You dont have javascript enabled! Please enable it!

পাকিস্তান শিক্ষা দফতরের প্রেসনােটে ঘটনা বিশ্লেষণ
শিক্ষা সচিবের নামে প্রচারিত অসত্য বিবৃতির প্রতিবাদ

করাচী, ১৫ই ডিসেম্বর ১৯৪৭- অদ্য পাকিস্তান সরকারের শিক্ষা দফতরের এক প্রেসনােটে বলা হইয়াছে যে, পূর্ব-পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা সম্পর্কে পূর্ববঙ্গে সম্প্রতি যে বিক্ষোভ সৃষ্টি হইয়াছে তপ্রতি পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র, প্রচার ও শিক্ষা দফতরের দৃষ্টি আকৃষ্ট হইয়াছে। এ সম্পর্কে শিক্ষা সচিব মি. ফজলুর রহমানের নামে নানাপ্রকার অসত্য বিবৃতি প্রচারিত হইয়াছে। এমন কি শিক্ষা দক্ষতর কর্তৃক আহূত সাম্প্রতিক শিক্ষা সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবগুলির ভুল ব্যাখ্যাও করা হইয়াছে।
উক্ত প্রেসনােটে অবশ্য বলা হয় যে, গত শিক্ষা সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় শিক্ষা সচিব মি. ফজলুল রহমান বলেন, সাধারণ সাংস্কৃতিক ঐক্য বিসর্জন না দিয়াও আমরা প্রাদেশিক ভাষাসমূহকে কেবলমাত্র শিক্ষার মাধ্যম হিসেবেই গ্রহণ করিব না বরং সংস্কৃতি প্রচারের মাধ্যম হিসেবে সর্বাধিক পরিমাণ সমৃদ্ধি লাভের সুযােগ দিব। এই ঐক্য বজায় রাখিতে হইলে আন্তঃপ্রাদেশিক যােগাযােগের একটি ভাষার প্রয়ােজন। এবং এ সম্পর্কে উর্দুর দাবি সর্বাগ্রহণ্য ও সর্ব প্রথম বিবেচ্য।
উক্ত বক্তৃতায় পাকিস্তানের সাধারণ ভাষারূপে উর্দু দাবি সম্পর্কে শিক্ষা সচিব স্বীয় মতামত বিশ্লেষণ করেন।
তিনি বলেন, সাধারণ ভাষার আভধানিক অর্থ হইতেছে এমন একটি সাধারণ ভাষা, যাহা দ্বারা রাষ্ট্রের, নানা ভাষাভাষী জনসাধারণের মধ্যে যােগাযােগ স্থাপন করা যায়।

শিক্ষা সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবগুলি নিম্নরূপ :
‘উর্দুকে পাকিস্তানের সাধারণ ভাষারূপে গ্রহণ করিবার জন্য এই সম্মেলন পাকিস্তান গণপরিষদের নিকট সােপারেশ করিতেছে।
‘এই সম্মেলন মনে করে যে, বিভিন্ন স্কুলসমূহে উর্দু ভাষাকে বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষা দিতেই হইবে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে উর্দু শিক্ষাদানের পৰ্য্যায় নির্ধারণ সম্পর্কে প্রাদেশিক ও দেশীর রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তই বিবেচ্য হইবে। স্কুলে শিক্ষাদানের বাহন কিংবা মাধ্যম সম্পর্কে নীতি নির্ধারণ করা সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক কিংবা দেশীয় রাজ্য সরকারের বিবেচনাধীন থাকিবে।
উপরে উদ্ধৃত শিক্ষা সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাব ও শিক্ষা সচিবের উদ্বোধনী বক্ততায় স্পষ্টই বুঝা যাইতেছে যে, পাকিস্তানের বিভিন্ন ইউনিয়নের রাষ্ট্রভাষা কিংবা সরকারি ভাষা কি হইবে, সে সম্পর্কে সম্মেলনে কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নাই।
এই দফতর প্রকাশ করেন যে, উপরে উল্লিখিত ঘটনাগুলাে ভাষা সমস্যা সম্পর্কিত সকল প্রকার মতানৈক্যের অবসান ঘটাইবে এবং পাকিস্তানে একতা ভঙ্গকারী যে কোনও মনােভাবের মূলােচ্ছেদ করিবে। —এ, পি

দৈনিক আজাদ, ১৭ই ডিসেম্বর, ১৯৪৭

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!