You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.02 | পদগর্নির ভাষণ | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

পদগর্নির ভাষণ

নয়াদিল্লী, ১ অক্টোবর-সােভিয়েত রাষ্ট্রপতি শ্রীনিকোলাই পদগাের্নি আজ এখানে সুস্পষ্ট ভাষায় ঘােষণা করেন, বাঙলাদেশের জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ও স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতি অনুযায়ী এক ন্যায্য রাজনৈতিক সমাধানের ব্যাপারে সােভিয়েত ইউনিয়ন “সর্বপ্রকার সম্ভাব্য সহায়তা দান করবে।
ইউ এন আই প্রচারিত এই সংবাদে বলা হয়েছে যে, আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী ভি, ভি, গিরি প্রদত্ত এক সম্মাননা ভােজে সােভিয়েত রাষ্ট্রপতি শ্রী পদগাের্নি বলেন যে, সােভিয়েত জনগণ খুবই উদ্বেগের সঙ্গে ভারত উপমহাদেশে এক কঠিন ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির প্রতি নজর রাখছেন।
শ্রীপদগাের্নি বলেন, এখানে সামরিক সংঘর্ষের দিকে ঘটনা চলে যাওয়াকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে এবং ন্যায়সম্মত রাজনৈতিক নিষ্পত্তির মধ্য দিয়ে পরিস্থিতির এই উত্তেজনাকে সরিয়ে দিতে হবে।”
বক্তৃতা প্রসঙ্গে শ্রীপদগাের্নি সদ্য সম্পাদিত ভারত-সােভিয়েত চুক্তির উল্লেখ করেন বলেন যে, “এই চুক্তি হলে সােভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদারভাবে সম্প্রসারিত করা তথা এশিয়া ও সারা বিশ্বে নিরাপত্তাকে সংরক্ষিত করার আরও একটি প্রমাণ।”
সােভিয়েত রাষ্ট্রপতি বলেন যে, এই চুক্তি অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে পরিচালিত নয় এবং “সােভিয়েতভারত মৈত্রী অন্য কোন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষুন্ন করে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে না।”
ভারতের গােষ্ঠী নিরপেক্ষতার নীতির প্রতি তার দেশের মর্যাদা-দানের উল্লেখ করে শ্রীপদগােনী বলেন, “এই চুক্তি শান্তির শক্তিগুলিকেই জোরদার করে। তিনি বলেন, সােভিয়েত জনগণ জানেন যে, “ভারতের স্বাধীনতার জন্য অক্লান্ত যােদ্ধা মহাত্মা গান্ধী জাতিসমূহের মধ্যে ন্যায়, মমতা ও মৈত্রীর সম্পর্কের ধারণাগুলির একজন প্রবক্তা এবং সােভিয়েত জনগণ মহাত্মার স্মৃতিকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করেন।”
বাঙলাদেশ প্রশ্নের মীমাংসার জন্য ভারতের সঙ্গে সােভিয়েতের ক্রমবর্ধমান মৈত্রী সম্পর্কের মর্যানুযায়ী সােভিয়েত ইউনিয়ন যথাশক্তি সহায়তা দেবে বলে সােভিয়েত রাষ্ট্রপতি জানান। তিনি বলেন, “দুনিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধ ও সংঘর্ষের আগুন জ্বালিয়ে তােলার জন্য সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনাত্মক ও দমনাত্মক শক্তিগুলি সর্বতােভাবে দায়ী।”
সােভিয়েত রাষ্ট্রপতি বলেন যে, অনুরূপ ভাবে “দুনিয়ার নানান অংশে বহু সংকটপূর্ণ এলাকা রয়ে গেছে। এবং এইসব পরিস্থিতি জনগণের মৌলিক স্বার্থের পরিপন্থী ও তা জাতিসমূহের স্বাধীনতা ও সামাজিক অগ্রগতির আকাঙ্খপূরণকেই ব্যাহত করে চলেছে।”

সূত্র: কালান্তর, ২.১০.১৯৭১