You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.01 | বাঙলাদেশ’-এর সমর্থনে কমিউনিস্ট পার্টির মিছিলেও বােমাবর্ষণ | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশ’-এর সমর্থনে কমিউনিস্ট পার্টির মিছিলেও বােমাবর্ষণ
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ৩১ মার্চ-আজ বিকাল পাঁচটা নাগাদ উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার অঞ্চলে স্থানীয় কমিউনিস্ট পার্টির উদ্যোগে একটি মিছিল বের করা হয়।
মিছিল যখন শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মােড় হয়ে মাণিকতলার দিকে এগােতে থাকে, তখন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রােড ও মােহনলাল স্ট্রীটের সংযােগস্থলে একটি বাড়ির ওপর থেকে পরপর ৪টি বােমা বর্ষিত হয়।
ফলে সর্বশ্রী জয়ন্তীলাল পান্ডে, অমিত বােস, গােবিন্দ রায়, রামকৃষ্ণ যাদব এবং নারায়ণ মিশ্র আহত হন এবং তাদের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
উপরােক্ত এলাকাটি সি-পি-এম প্রভাবাধীন বলে জানা গেল।
কমিউনিস্ট পার্টির বড়তলা বিদ্যাসাগর আঞ্চলিক পরিষদের সম্পাদক শ্রীসীতাংশু গুহ এক বিবৃতিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।

পার্টি ইউনিটগুলাের প্রতি নির্দেশ
বাংলা দেশের মানুষের এই চরমতম ভাগ্যপরীক্ষার মুহূর্তে তাদের সর্বপ্রকার সাহায্যদানের জন্য পার্টি সমস্ত ইউনিটকে দেশব্যাপী প্রচার অভিযান চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে সমস্ত গণতান্ত্রিক মানুষকে সঙ্গে নিতে বলা হয়েছে। পার্টি ইউনিটগুলিকে তহবিল সংগ্রহ করতে এবং ওষুধপত্র সরবরাহ দিতে আবেদন করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্বার্থ আমাদের স্বার্থ। তাই অবিলম্বে সর্বপ্রকার বৈষয়িক সাহায্য দেবার জন্য উঠে পড়ে লাগতে হবে।
সম্পাদকমণ্ডলী বলেছেন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য যারা পাকিস্তানের জঙ্গীশাহীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘােষণা করেছেন আমরা সেই বীর জনগণকে সেলাম জানাই। বিবৃতিতে আরাে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সশস্ত্র সৈন্য বাহিনী বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর কুরতম গণহত্যা চাপিয়ে দিয়েছে। তার মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের মানুষ মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে ও দৃঢ় সংকল্পে যে লড়াই চালাচ্ছেন তা এক অত্যাশ্চর্য ব্যাপার এবং খুবই প্রশংসার দাবি রাখে। স্বাধীন বাংলাদেশের শহীদের চরম ত্যাগ স্বীকার ও আত্মােৎসর্গের প্রতি পার্টি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।
পার্টির দৃঢ় বিশ্বাস, পাকিস্তান জঙ্গী শাহীর ক্রুরতম শক্তির চরম পরাজয় হবেই এবং বাঙলা দেশের মানুষের বিপুল বিজয় সূচিত হবে। পার্টি সম্পদাকমণ্ডলী অবিলম্বে বাংলা দেশ থেকে সমস্ত পাকিস্তানী বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন কারণ বাংলা দেশের মানুষের নিজেদের জীবনধারা ও ভাগ্য নির্ধারণের পূর্ণ অধিকার আছে।

মহিলাদের বিক্ষোভ
বাঙলা দেশের মুক্তিবাহিনীর উপর পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর যে বল্গাহীন অমানুষিক অত্যাচার চাপিয়ে দিয়েছে তার বিরুদ্ধে দিল্লীর তিন শতাধিক মহিলা পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ভারতীয় জাতীয় মহিলা ফেডারেশন এই বিক্ষোভের উদ্যোক্তা।

সূত্র: কালান্তর, ১.৪.১৯৭১