You dont have javascript enabled! Please enable it!

জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে ইয়াহিয়ার আকুল আবেদন

রাওয়ালপিণ্ডি, ৩০ নভেম্বর (এ পি)-পাক রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খাঁ আবারও আকুল আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে।
ভারতের দিকে নয় পাকিস্তানের দিকেই ভারত পূর্ব পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক মােতায়েন করুন।
এর আগে অবশ্য তিনি দাবি করেছিলেন দুদেশের সীমান্তেই এই পর্যবেক্ষক মােতায়েন করা হােক। গত রবিবার উ-থান্টের কাছে লিখিত চিঠিতে জেনারেল সাহেব এই আকুতি করেছিলেন। এক সরকারী ঘােষণায় গতরাত্রে একথা জানান হয়েছে।
“ভারতের বিনা প্ররােচনায় এবং ব্যাপক আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ববাঙলার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটছে বলেও চিঠিতে তিনি কান্নাকাটি করেছেন।
জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক গত ২২ বছর ধরে অবশ্য পাকিস্তান কাশ্মীর সীমান্তে মােতায়েন রয়েছে।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরের একজন মুখপাত্র আজ ইয়াহিয়া খাঁর চিঠির কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তিনি চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেন নি।
জাতিসংঘ মহল বলেছেন, মহাসচিবকে এই আবদার কার্যকর করতে হলে অন্ততঃপক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের নির্দেশ প্রয়ােজন।
এদিকে ইউ এন আই খবর দিচ্ছে, দুটি পাকিস্তানী মিরেজ গতকাল দেরাবাবা নানক ও রাবনদীর উত্তরে কাওয়ালি গ্রামে ভারতীয় আকাশ লজ্জন করে। কিন্তু বিমানবাহিনীর বিমানগুলি ফ্রান্সের নির্মিত মিরেজ দু’টিকে তাড়া করে হঠিয়ে দেয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্যটি জানান হয়েছে।
আজও তিনটি পাকিস্তানী বিমান কাশ্মীরে ভারতীয় আকাশ অতিক্রম করে ভেতরে ঢুকে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় বিমান বহরের বিমানগুলিও তাদের পিছু ধাওয়া করে। বেলা ১১-৩৫ মিনিটের সময় একটি মিরেজকে কাথুয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করতে দেখলে আমাদের ন্যাটগুলি সেটিকে তাড়া করে।
জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে মেন্দর সেক্টর সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী গুলি বর্ষণ করেছে। আজ রাজধানীতে সকাল বেলায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটি ভারত পাকিস্তান সীমান্তের সর্বশেষ ঘটনাবলী নিয়ে পর্যালােচনা করেন। বৈঠকে বাহিনীত্রয়ের প্রধানগণও উপস্থিত ছিলেন।
ফিরােজপুর থেকে পাওয়া খবরে বলা হয়েছে হােসেনিওয়ালার উত্তরে পাকিস্তানের সীমান্ত গ্রামগুলি থেকে সমস্ত অ-সামরিক লােকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত বরাবর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ট্রেঞ্চ খুঁড়ছে।
গত তিনদিনে ছাত্র সেক্টরের সামনাসামনি ১৯টি পাকিস্তানী গ্রাম থেকে সমস্ত লােকজন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সূত্র: কালান্তর, ১.১২.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!