You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাঙলাদেশকে স্বীকৃতি দিন অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করুন
কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট আসামের কমিউনিস্ট নেতা ফণী বরার দাবি

গৌহাটি, ১৩ মে (ইউ এন)-ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির আসাম রাজ্য পরিষদের সম্পাদক শ্রীফণী বরা অবিলম্বে বাঙলাদেশকে স্বীকৃতি দানের জন্য এবং মুক্তিযােদ্ধাদের অস্ত্রশস্ত্র সহ সর্বপ্রকার সম্ভাব্য সাহায্যদানের জন্য আজ ভারত সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছেন।
শ্রীবরার নেতৃত্বে আসাম বিধানসভার সদস্যদের একটি দল আসাম ও মেঘালয়ে শরণার্থীদের শিবিরগুলাে পরিদর্শন করেন। পরে শ্রী বরা এখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাক বাহিনীকে বিতাড়িত করার জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযােদ্ধাদের প্রয়ােজন অস্ত্রশস্ত্রের এবং উপযুক্ত ট্রেনিং-এর।
তিনি বলেন, তিনি আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় আওয়ামি পার্টির সদস্যদের সঙ্গে আলাপ আলােচনায় জানতে পেরেছেন যে যুবকরা মুক্তিবাহিনীতে যােগদানের জন্য খুবই আগ্রহী। বাঙলাদেশে রাজনীতিক ও সামরিক নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে তাঁদের সঙ্গে আলােচনায় শ্রী বরার এই ধারণাও জন্মেছে।
মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য একবার তাঁরা একটি ঐক্যবদ্ধ কমান্ড গঠন করতে পারলেই অদূর ভবিষ্যতে পাকবাহিনী ব্যাপক গেরিলা আক্রমণের সম্মুখীন হয়ে খুবই অসুবিধায় পড়বে। শরণার্থীদের শিবিরগুলির অবস্থা সম্পর্কে শ্রীবরা বলেন, খাদ্যের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকলেও কাপড়চোপড়, ওষুধপত্রের খুবই অভাব রয়েছে। তিনি মেঘালয়ের শিবিরগুলিতে ডাক্তার ধার দিয়ে সাহায্য করার জন্য আসাম সরকারের নিকট আহ্বান জানান।

হাসানাবাদে জনসভায় বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের দাবি
হাসানাবাদ, ১৪ মে (সংবাদদাতা)-হাসানাবাদ থানা সংগ্রাম সমিতির ডাকে গত ৬ মে চক পাটলী হাট খােলা মাঠে এক বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন বক্তা ভারত সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি এবং অস্ত্রসহ প্রয়ােজনীয় সমস্ত রকমের সাহায্য দানের দাবি জানান। এই মর্মে সভায় একটি প্রস্তাবও গৃহীত হয়। স্থানীয় কমিউনিস্ট নেতা শ্রীকমল হালদার কর্তৃক উত্থাপিত ঐ প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয় যে, পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের সমস্ত রকম অত্যাচার ও নির্বিচার গণহত্যার মুখােমুখি দাঁড়িয়ে এক ঐতিহাসিক সংগ্রাম মারফৎ স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রজাতান্ত্রিক সরকার পৃথিবীর সমস্ত গণতান্ত্রিক সরকারগুলির কাছে তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দানের আবেদন করেছেন। কিন্তু এই বিষয়ে রাষ্ট্রগুলির নীরবতা দুঃখজনক বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষতঃ বাংলাদেশে গণহত্যা বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের নীরবতায় প্রস্তাবে সমালােচনা করা হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রীফেরাজতুল্লা মােল্লা।

সূত্র: কালান্তর, ১২.৫.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!