্ধের জন্য ভারত সরকারের প্রয়াস

নয়াদিল্লী, ২৯ মার্চ (ইউ-এন-আই) – বাংলাদেশের জনগণের ওপর জঘন্য সামরিক নৃশংসতার অবসান ঘটানাের জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ভারত সরকার বিভিন্ন দেশের সংগে পরামর্শ করছেন। সীমান্তের ওপার থেকে যে উদ্বাস্তুরা আসতে শুরু করেছেন সে ব্যাপারেও তারা আলােচনা করেছেন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই দিল্লীকে জানিয়েছেন খুব শীঘ্রই এই সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাবে। উদ্বাস্তুদের অধিকাংশই হলেন মুসলমান। তাঁদের ধারণা সংগ্রাম ছড়িয়ে পড়ার সংগে সংগে উদ্বাস্তু আগমন আরও বৃদ্ধি। পাবে। বলা হয়েছে, বাস্তত্যাগীদের মধ্যে দু’ধরনের লােক রয়েছেন। একাংশ চাইছেন, ভারতে পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে এবং অন্যেরা পূর্ব বাংলার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেই আবার স্বদেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক। এরই মধ্যে ভারতীয় সীমান্ত স্থানীয় সংস্থাগুলি উদ্বাস্তুদের জন্য ত্রাণ এবং চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।
জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি শ্রী সমর সেন সর্বদাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সেক্রেটারী জেনারেল উ-খাটের সঙ্গে যােগাযােগ রেখে যাচ্ছেন। শ্রী সেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে উখান্ট খুবই বিচলিত। তিনিও সংগ্রামের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রেখেছেন।
নয়াদিল্লী ইতিমধ্যে নিউইয়র্ক জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলির সংগে পরামর্শ করেছেন এবং এখানে তাদের প্রতিনিধিদের সংগে কথা বলেছেন।
সরকার আফ্রো-এশিয়ার দেশগুলির সংগেও যােগাযােগ রাখছেন। সরকারী ভাষ্যে জানা গেছে, পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্মমতার বিরুদ্ধে এই দেশগুলি শঙ্কিত।
ভারত সরকার এই মুহূর্তে ঘটনাবলীর মূল্যায়ন এবং সম্ভবপর কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে সম্পর্কে চিন্তা করছেন।
সরকার ভারতীয় রেডক্রস সােসাইটির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের সংগে যােগাযোেগ করে ত্রাণকার্য চালু করায় আগ্রহী।
জনৈক সরকারী মুখপত্র বলেছেন, “বাংলাদেশের অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারকে স্বীকৃতি দানের সময় এলেই সরকার বিবেচনা করবেন।”

সূত্র: কালান্তর, ৩০.৩.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!