You dont have javascript enabled! Please enable it!

সােভিয়েত ইউনিয়ন জাতিসঙ্ঘের মাধ্যমে পাক মিত্রদের বাঙলাদেশ সমস্যায় হস্তক্ষেপের বিরােধিতা করবে

মস্কো, ২৮ নভেম্বর—বাঙলাদেশ সমস্যাটিকে ভারত-পাক সংঘর্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে পাকিস্তানের মিত্র রাষ্ট্রগুলি জাতিসঙ্ঘের মাধ্যমে বর্তমান সঙ্কটে হস্তক্ষেপে যে সুযােগ খুঁজছে সােভিয়েত ইউনিয়ন তার বিরােধিতা করবে। প্রাভদায় প্রকাশিত এক প্রবন্ধে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট মন্তব্য করা হয়েছে।
এ পি জানাচ্ছে, সােভিয়েত ইউনিয়ন ভারত-পাক সমস্যায় বৃহৎ পাঁচটি শক্তি এবং নিরাপত্তা পরিষদে হস্তক্ষেপ করানাের উদ্যোগটি বিরােধিতা করবে।
আজ সােভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র প্রাভদায় এই আভাস দেওয়া হয়েছে। আজ প্রাভদার আন্তর্জাতিক পর্যালােচনা বিভাগে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ভিতরে এবং বাইরে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলি ভারত পাকিস্তান সম্পর্ককে জটিল করে তােলা এবং সমস্যাটিকে আন্তর্জাতিক সঙ্কট হিসেবে পরিণত করার জন্য বর্তমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগাচ্ছে।
উল্লেখযোেগ্য যে, সােভিয়েত ইউনিয়ন ইতিপূর্বে বাঙলাদেশ সমস্যাটি ও পশ্চিম পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা বলে বারবার উল্লেখ করেছে।
নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচজন স্থায়ী সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সােভিয়েত ইউনিয়ন, চীন, বৃটেন ও ফ্রান্সের কাছে বর্তমান সমস্যাটিকে নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করানাের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের উপর যে চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানানাে হয়—প্রাভদা তা নাকচ করেছে।
এই প্রসঙ্গে উদাহরণ হিসেবে প্রাভদা নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ জেমস রেষ্টনের প্রবন্ধে উল্লেখ করেছে। প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ভারত-পাক উপমহাদেশের আসল প্রশ্নকে এক পাশে সরিয়ে রেখে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আবেদনটি “চরম মুখতার পরিচায়ক।
প্রাভদার এই মর্মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৃটেন ও অন্যান্য রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট শক্তিগুলিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এবং বলা হয়েছে, ঐ ব্যক্তিগুলি বর্তমান জটিল পরিস্থিতিকে পুঁজি করার চেষ্টা করেছে।
নিক্সনের উদ্যোগ চলছে
ওয়াশিংটন থেকে জানানাে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন ভারত, পাকিস্তান ও সােভিয়েত ইউনিয়নের কাছে এ সপ্তাহের শেষে এক বার্তা পাঠিয়ে ভারত-পাক যুদ্ধ রােধ করার অনুরােধ জানাবেন। আজ ওয়াশিংটনে একথা জানা গেছে। বলা হয়েছে, ঐ বাতায় পূর্ববঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানের সৈন্যদের সংঘর্ষ থেকে বিরত করা এবং পরস্পরের সৈন্য প্রত্যাহার করার বিষয়টির ওপর গুরুত্ব আরােপ করা হতে পারে।
নিক্সনের ঐ বার্তায় গত বুধবার ভারত ও পাকিস্তানের কাছে মার্কিন স্বরাষ্ট্র সচিব রজার্সের আবেদনের অন্তর্নিহিত বক্তব্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সমস্যাটির বিষয়ে সােভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে মার্কিন কূটনীতিকরা যােগাযােগও রক্ষা করছেন। কারণ মার্কিনীরা মনে করেছেন যে সােভিয়েতও ভারত পাক যুদ্ধ হােক এটা চায় না।
উল্লেখযােগ্য যে, নিরাপত্তা পরিষদে সমস্যাটি এলেও ভারতের পক্ষে সােভিয়েতও পাকিস্তানের পক্ষে চীন থাকায় সমস্যাটির ওপর ভিটো’ প্রয়ােগের সময় অন্য ৩ সদস্য কি করবে সেটা পরিস্কার নয় বলে বলা হয়েছে।

সূত্র: কালান্তর, ২৯.১১.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!