বাঙলাদেশে ভারতীয় বাহিনী খুব দ্রুত এগুচ্ছে : মেঃ জেঃ জ্যাকব
দু’দিনে তিনশতাধিক পাক সৈন্য নিহত
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা ৬ ডিসেম্বর-দক্ষিণে বিস্তৃত জন্মভূমি আর অসংখ্য নদী, উত্তরে ধানক্ষেত আর সমতল জলাভূমি-বাঙলাদেশের এই ভূপৃষ্ঠাগত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর অগ্রগতি সহজ নয়, তবু বাঙলাদেশের ভূপৃষ্ঠাগত প্রকৃতির কথা বিবেচনা করে বলা যায় “আমাদের সেনাবাহিনী খুব দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।”
আজ সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কম্যাণ্ডের চীফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল জে, এস, জ্যাকব এই মন্তব্য করেন।
বাঙলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে ভারতীয় বাহিনীর অগ্রগতির বিবরণ দিয়ে তিনি জানান, এই দু’দিনে ৩১৭ জন পাকসৈন্য নিহত, ১৯৯ জন আহত ৪২৬ জন বন্দী হয়েছে। নিহতের সংখ্যা অবশ্য যে কটি মৃতদেহ গণনা করা হয়েছে, তার ভিত্তিতেই বলা হচ্ছে। পাকিস্তানীরা অনেক হতাহত নিজেদের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছে। সুতরাং হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি।
ভারতের হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে জ্যাকভ বলেন “স্বল্প ও মাঝারি ধরনের”।
তিনি জানান, যশােহর হিলি এলাকায় পাকিস্তানীরা সাময়িক ভাবে যথেষ্ট প্রস্তুতি করে ঘাঁটি গেড়েছে এই দু’জায়গায়ই তীব্র লড়াই চলেছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, পাকিস্তানী সৈন্যরা “ভালােই লড়ছে। তাদের যেহেতু বেরুবার কোনও পথ নেই তাই মরীয়া হয়ে তারা লড়াই চালাচ্ছে। তারা যখন বুঝবে যে, কোনও আশাই নেই, তখন তারা আত্মসমর্পণ করবে বলে মনে করছি। আমরা অবশ্য সবসময়েই তাদের আত্মসমর্পণকে স্বাগত জানাবাে। কারণ আমরা অনাবশ্যক রক্তক্ষয় চাই না।”
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, যেসব এলাকায় ভারতীয় বাহিনী দখল করছে, তার প্রশাসন ইত্যাদির কাজে মুক্তি বাহিনী গ্রহণ করছে বলে তিনি অনুমান করেন।
তিনি জানান, ভারতীয় বাহিনী যশােহর শহর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে ৫০০০ গজ দূরে রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পথে ভারতীয় বাহিনী ৭টি তিনটনী সাঁজোয়া গাড়ি দখল করেছে।
সূত্র: কালান্তর, ৭.১২.১৯৭১