You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.22 | না! কোন জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক না | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

না!
কোন জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক না

নয়াদিল্লী, ২১ জুলাই (ইউ এন আই)-ভারত পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, শরণার্থী শিবিরে জাতিসংঘের কোন পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করার জন্য যে-কোন সরকারের প্রচেষ্টাকে তার বন্ধুত্বের কাজ বলে মনে করবেন না।
সপ্রতি মার্কিন-যুক্তরাষ্ট্র সহ কোন কোন দেশ জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সভায় ঐ মর্মে যে প্রচেষ্টা করেছে, সেই ব্যাপারেই উপরােক্ত মন্তব্য করা হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের সংবাদে জানা গেল যে, ভারত ও পাকিস্তানে একই সঙ্গে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক বসানাে দু দেশকে সমান করে দেখার চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। এই ব্যাপারে জাতিসংঘের নিরুৎসাহিতার বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত ও ক্রোধকে শান্ত করার উদ্দেশ্যই এই মুখ বাঁচাবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
উক্ত মহল থেকে আরও বলা হয়েছে যে, যদি কোন পর্যবেক্ষক বসাতে হয় তবে পূর্ববঙ্গেই তা বসান দরকার, সেখানে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা ত্রাসের রাজত্ব চালাচ্ছে এবং তার ফলেই সাধারণত মানুষ ভারতে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীদের জন্য উপযুক্ত হাই-কমিশনের ওপর পর্যবেক্ষক পাঠাবার বিষয়টির দায়িত্ব দিচ্ছে দেখে উক্ত মহল বিস্মিত হয়েছেন। কারণ শক্তিরক্ষা বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক পাঠাননার দায়িত্ব নিরাপত্তা পরিষদের ওপর ৬নং ধারা অনুযায়ী বর্তায়। এটা নিরাপত্তা পরিষদেরই কাজ। ভারত জানিয়েছে যে, শরণার্থী শিবিরে পর্যবেক্ষক পাঠাবার অর্থ পূর্ববঙ্গে পাকিস্তানী শাসকদের দমননীতি বন্ধ করার জন্য তা না পাঠিয়ে, ভারত ও পাকিস্তানকে সমান করে দেখা। উক্ত মহল এটাও সন্দেহ করছে যে, সম্প্রতি মুক্তিফৌজের কর্মতৎপরতা বাড়ছে বলেই এই পর্যবেক্ষক পাঠানের প্রস্তাব উঠেছে।
মুক্তিফৌজের কার্যকলাপ পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের সম্ভবত খুবই বে-কায়দায় ফেলছে। মুক্তিফৌজ কর্তৃক ঢাকার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আক্রান্ত হওয়ার পরই যশাের ও মেহেরপুরেও বিদ্যুৎ কেন্দ্র আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পূর্ববঙ্গের কোন অংশ যদি ভারত দখল করে তবে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করা হবে বলে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া যে হুমকি দিয়েছেন ভারত সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল আছে।

সূত্র: কালান্তর, ২২.৭.১৯৭১