You dont have javascript enabled! Please enable it!

হানাদার বাহিনীর নির্মম নিপীড়ন সত্ত্বেও চট্টগ্রাম এখনও মাথা নােয়ায়নি
(জনৈক প্রত্যক্ষদর্শী)

পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জুন্টা বাঙলাদেশে “স্বাভাবিক অবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে”-এই দাবি করছে। নীচের রিপাের্টটি চট্টগ্রাম শহরের সেই প্রচারিত “স্বাভাবিক অবস্থার এক প্রামাণিক সাক্ষ্য। সংবাদাতা এখনও ঐ অঞ্চলেই আছেন। তাঁর লিখিত বিবরণী তাঁরই ভাষায় হুবহু উদ্ধত করা হলাে। সংবাদাতার নিরাপত্তার জন্য নাম দেওয়া গেল না। কাঃসঃ]।
পাঞ্জাবী হানাদার বাহিনী এখন বাঙালীর উপর গুপ্তহত্যা চালাইতেছে। চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করার পথগুলিতে তাহারা চেকপােস্ট বসাইয়াছে। সারাদিন কালুরঘাট, মদনাঘাট, চেকপােস্ট ও শহরের বিভিন্ন এলাকা হইতে লােক ধরিয়া টাকা-পয়সা কাড়িয়া নেয়, সন্ধ্যায় সব লােকদের হাত জোর করিয়া রশি দিয়া বাঁধিয়া নদীর পারে নিয়া যায়। এবং সেখানে গুলি করিয়া হত্যা করে। প্রতিদিন এই রকম শত শত লােকের মৃতদেহ কর্ণফুলীতে ভাসিতে দেখা যাইতেছে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমস্ত সম্পত্তি পাঞ্জাবী হানাদার বাহিনী লুঠ করিয়া নিতেছে এবং তাহাদের জমিজমা মুসলিম লীগারদের কাছে নিলামে বিক্রয় করিতেছে। শান্তি বাহিনীর দৌরাত্ম। মুসলিম লীগ ও জমাতে ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত পাকিস্তানী শান্তি বাহিনী হানাদার বাহিনীর সহযােগিতায় গ্রাম ঘেরাও করিয়া প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী ও যুবকদের ধরিয়া নিয়া তাদের গায়ের থেকে রক্ত নিতেছে এবং গােপনে হত্যা করিতেছে। যুবকদের ক্যান্টনমেন্টে নিয়া গিয়া আহত পাঞ্জাবী সৈন্যদের জন্য রক্ত নেওয়া হইতেছে, স্বাধীন বাঙলা বেতার ও ভারতীয় বেতারের অনুষ্ঠান না শুনার জন্য জনসাধারণকে বাধ্য করিতেছে। বাঙালী দোকানদারদের সমস্ত জিনিসপত্র পাঞ্জাবী হানাদার বাহিনী লুট-পাঠ করিতেছে।

সূত্র: কালান্তর, ৩.৭.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!