You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.03.31 | আইনসঙ্গত ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ সরকারের স্বীকৃতি দাবি | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

আইনসঙ্গত ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলা দেশ সরকারের স্বীকৃতি দাবি

কলকাতা, ৩০ মার্চ (ইউ-এন-আই)-বাংলাদেশের মুক্তিফৌজের সৈন্যাধ্যক্ষ মেজর জিয়া খান আজ সকালে ঘােষণা করেন : আইন সঙ্গত ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সরকার বিশ্বের সমস্ত গণতান্ত্রিক দেশগুলির স্বীকৃতির দাবি রাখে।
শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধ ন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এক ভাষণ প্রসঙ্গে মেজর জিয়া খান [খান শব্দটি ভুলক্রমে লেখা] বলেন, এই নতুন সরকার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই সরকার সমস্ত জাতির সঙ্গে সৌহার্দ স্থাপনের নীতি অনুসরণ করে চলবে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালাবে।
মেজর জিয়া খান তার বেতার ভাষণের শুরুতে বলেন, বাংলার মুক্তি ফৌজের অস্থায়ী সৈন্যাধ্যক্ষ হিসাবে আমি, মেজর জিয়া খান, শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে এতদ্বারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘােষণা করছি।
আমি আরও গােষণা করেছি যে আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সার্বভৌম আইনসঙ্গত সরকার প্রতিষ্ঠা করেছি। এই সরকার আইন ও সংবিধান অনুসারে পরিচালিত হবে বলে এক সংকল্প ঘােষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযােগ্য যে গত দু’দিন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এই সরকারকে অস্থায়ী সরকার হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আজ মেজর জিয়া খান তার বেতার ভাষণে এই সরকারকে অস্থায়ী সরকারের পরিবর্তে সার্বভৌম এবং আইন সঙ্গত সরকার বলে উল্লেখ করেছেন।
বাংলা দেশের এই পৈশাচিক গণহত্যার প্রতিবাদে যাতে প্রতিটি রাষ্ট্র তার নিজ নিজ দেশের জনমত সংগঠিত করেন সেই উদ্দেশ্যে মেজর জিয়া খান প্রত্যেক রাষ্ট্রের প্রতি আবেদন জানান।
মেজর খান আরও বলেন যে পাকিস্তান সরকার নানা পরস্পর বিরােধী বিবৃতির মাধ্যমে জনসাধারণকে প্রতারিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু একটি মানুষও ইয়াহিয়া খান ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না।

রাত্রিতে জলপথে চলাচল নিষিদ্ধ
স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলা সরকার রাত্রিতে নদী বা জলপথে চলাচল নিষিদ্ধ ঘােষণা করেছে।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত উপরােক্ত সরকারী আদেশে বলা হয়েছে যে দ্রুত অগ্রগামী মুক্তিফৌজের আক্রমণের মুখে যাতে বিক্ষিপ্ত শত্রু সৈন্য বাহিনী পালাতে না পারে সেই উদ্দেশ্যেই রাত্রিতে জলপথে চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

পরিবহন সংস্থা মুক্তি ফৌজের দখলে
মুক্তিফৌজ ঢাকায় অবস্থিত পরিবহন সংস্থার দপ্তর দখল করেছে। তাছাড়া, অনেকগুলি সংঘর্ষের মধ্যে শত্রুসৈন্যকে বিতাড়িত করে নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল, নগরবাড়ি প্রভৃতি স্থানের আঞ্চলিক পরিবহন কেন্দ্রগুলি মুক্তিফৌজের দখলে এসেছে। একটি সংবাদে আরও জানা যায় যে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা থেকে ৬৫ টি স্টীমার দখল করা হয়েছে। এ খবর শিলং থেকে ইউ এন আই-র সংবাদদাতা জানাচ্ছেন।

সূত্র: কালান্তর, ৩১.৩.১৯৭১