You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.06 | নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো প্রয়ােগ : বাইরে কঠোর হুঁশিয়ারি | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো প্রয়ােগ : বাইরে কঠোর হুঁশিয়ারি

ভারত বিরােধী মার্কিনী চক্রান্তের বিরুদ্ধে সােভিয়েতের দৃঢ়তা

জাতিসংঘ, ৫ ডিসেম্বর-পশ্চিম পাকিস্তানের জঙ্গী শাহীকে ভরাডুবির হাত থেকে রক্ষার জন্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার মিত্রদের চক্রান্ত আজ সােভিয়েত ইউনিয়ন ব্যর্থ করেছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে আক্রান্ত ও আক্রমণকারীকে এক করে দেখানাের মার্কিন প্রস্তাব সােভিয়েত প্রতিনিধি ভেটো দিয়ে নাকচ করেছে। এরই কিছুক্ষণ পরে মস্কো থেকে প্রকাশিত সরকারী বিবৃতিতে ভারত উপ-মহাদেশের বর্তমান সংঘর্ষে হস্তক্ষেপ না করার জন্য বাইরের শক্তিগুলিকে হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়।
সােভিয়েত ইউনিয়ন আজ যে মার্কিন প্রস্তাবে ভেটো প্রয়ােগ করে সেই প্রস্তাবের অন্যতম সমর্থক ছিল চীন।
জাতিসংঘ এখন সােভিয়েত ইউনিয়নের বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে আলােচনা করছে। যার মূল বক্তব্য হলাে পূর্ব বাঙলার রাজনৈতিক সমাধান চাই।
গতকাল মার্কিন প্রতিনিধি আরও ৮টি রাষ্ট্রের সমর্থনে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরী অধিবেশনে এই প্রস্তাবটি পেশ করেন। প্রস্তাবে আক্রান্ত ও আক্রমণকারী কোন বিবেচনা না করেই ভারত ও পাকিস্তানকে অস্ত্র সংবরণের জন্য আহ্বান জানানাে হয়। এছাড়া উভয় সৈন্যদলকে নিজ ভূখণ্ডে ফিরে যাওয়া এবং কোন এক পক্ষের আমন্ত্রণে সীমান্তে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক নিয়ােগের কথা বলা হয়।

একপেশে প্রস্তাব
জাতিসংঘ সােভিয়েত প্রতিনিধি জ্যাকব এ, মালিক মার্কিন প্রস্তাবটিকে একপেশে বলে নিন্দা করেন।
মালিক বলেন, এই প্রস্তাবের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য হলাে যে অন্যায় করেনি তার ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। জ্যাকব মালিক তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে ঘঘাষণা করেন “পাকিস্তান ও তার মহান রক্ষাকর্তা এবং সামরিক শিবিরের অন্তর্ভুক্ত পাকিস্তানের কিছু মিত্ররা ভারত এবং পাকিস্তানকে একই মঞ্চে দাঁড় করানাের অপপ্রয়াস করছে। সােভিয়েত প্রতিনিধি এই অপপ্রয়াসের কঠোর সমালােচনা করে বলেন, বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি
ঘটত না, যদি পাকিস্তানে জঙ্গীশাহী গত ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানের জনগণের আইনসম্মতভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার না করত।
ভারতের বিরুদ্ধে দোষারােপ করার অপপ্রয়াসের সমালােচনা করে মালিক বলেন, ভারতকে নির্যাতন করা হচ্ছে। প্রায় ১ কোটি শরণার্থীর ভারতের ভূখণ্ডে ঠেলে দিয়ে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
মালিক আলােচনার প্রথম পর্যায়েই বাঙলাদেশের এক জনপ্রতিনিধিকে নিরাপত্তা পরিষদে আমন্ত্রণ জানানাের দাবি করলে উত্তেজনা চরম ওঠে।
মালিক বলেন, সােভিয়েত ইউনিয়ন বরাবরই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হােক এআশা করে।

সূত্র: কালান্তর, ৬.১২.১৯৭১