You dont have javascript enabled! Please enable it! 1952 | বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষা কর - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষা কর

মজলিশের সভায় গৃহীত প্রস্তাব :
গত ১০ই মার্চ ঢাকা তমদুন মজলিশ অফিসে আহত এক বিশেষ সভায় ১১ই মার্চের ‘ভাষা দিবসকে পূর্ণ সমর্থন জানাইবার জন্য এক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং উক্ত দিবসটিকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য জন সাধারণের নিকট এক আবেদন করা হয়। আর একটি প্রস্তাবে ভাষা চুক্তি কার্যকরী না করার কঠোর সমালােচনা করা হয় এবং সরকারকে অবিলম্বে উক্ত চুক্তি কার্যকরী করার জন্য দাবি জানান হয়। স্মরণ থাকিতে পারে যে এই ভাষা আন্দোলন তমদুন মজলিশই সর্বপ্রথম জন্ম দেয়।
ভাষা আন্দোলন চুক্তি কার্যকর কর
ড: শহীদুল্লাহ, প্রিনসিপাল ইব্রাহিম খান ও ড: কাজী মােতাহার হােসেন সমবায়ে গঠিত এক প্রতিনিধি দল ২৩শে ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে তিনটায় প্রধানমন্ত্রী নূরুল আমীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলা ভাষাকে অবিলম্বে পূর্ববাংলার সরকারি ভাষণা করার দাবিতে অধ্যাপক এম, এল, এ, এস, সি, এ সরকারি কর্মচারী, সাহিতিকে আইনজীবী, প্রকাশক ও ছাত্রদের স্বাক্ষর যুক্ত এক স্মারক লিপি হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী এই আবেদন কার্যকরী করিবার প্রতিশ্রুতি দিয়া বলেন। যে কেরানীদের কেহ কেহ বাংলা ভাষায় নােট লিখিতে অসুবিধায় পড়িতে পারেন। প্রতিনিধিগণ তাহার জওয়াবে বলেন যে কিছু কালের জন্য তাহাদিগকে ইংরেজ ও বাংলার নােট লেখার নির্দেশ দেওয়া যাইতে পারে, যাহাতে এই সময়ের মধ্যে তাহারা শিখিয়া লইতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক শিক্ষা বাের্ড মিউনিসিপ্যালিটি, জিলা বাের্ড প্রভৃতি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলােতে এখনাে বাংলা ভাষার ব্যবহার শুরু না হওয়ায় অভিযােগ করিলে, জনাব ইব্রাহিম খান সাহেব মাধ্যমিক শিক্ষা বাের্ডে বাংলা ও ইংরেজিতে নোেট লিখিবার জন্য শীঘ্রই নির্দেশ দিবেন বলিয়া জানান।
স্মরণ থাকিতে পারে যে, গত ভাষা আন্দোলনের সময় পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থাপক পরিষদে সর্ব সম্মতিক্রমে বাংলা ভাষাকে পূর্ববাংলায় সরকারি ভাষা করার এক প্রস্তাব গৃহীত হয়। সদিচ্ছা কি সুযােগের অভাবে বলা যায় না, আজ পর্যন্তও নানা গড়িমসিতে উক্ত প্রস্তাব কার্যকরি করা হয় নাই। তাহাকেই ত্বরান্বিত করিবার জন্য আবেদনে বলা হয়।

সূত্র: ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও দলিল – সাহিদা বেগম