You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.06 | নৌ-যুদ্ধে দু'টি পাক ডেট্রোয়ার ও একটি সাবমেরিন ধ্বংস | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

সমস্ত রণাঙ্গনেই বিপুল অগ্রগতি

নৌ-যুদ্ধে দু’টি পাক ডেট্রোয়ার ও একটি সাবমেরিন ধ্বংস
লাক্সাম রেল জংশন ভারতীয় বাহিনীর দখলে

নয়াদিল্লী, ৫ ডিসেম্বর (ইউ এন আই)-জল, স্থল ও অন্তরীক্ষে আজ দ্বিতীয় দিনেও ভারতীয় সেনাবাহিনী দুর্বার অপ্রতিরােধ্য গতিতে এগিয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে একটি সাবমেরিণ ও করাচী বন্দরে দুটি শত্রু যুদ্ধ জাহাজের উপর অব্যর্থ আক্রমণ চালানাে হয়েছে। আক্রমণে অন্তত; দুটি ডেস্ট্রোয়ার এবং সাবমেরিণটি ডুবে গেছে।
জয়সালমীর রণাঙ্গন থেকে পঃ পাকিস্তানের গভীরে সেনাবাহিনী প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন বিমান ঘাঁটির উপর আক্রমণ চালিয়েছে। বিমানবাহিনী শ্রীহট্ট রণাঙ্গনে জামালপুর কুর্মিটোলা বিমানবন্দর, রাজেন্দ্রগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে সামরিক লক্ষ্য বস্তুর উপর সফল আক্রমণ হেনেছে। আজ বাঙলাদেশে বক্সীগঞ্জ, মিঞা বাজার, পারিকট, লালগড়, লাক্সাম, পীরগঞ্জ, কোটচাঁদপুর হানাদার পাকিস্তান বাহিনীর কবলমুক্ত হয়ে ভারতীয় বাহিনীর পূর্ণ দখলে এসেছে।
একজন লেঃ কর্ণেলসহ প্রায় ২৫০ পাক সৈন্য বন্দী ও দু’টি ট্যাঙ্কসহ প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ভারতীয় বাহিনীর দখলে এসেছে।
আজ ভােরের দিকে ভারতীয় নৌ-বাহিনী বন্দর সহর করাচীকে প্রধান লক্ষ্য বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। স্বাধীনতার পর এই প্রথম নৌ-বাহিনী এত প্রচণ্ডভাবে আক্রমণ চালান।
দী বন্দরে দুটি পাক যুদ্ধ জাহাজ ও বঙ্গোপসাগরে একটি সাবমেরিনের উপর আমাদের যুদ্ধ জাহাজগুলি থেকে তীব্র আক্রমণ সংহত করা হয়। এর ফলে সাবমেরিনটি সহ দু’টি ডেস্ট্রয়ার ডুবে গেছে। বাঙলাদেশের বন্দরগুলির উপর আক্রমণ চালান হয়েছে।
আমাদের বাহিনীর জওয়ানরা
পাকিস্তানের সিন্ধুপ্রদেশে ঢুকেছে। এর আগে আমাদের সৈন্যরা গাদরা সহরসহ অন্যান্য কয়েকটি স্থান দখল করে নিয়েছে।
অমৃতসর ও ছাম্ব রণাঙ্গনে শত্রু সৈন্যদের আক্রমণকে প্রতিহত করা হয়েছে।
বাঙলাদেশেও স্থলবাহিনীর সৈন্যরা কমলাপুর, আখৌরা এবং হিলির উত্তরের কিছু অংশ দখল চালিয়ে যাচ্ছে।
এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন রণাঙ্গনে ৬০টি পাকিস্তানী ট্যাঙ্ক ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ চীনা ৫৯-এস ট্যাঙ্ক রয়েছে। আজই পাকিস্তান হারিয়েছে ১৮টি ট্যাঙ্ক।
আজ সকালে নৌ-বাহিনীর সংগে বিমানবাহিনীও আকাশ থেকে করাচী বন্দরের উপর আক্রমণ চালায়। তাছাড়া গতরাতে ও ভােরে পশ্চিম-পাকিস্তানের বিমান ঘাঁটিগুলির উপর আক্রমণ চালান হয়। এই আক্রমণের ফলে পাকিস্তানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সূত্র: কালান্তর, ৬.১২.১৯৭১