You dont have javascript enabled! Please enable it!

প্রসঙ্গ ক্রমে
ভারত-সােভিয়েত মৈত্রী অগ্রগতি বাঙলাদেশেরও সহায়ক

মস্কোতে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত ভারত-সােভিয়েত যুক্ত বিবৃতি পড়ে এ দেশের অতিবিপ্লবী থেকে প্রতি বিপ্লবী পর্যন্ত সমস্ত মহল যখন “এটা কিছুই নয়,” “এতে নতুন কিছু নেই” ইত্যাদি বিবৃতি ঝেড়ে বা সম্পাদকীয় ছেড়ে আসর গরম করতে সচেষ্ট ছিল, তাদের মুখে সঙ্গে সঙ্গেই কয়েকটা জোর চপেটাঘাত জুটেছে। প্রথমটা, বিবৃতির কালি শুকাতে না শুকাতে ভারত সােভিয়েত রাষ্ট্রপতির আগমন এবং স্পষ্ট ভাষায় ঘােষণা যে, পূর্ববঙ্গের জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ও স্বার্থের সঙ্গে পূর্ণ সঙ্গতি রেখে যাতে একটি ন্যায্য রাজনৈতিক সমাধান হয় সেজন্য সােভিয়েত ইউনিয়ন সর্বপ্রকার সম্ভাব্য সহায়তা দেবে। দ্বিতীয়টা হচ্ছে, ‘প্রাভদা’য় পূর্ববঙ্গে ইয়াহিয়া-চক্রের পাইকারী গণহত্যা ও নাগরিক অধিকার ধ্বংসের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রকাশ ও ঐ সঙ্গেই সােভিয়েত ইউনিয়নের জনগণের বৃহত্তম গণ-সংগঠন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সংস্থাও প্রভাবশালী গণ-সংগঠন সােভিয়েত শান্তি কমিটির পক্ষ থেকে প্রচারিত বিবৃতিতে পূর্ববঙ্গের জনগণের ন্যায্য দাবির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন প্রকাশ।
বলাবাহুল্য, তারপরও এসব গুবরে পােকা গােময়ের সন্ধানেই ঘুর ঘুর করবে।
এদের অবস্থাটা হচ্ছে অনেকটা সেই পর শ্রীকাতর প্রতিবেশীরই মতাে যে বলেছিল: পড়শীর ছেলেটি পরীক্ষা দিলে কি হবে পাশ করতে পারবে না। ছেলেটি যখন পাশ করল তখন সে বলল: পাশ করলে কি হবে চাকুরি পাবে না। আবার ছেলেটি চাকুরি পেয়ে গেলে বলল : চাকুরি পেলে কি হবে মাইনে পাবে না। কিন্তু বাস্তব সেই পরশ্রীকাতর পড়শীকে যেমন হাস্যস্পদ করেছিল তেমনি সােভিয়েত-ভারত মৈত্রী এবং বাঙলাদেশ মুক্তি আন্দোলনের প্রতি ক্রমবর্ধমান সােভিয়েত সমর্থনও এই গুবরে পােকাদের অনেক পশ্চাতে ফেলে সত্যিকারের স্বাধীন বাঙলাদেশ ও প্রকৃত মুক্ত ও সমুন্নত এক ভারত গঠনের শীর্ষদেশে আমাদের দুটি দেশকে নিয়ে যেতে প্রভূত সাহায্য করবে যেখানে এই গুবরে পােকাদের অস্তিত্বও থাকবে না।

সূত্র: কালান্তর, ৩.১০.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!