পশ্চিম রণাঙ্গনে পাক-কমাণ্ডো ঘায়েল
..সাংবাদিকদের সামনেই গতকাল ৩ বি “মিগ-১১টা” পাক-বিমান গুলিবিদ্ধ করা হয়।
আমাদের পক্ষে একটি ট্যাঙ্কও নষ্ট হয়নি। শবারগড়ের একমাত্র যােগাযােগ পথটি ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জম্মু রণক্ষেত্রে ৩টি শক্ত ঘাঁটির ওপর আমাদের জোয়ানরা হানা দেয়। এর ফলে ১২ জন শত্রুসৈন্য নিহত হয়। এই ঘাঁটিগুলি হল চুম্বিয়ান, কাসার ও উমরানওয়ালি।
খেমকরণের রণক্ষেত্রে গতকাল শত্রুসৈন্য অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবে তারা একটি ফাঁদে পড়ে ফলে ৩১ জন শত্রুসৈন্য নিহত হয়, ১৪ জন আহত ও ২ জন অফিসার গ্রেপ্তার হয়। এরা সকলেই বালুচ রেজিমেন্টের অন্তর্ভুক্ত। ফাজিলকায় ৩টি শত্ৰু ট্যাঙ্ক ধ্বংস হয় এবং একটি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।
আরও দুজন পাকিস্তানী অফিসার গ্রেপ্তার হয়েছে। সেইজরা আমাদের বাহিনীর সম্পূর্ণ দখলে আছে।
কাশ্মীরের হাজিপীর এলাকা সম্পূর্ণ শান্ত কেন? এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে সামরিক মুখপাত্র জানান যে ঐ অঞ্চলে প্রচণ্ড মার খাওয়ার পরই শত্রুপক্ষ ওখানে বেশি সক্রিয় নয়। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনী হাজিপীরে এক বিরাট অঞ্চল দখল করে ছিল, ১৯৬৬ সালের চুক্তির ফলে তা পাকিস্তানকে ফিরিয়ে দিতে হয়। একটি জায়গা দখল করেছে। ছ’দিন আগে এখানেই পরবত আলি দখল করা হয়েছে।
জয়সলমীরের রণক্ষেত্রে আমাদের বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে কয়েক জায়গায় হানা দেয়। সিন্ধু এলাকায় ভিঙ্গোর কমপ্লেক্সের কাছে বালিয়ার ঘাঁটিটি ভারতীয়বাহিনী দখল করেছে।
গত ১৩-১৪ ডিসেম্বর আমাদের বাহিনী গাজিপুর দখল করে। গতরাত্রে শত্রুদের প্রতি আক্রমণের ফলে ভারতীয় বাহিনীকে ঐ ঘাঁটিটি ছেড়ে দিতে হয়।
নয়াচোরের পশ্চিমে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে পিফ্লোর কাছে একটি বিমান যুদ্ধে ভারতীয় হান্টার বিমান ১টি পাক মিগ ১৯ ও একটি স্যাবার জেট গুলি করে নামিয়েছে বলে দক্ষিণ কমাণ্ডের থেকে জানান হয়েছে।
আজ বিকেলে গুরুদাসপুরে ২টি পাক জেট গুলিবর্ষণ করে ১১ জনকে হত্যা করে। ৯ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও ৭ জন আহত হয়।
শ্রীনগরের ৪টি গ্রামে যথেচ্ছভাবে বিমান থেকে গুলি চালিয়ে ও গােলাবর্ষণ করে ৯ জনকে আহত করেছে। | আজ প্রাতে পাঠানকোট থানার অন্তর্ভূক্ত নন্দনভাের গ্রামের উপর শত্রুবিমানকে গােলাবর্ষণ করে ফলে ১২ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও ৮টি বাড়ি ভস্মীভূত হয়।
আজ অমৃতসর বিমান ঘাঁটির উপর একটি পাকিস্তানী বি-৫৭ বােমারু বিমানকে গুলি করে নামানাে হয়।
পুঞ্চ শরের উপর গােলাবর্ষণের ফলে একজন বেসামরিক অধিবাসী নিহত হয়।
গতরাত্রে জয়সালমীরের উপর একটি শত্রু বিমান হানা দেয় এবং দামােদরা ও কালেদ গ্রামের উপর বােমা ফেলে। বিশেষ কোন ক্ষতি হয় নি।
পাকিস্তানী বিমানগুলি হােসিয়ারপুরে মুঝেরিমেও হানা দেয়। এতে একজন নিহত ও ৩ জন আহত হয়।
সূত্র: কালান্তর, ১৬.১২.১৯৭১