ভারত-পাক প্রশ্ন নিরাপত্তা পরিষদে তুলতে মার্কিনরা ব্যগ্র
সােভিয়েত ইউনিয়ন ঘাের বিরােধী:
অন্যান্য পরিষদ সদস্যও দ্বিধাগ্রস্ত
জাতিসংঘ, ২৭ নভেম্বর (এ পি) নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ টি দেশের প্রতিনিধিরাই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে লড়াই চলছে তা নিরাপত্তা পরিষদে তােলা উচিত কি না সে বিষয়ে পরস্পরের মধ্যে আলােচনা করেন। কিন্তু তাদের মধ্যে এ বিষয়ে মতৈক্য হয়নি। সাধারণ মনােভাব হল, তেমন কোন বৈঠকের সময় এখনও আসেনি। একজন কূটনীতিক বলেছেন, বেলজিয়াম এবং জাপান আলােচনা আরম্ভ করে দেখেছে, স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে বিশেষ করে সােভিয়েত ইউনিয়ন তেমন কোন বৈঠকের সবচেয়ে বেশি বিরােধীপক্ষান্তরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই বৈঠকের সবচেয়ে বেশি পক্ষপাতী।
বৃহৎ পাঁচ শক্তির প্রতিনিধিরা গতরাত অবধি এ প্রশ্নে মােটেই ওপর তুষ্টীভাবই দেখিয়েছেন। ব্যতিক্রম কিছুটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদের বক্তব্য হচ্ছে, গােপনে দুপক্ষকে একটা ভয়াবহ সংঘর্ষের মুখ থেকে কিভাবে সরিয়ে আনা যায় সেটা দেখাই সমীচীন। তাছাড়া ভারত বা পাকিস্তান নিজেরাও এখনও পর্যন্ত প্রশ্নটাকে জাতিসংঘে আনার জন্য আগ্রহ দেখায় নি।-যদিও পাকিস্তান অভিযােগ করেছে যে, ভারতীয় সৈন্যরা বিপুল সংখ্যায় পূর্ববঙ্গে আক্রমণ করেছিল, তবু তারাও এখন পর্যন্ত এ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের দাবি করছে না। নিরাপত্তা পরিষদ দায়ী না হলেও ইন্দোনেশিয়াও এ প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকার জন্য দাবি করে, যদিও তার ফলে কোন লাভ হয়নি।
এদিকে এই প্রশ্নে বৃহস্পতিবার নিক্সন এবং হীথের মধ্যে ফোনে যে আলােচনা হয়েছে তাতেও অবিলম্বে প্রসঙ্গটি নিরাপত্তা পরিষদে তােলার পক্ষে কোন মতৈক্য উপনীত হওয়া গিয়েছে, এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র কে বলেছেন, ভারত পাক সীমান্তে বিস্ফোরণ পরিস্থিতিকে প্রশমিত করার জন্য আবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেমন, নির্মাণ মূল্য সমেত ২ লক্ষ টাকা শহর সম্পত্তির এবং ৫ জনের পরিবারে ৮১০ বর্গ মিটার জমির উধ্ব সীমা সম্পর্কে সিলিং ধার্যের প্রস্তাব করা হলেও সিলিং এর হার চূড়ান্ত নির্ণয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য ইউনিটগুলির ওপর।
দ্বিতীয় উদ্বৃত্ত সম্পত্তি বিলির প্রশ্নটি খােলা রাখা হয়েছে। তবে কার্যনির্বাহী কমিটির সর্বসম্মত অভিমত হলাে সরকারকে ঐ উদ্ধৃত্ত সম্পত্তি দখল করতে দেওয়া হবে না। এই সম্পত্তি কোনাে এক স্বাধীন সংস্থার হাতে দেওয়া হবে একথা বলা হলেও ঐ সংস্থা ঐ সম্পত্তি বা জমি নিয়ে কি করবে তা বলা হয় নি।
শহর সম্পত্তির সিলিং-এর আওতা থেকে বাণিজ্য এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। জনসঙ্ঘের জনৈক মুখপাত্র বলেন এই আইন পাশ হলেও কোন ব্যক্তি সিলিং বহির্ভূত সম্পত্তি রাখতে পারেন সেক্ষেত্রে তাঁকে “পেনাল ট্যাক্স দেওয়া হবে।
জনসংঘ কৃষি আয়করও বসাতে চায় এবং তা হবে বার্ষিক ২৫ হাজার টাকায় উর্ধে আয়সম্পন্ন চাষীর ক্ষেত্রে।
সমস্ত বিদেশী ব্যাঙ্ক জাতীয় কারণ এবং সমস্ত বিদেশী কোম্পানি জাতীয়করণের কথা বলা হলেও ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন নিয়ে কোন কথা বলা হয় নি। এছাড়া ভূমিহীনদের মধ্যে জমি বিলি সম্পর্কে ঐ ইসতিহারে কোন উল্লেখ নেই।
জনসংঘ সংবাদপত্রের মালিকানা বিকেন্দ্রীকরণ প্রস্তাবের বিরােধী। এর ফলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা হবে বেতনভুক্ত সাংবাদিকদের সংবাদপত্রের পরিচালকমণ্ডলীতে গ্রহণ করা যেতে পারে। এর উদ্দেশ্য হবে কর্মচারী ও পরিচালকমণ্ডলীর মধ্যে সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়িয়ে চলা।
সূত্র: কালান্তর, ২৮.১১.১৯৭১