You dont have javascript enabled! Please enable it!

মৈত্রী চুক্তি অনুযায়ী ভারতে পাক আক্রমণ রােধে সােভিয়েত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে
৪ দিনব্যাপী আলােচনা শেষে ভারত-সােভিয়েত মতৈক্য ঘােষণা
(বিশেষ সংবাদদাতা প্রেরিত)

নয়াদিল্লী, ২৭ অক্টোবর-পাকিস্তান থেকে ভারত আক্রান্ত হলে তা অপসারিত করার জন্য সােভিয়েত ইউনিয়ন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সােভিয়েত ও ভারতের মধ্যে অনুষ্ঠিত মৈত্রী, বন্ধুত্ব ও সহযােগিতা চুক্তির ৯ ধারা অনুযায়ী উক্ত ব্যবস্থা গৃহীত হবে।
ভারত ও সােভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে পারস্পরিক আলােচনার পর পাক-ভারত উপমহাদেশের পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক সে বিষয়ে ভারত ও সােভিয়েত ইউনিয়ন সম্পূর্ণ একমত হয়েছে বলে আজ এক যুক্ত বিজ্ঞপ্তি প্রচারিত হয়েছে।
এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশকালে জনৈক সরকারী মুখপাত্র জানান যে, পাকিস্তানের আক্রমণাত্মক মনােভাব লক্ষ্য করে ভারত সােভিয়েত মৈত্রী চুক্তির ৯ ধারায় যেখানে আক্রমণ ও আক্রমণের আশঙ্কার ক্ষেত্রে “উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যে পারস্পরিক আলােচনার ব্যবস্থা রয়েছে সেই অনুযায়ীই বর্তমান আলােচনা হয়েছে।
সরকারী মুখপাত্র আরও বলেন যে, সােভিয়েত সহকারী পররাষ্ট্র সচিব এন, পি, ফিরুবিনের নেতৃত্বে সােভিয়েত প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের মধ্যে যে ৪ দিনব্যাপী আলােচনা হলাে তা শুধু বাৎসরিক দ্বিপক্ষীয় আলােচনা নয়, উপরােক্ত চুক্তির ৯ম ধারা অনুযায়ী পারস্পরিক আলােচনা।
যুক্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, এই আলােচনা পাক-ভারত উপমহাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ও শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে বলেই অনুষ্ঠিত হলাে। এই পরিস্থিতি বিচার করার ব্যাপারে উভয় পক্ষই একমত।
তাতে আরও বলা হয়েছে যে, বন্ধুত্ব, পারস্পরিক আস্থা ও বােঝাপড়ার আবহাওয়ায় এই আলােচনা হয় এবং সমস্ত আলােচিত বিষয়ে তারা একমত হয়।
পররাষ্ট্র দপ্তরের জনৈক মুখপাত্র বলেন যে, ভারতের সীমান্ত বরাবর পাকিস্তানী সৈন্য সমাবেশের ফলে ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ক্রমাগত উস্কানি দেওয়ার দরুন ভারতের অখণ্ডতা বিপন্ন হওয়ার সমস্যাটি স্বভাবতই উভয় পক্ষ আলােচনা করেছে।
উভয় পক্ষ এ ব্যাপারেও একমত হয়েছে যে, বাঙলাদেশ সমস্যার প্রকৃত রাজনৈতিক সমাধানের প্রতি পাকিস্তান বর্তমানে যে কান দেবে সে আশাও খুব কম। এই রাজনৈতিক সমাধানের কথা ভারত ও সােভিয়েত ইউনিয়ন ক্রমাগত বলে আসছে।
ফিরুবন কি ভারতকে সামলাবার জন্য এসেছিলেন এই প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন যে, ভারতকে সামলাবার মতাে ব্যাপারই নেই। সােভিয়েত-ভারত মৈত্রী, বন্ধুত্ব ও সহযােগিতা চুক্তির ৯ম ধারায় বলা হয়েছে : উভয় পক্ষই কোন তৃতীয় পক্ষকে অন্য কোন পক্ষের সঙ্গে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হলে কোনােরূপ সাহায্য করবে না। কোনাে পক্ষ আক্রান্ত হলে বা আক্রান্ত হবার আশঙ্কা থাকলে চুক্তিবদ্ধ পক্ষদ্বয় উভয় দেশের শান্তি ও নিরাপত্তাকে অক্ষুন্ন রাখার জন্য উপযুক্ত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনতিবিলম্বে পারস্পরিক সহযােগিতা করে যাবে।

সূত্র: কালান্তর, ২৮.১০.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!