মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আরেকটি চক্রান্ত
সংবাদে প্রকাশ সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সাতজন সদস্যবিশিষ্ট একটি উঁচু দরের মার্কিন সমর
দল পাকিস্তানের যুদ্ধপ্রস্তুতি সরেজমিনে তদারক করে গেছে। এই দলে ছিল বিমান বাহিনীর দু’জন বিশেষজ্ঞ।
পাকিস্তানের বর্বর সামরিক জুন্টার পাণ্ডা নর-রাক্ষস ইয়াহিয়া খা সম্প্রতি তেহেরান সফরকালে ইরানের কাছে কমপক্ষে এক স্কোয়াড্রন মার্কিন হাল্কা বােমারু বিমান প্রার্থনা করেছে।
সংবাদে প্রকাশ। পূর্বোক্ত সময় বিশেষজ্ঞ দল পাকিস্তান ত্যাগ করার কয়েক দিনের মধ্যেই ইরান পাকিস্তানকে এক স্কোয়াড্রন বােমারু বিমান সরবরাহ করবে জানিয়েছে। অবশ্য বিমানগুলাে সবই ‘মেড ইন ইউ এস এ।
মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের জারক ‘সেপ্টো’ সমরচক্রের দুই সভ্য ইরান ও পাকিস্তান বিপদে পড়লে একে অপরকে দেখবে বৈ কি। তবে তার আগে সাহায্যের প্রকৃতি ও পরিমাণ নির্ধারণের জন্য মার্কিন বিশেষজ্ঞদের বুদ্ধি বা নির্দেশ চাই তাে!
মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ প্রকাশ্যে পাকিস্তানকে যথেষ্ট সমরাস্ত্র প্রেরণ করতে পারছে না। কিন্তু সমর জোটগুলি তাে এইজন্যই করা। সুতরাং অসুবিধা কি আছে?
পাকিস্তানী হানাদাররা এখন ঐ বিমানে উড়ে বাঙলা দেশের যত্র তত্র বােমা ফেলে কত না মাই-লাই’ সৃষ্টি করবে। ” আর, কখনাে বা হানাদার বিমান বাহিনী “ভুলবশত” সীমান্ত লঙ্ন করে পাক-ভারত উপমহাদেশের যুদ্ধের উসকানি দেবে। পারলে যুদ্ধ বাধাবে।
বস্তুতঃ, এই একটি ঘটনাই প্রমাণ করে পৃথিবী থেকে মার্কিন সমর-জোটগুলিকে ধ্বংস করা, এই সমর জোট স্রষ্টা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে ঘায়েল করা,শান্তিকামী মানুষের কত জরুরী কর্তব্য হয়ে উঠেছে।
আর এই প্রসঙ্গেই মনে পড়ে ভারত-সােভিয়েত চুক্তির কথা। সাম্রাজ্যবাদ ও সমাজতান্ত্রিক শিবিরের মৌলিক প্রভেদটি এর ফলে মুহূর্তে স্পষ্ট হয়ে যায়।
কিন্তু, তবুও ভারতবর্ষে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের যারা অনুচর, তারা ভারত-সােভিয়েত চুক্তির নিন্দা ও মার্কিন প্রভুদের প্রশংসা করা থেকে বিরত হবে না।
এবং বলবে, এ-সবই তারা করছে গণতন্ত্রের জন্য। বাঙলা দেশে অবশ্য এই গণতন্ত্রের নিধন তাদের চোখেই পড়বে না।
সূত্র: কালান্তর, ১১.১০.১৯৭১