পাকফৌজ মােতায়েন করার বিষয়ে পরামর্শ দেবার জন্য মার্কিন সমর বিশেষজ্ঞ
মুজিবনগর, (আই পি এ)-গত দু’সপ্তাহের মধ্যে বিশেষত কাশ্মীর সীমান্ত বরাবর পাকসৈন্য মােতায়েন করার ব্যাপারে পাকিস্তানী সামরিক চক্রকে পরামর্শ দেবার জন্য চারজন মার্কিন বিমানবাহিনীর বিশেষজ্ঞ ছাড়াও ১১ জন মার্কিন সেনাবাহিনীর অফিসার এসেছেন। বাঙলাদেশ সরকারর জনৈক মন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারের এই কথা জানান।
তিনি সুনির্দিষ্টভাবে জানান যে, ২৫ মার্চ ঢাকায় পাক ফৌজের হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে। প্রকৃত পক্ষে, নিক্সন প্রশাসনের জোর তাগিদের ফলে সম্প্রতি তুরস্ক ও পাকিস্তান দুটি সাবমেরিন ও একটি ডেস্টয়ার পাঠিয়েছে। এছাড়া অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সৌদী আরব পাকিস্তানকে দুই স্কোয়াড্রন হাল্কা মার্কিন বােমারু বিমান সরবরাহ করেছে।
তিনি বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব চাইতে ঘৃণ্য দুমুখাে ভূমিকা পালন করছে” এবং মনে হয়, নিক্সনের উপদেষ্টারা “ক্যাথলিকদের চাইতেও বেশি ক্যাথলিক। “তারাই পাকিস্তানের সংহতি রক্ষা করার দায়িত্ব নিজেদের ঘাড়ে তুলে নিয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনও সরাসরি সংঘর্ষ হলে অবশ্য তাতে প্রত্যক্ষভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে জড়াবে বলে তিনি মনে করেন না, কারণ ভিয়েতনামের তিক্ত অভিজ্ঞতা বাঙলাদেশের উক্ত মন্ত্রী মনে করেন যে, পাকিস্তান যেহেতু খণ্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার অবস্থার সম্মুখীন, সেইহেতু ইয়াহিয়ার সামরিক জুন্টা এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ লাগবার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছে।
তিনি আরাে জানান যে, জাতিসংঘে বাঙলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য বাঙলা ন্যাপ-এর সভাপতি অধ্যাপক মােজাফফর আহমদ মুজিবনগরে ফিরবার পথে লণ্ডনে পাকিস্তান ন্যাশনাল আ পার্টির সভাপতি ওয়ালি খানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। শ্রীখান বালুচিস্তান ও পাখতুনিস্তানে স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বিস্তারিত বিবরণ দেন। তা থেকে জানা যায় স্বাধীন বালুচিস্তান ও পাখতুনিস্তানের জন্য আন্দোলন তীব্রতর হয়ে উঠেছে।
সূত্র: কালান্তর, ২৫.১০.১৯৭১