You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.14 | বাঙলাদেশ সংক্রান্ত সারাভারত সম্মেলনে অবিলম্বে স্বীকৃতিদানের জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশ সংক্রান্ত সারাভারত সম্মেলনে
অবিলম্বে স্বীকৃতিদানের জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান

নয়াদিল্লী, ১৩ সেপ্টেম্বর (ইউ এন)-ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির উদ্যোগে দুদিনব্যাপী বাংলাদেশ সংক্রান্ত সারা ভারত সম্মেলন গতকাল সন্ধ্যায় সমাপ্ত হয়েছে।
উক্ত সম্মেলনে বাঙলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে স্বীকৃতিদানের জন্য ভারত সরকারের নিকট এক আবেদন জানান হয়েছে। সম্মেলনে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাঙলাদেশকে স্বীকৃতি দানে আরও বিলম্ব করলে সাম্প্রদায়িক এবং গণতন্ত্রবিরােধী শক্তি সমূহকেই পরিস্থিতি কাজে লাগাবার সুযােগ দেওয়া হবে।
উক্ত সম্মেলনে আটটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। অপর এক প্রস্তাব বিশ্বের এই অংশে শান্তির দুর্গ হিসাবে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত ভারত সােভিয়েত চুক্তিকে অভিনন্দিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে উক্ত চুক্তি পশ্চিম পাকিস্তানের ফ্যাসিস্ত সামরিক জুন্টার প্রতি চরম আঘাত হেনে বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে প্রভৃতি পরিমাণে শক্তিশালী করবে।
সম্মেলন, বাঙলাদেশে গণহত্যা বন্ধের উদ্দেশ্যে এবং স্বয়ং নিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খা এবং তার সামরিক অফিসারদের বিচারের ব্যবস্থা করার উদ্দেশ্যে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে জাতিসংঘের বিশিষ্ট শক্তিসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সরকার পাকিস্তানকে অবিরাম অস্ত্র-শস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করার সম্মেলনে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। শেখ মুজিবরের নিঃশর্ত মুক্তি আদায়ের জন্যও জাতিসংঘ সদস্যদের নিকট আহ্বান জানান হয়েছে।
ভারতে ৮০ লক্ষেরও অধিক শরণার্থী চলে আসায় সম্মেলনে গভীর দুঃখ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং সঙ্গে সঙ্গে অর্থনীতিক সংকট থাকা সত্ত্বেও ভারত সরকার শরণার্থীদের জন্য যে খাদ্য ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন তাতে ভারত সরকারের মানবিক কাজের ভুয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। সম্মেলনে আস্থার সঙ্গে শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য বাঙলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আশা আকাঙ্খ অনুযায়ী বাঙলাদেশ সমস্যার রাজনীতিক সমাধানের উপায় উদ্ভাবন করতে জাতিসঙ্ঘের নিকট আবেদন জানিয়েছে।

সূত্র: কালান্তর, ১৪.৯.১৯৭১