পাক সামরিক জুন্টা শিয়ালকোটের অধিবাসীদের সরিয়ে দিয়েছে
আজাদ কাশ্মীরে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ চলছে
শ্রীনগর, ৩০ অক্টোবর (ইউ এন আই)-শিয়ালকোট এলাকা থেকে পাকিস্তান বেসামরিক লােকজনদের সরিয়ে দিয়েছে। সীমান্তের ওপার থেকে পাওয়া সংবাদে জানা গেল, পাকিস্তানী সৈন্যরাই এখন সাধারণ পােশাকে এই অঞ্চলে শস্য কাটায় ব্যস্ত কারণ স্থানীয় কৃষকরা বহু পূর্বেই সামরিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশে | দেশের অভ্যন্তরভাগে চলে গেছে।
সীমান্তে পাক সৈন্য চলাচল উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালােচনার্থে কাশ্মীর মন্ত্রিসভা সাব কমিটি সম্ভবত এক বৈঠকে মিলিত হন। ছাম্ব-জৌরিয়ান, গাজৌরি এবং রণবিরসিংপুর এলাকা থেকে বে-সামরিক অধিবাসীদের ভারতীয় কর্তৃপক্ষ খুব সম্ভব শীঘ্রই সরিয়ে নেবে। সম্ভাব্য পাকিস্তানী আক্রমণের আশংকায় সাব-কমিটি ঐ সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেল।
পাক হাই কমিশন কর্মীরা বোঁচকা বুচকি বেঁধেছেন
নয়াদিল্লীর সংবাদ হচ্ছে, সেখানকার পাকিস্তান হাই কমিশনের কর্মীরা তাদের পােটলা পুটলি বেঁধে ফেলেছেন যাতে করে জরুরী নােটিশ পেলেই স্বদেশে পিটটান দিতে পারেন। খবর পাওয়া গেল, পাকিস্তান হাই কমিশন তার কর্মীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সুযােগ দেবার জন্য শীঘ্রই ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন জানাবেন।
‘আজাদ কাশ্মীরে সপ্তাহ ব্যাপী সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত
জম্মু থেকে সংবাদ নেওয়া হয় যে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে (পাকিস্তান সরকারে ভাষায় ‘আজাদ কাশ্মীর’) গত সপ্তাহে প্রচুর সংঘর্ষ ঘটে। ফলে ১৪ জন নিহত ও ৯ জন আহত হয়।
পাকিস্থানী সৈন্যদের অত্যাচার ও সামরিক আইনের বিরুদ্ধে প্রচার আন্দোলনরতদের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে বলে সীমান্তের ওপার থেকে পাওয়া সংবাদে প্রকাশ।
বিক্ষোভ সভা সমাবেশ রিপাের্টে বলা হয়, স্থানীয় ধিবাসীদের ঘােড়া ও খচ্চরগুলি খান সেনারা জোর করে নিয়ে গেছে এবং তাদের জোর করে রাস্তা তরির কাজে বেগার খাটানাে হচ্ছে। ফলে পুঞ্জীভূত বিক্ষোভ প্রকাশে অধিকৃত কাশ্মীরের জনগণ সভা সমাবেশের অনুষ্ঠান করে। কিন্তু সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সৈন্যবাহিনী আসে এবং সংঘর্ষ ঘটে। আরও সৈন্য আসে এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে মুখােমুখি তীব্র সংঘর্ষ ঘটে।
ফল হিসেবে খান সেনারা অনেক গ্রামে অভিযান চালায়। এইভাবে মীরপুর জোর সাসাওয়াহ্ এলাকা পর্যন্ত সংঘর্ষ ঘটে। পুঞ্চ ও মীরপুরে সৈন্য বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও সংগঠিত হয়।
সূত্র: কালান্তর, ১.১১.১৯৭১