You dont have javascript enabled! Please enable it! 1975.02.14 | ইন্দিরা গান্ধী ও ভুট্টোর সাথে আলাপ | নিউজ উইকের প্যাট্রিসিয়া জে শেঠী | সাপ্তাহিক বিচিত্রা - সংগ্রামের নোটবুক

ইন্দিরা গান্ধী ও ভুট্টোর সাথে আলাপ

কিছুদিন আগে নিউজ উইকের প্যাট্রিসিয়া জে শেঠী উপমহাদেশে আসেন ছয় দিনের জন্য। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে তার কথা হয়। (এর মধ্যে সময় অবশ্য গড়িয়ে গেছে, বদলে গেছে প্রেক্ষিতও। তখন ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছিলেন ড্যানিয়েল ময়নিহান। আর এখন তার জায়গায় মনোনীত হয়েছেন উইলিয়াম স্যাক্সবী। মননিহান যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন প্রায় মাস খানেক আগে। আর স্যাক্সবী এখনও যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে দিল্লীতে পা দেননি। পরিবর্তন পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও। ভুট্টো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষ করে দেশে ফিরেছেন। পাক ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে নতুন জটিলতা)। শেঠির সাথে তাদের যে কথাবার্তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি প্রশ্ন ছিল, ভারত এবং পাকিস্থানের পারস্পরিক কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার কথা জোড়া লাগছে।
[দুই প্রধানমন্ত্রীর উত্তর]
ইন্দিরাঃ কূটনৈতিক সম্পর্কটা বড় কথা নয়। মৌলিক কথাটা হচ্ছে, সম্পর্ক স্বাভাবিক করবার প্রয়োজনীয় ইচ্ছাটা আছে কিনা। ভারত সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে এবং আমি মনে করি, আমরা কিছুদূর এগিয়েও গেছি। বাণীজ্য এবং যোগাযোগ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত দুটি চুক্তিতেই তার প্রমাণ। এত কিছুর পরও অবশ্য পাকিস্তান বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ভারত বিরোধী স্ট্যান্ড বজায় রেখেছে। আমাদের শান্তি পূর্ণ পারমানবিক পরীক্ষা নিয়ে সে হৈ চৈ করছে। তাই ঠিক এ মুহূর্তেই আমি বলতে পারব না যে কখন আনুষ্ঠানিক যোগাসূত্র স্থাপিত হচ্ছে।
ভুট্টোঃ আমি জানি না। এটা এখন ভারতের ওপর নির্ভর করছে। ১৯৭২ এ সিমলায় পাকিস্তনা তার ভূমিকা নিয়েছিল। তারপর কূটনৈতিক সম্পর্কটা নিতান্তই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু ভারত মনে করল যে কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্ব পরে হবে। আমরাও আর তাকে কোন ইস্যু হিসাবে দাড় করাইনি।
শেঠি দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়ে আরো কিছু আলোচনা করেছেন। এখানে তার বিবরণ দেয়া হল।
মিসেস গান্ধীর সাথে কিছু কথা

শেঠিঃ আপনি কি মনে করেন, রাষ্ট্রদূত ময়নিহান ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে পেরছেন?
ইন্দিরাঃ আমি বিশ্বাস করি যে সম্পর্কোন্নয়নের ব্যাপারটা এবং ভুল বোঝাবুঝি ময়নিহান বেশ কষ্ট স্বীকার করেছেন। কিছুটা সফলও হয়েছেন তিনি। কিন্তু আমাদের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে কোন চোখে দেখে, তার ওপর; যুক্তরাষ্ট্র কি মনে করে যে একটি দেশ বন্ধু হতে পারে তখনই যখন সে অপর দেশটি যা বলছে তা পুরোপুরি মেনে নিচ্ছে, না আমেরিকানরা মনে করে যে ভারত বন্ধু হতে পারে নীতিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত সব বিষয়ে একমত হবে, এটা অসম্ভব। আর অন্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র এর সাথে ভারতের দ্বিমত বেশী হওয়ার কারণ, তার অনুসৃত নীতি। আমাদের মধ্যে সমঝোতা কতটুকু এসেছে বলতে পারি না তবে সন্দেহ নেই যে রুদ্ধ দ্বার খুলছে। এই উন্মউক্ত দরোজার সুযোগ আমেরিকানরা নেবে কিনা, ভবিষ্যতই তা বলতে পারে।
প্রশ্নঃ দিয়েগো গার্সিয়ায় ঘাটি স্থাপন কি যুক্তরাষ্ট্র ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাঁধা স্বরূপ?
উত্তরঃ আমরা ভীষণ অসুবিধা এবং বিপদের সম্মুখীন হচ্ছি। ভারত মহাসাগরেও বাড়ছে উত্তেজনা। সবগুলো উপকূলীয় দেশই এ রকম ক্যান করছে। একটি দেশ ঘাটি গাড়লে অন্যরাও আর বসে থাকতে পারে না।
প্রশ্নঃ আমেরিকায় সবাই মনে করে যে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটির ব্যাপারে খুব সোচ্চার, অথচ ভারত মহাসাগরে সোভিয়েটের নৌ বহর উপস্থিতির ব্যাপারে তারা একটু উচ্চবাচ্য করে না।
উত্তরঃ লোকজনের এবং জাহাজের চলাফেরায় কেউ আপত্তি তুলছে না – কারণ যাই হোক, এটা একটা স্বাধীন পথ। তবে আমি মনে করি, সামরিক ঘাটি উত্তেজনা বাড়ায় আর উত্তেজনা থাকলে শেষ পর্যন্ত তা অন্য কিছুর জন্ম দেয়। সোভিয়েট জাহাজ এদিক দিয়ে শুধু চলাচল করে এবং তা একটা আলাদা অবস্থা। তবে আমরা চাইব, ভারত মহাসাগর যে কোন বিদেশী প্রভাব মুক্ত থাক।
প্রশ্নঃ সোভিয়েট ইউনিয়নের সাথে ভারতের সম্পর্ক কি আজ যতটা নিকটতর, ভবিষতেও তেমনি থাকবে?
উত্তরঃ এটা নির্ভর করছে আমাদের উভয়ের স্বার্থ এবং নীতির মিলের ওপর। যতদিন মিলছে ততদিন অবশ্যই আমাদের সম্পর্ক থাকবে ঘনিষ্ঠ। শুধু আজ নয়, অতীতেও দুর্যোগের সময় আমরা মিল খুজে পেয়েছি। বাংলাদেশ প্রশ্নে অথবা আমাদের উপনিবেশবাদ বিরোধী ভূমিকায় কিংবা তারও আগে দেশে ভারী শিল্প স্থাপন প্রশ্নে। আর রাশিয়া শুধু ভারতকেই নয় সব অনুন্নত দেশকেই সমর্থন দিয়ে আসছে। তব আমি জোর দিয়ে আবার বলতে চাইঃ আমরা এটা তাদের কাছে পরিষ্কার করে দিয়েছি এবং তারা অনুধারণও করেছে যে অন্য দের সাথে বন্ধুত্বের স্থাপনের পথে আমাদের উভয়ের এ সম্পর্ক বাঁধা হিসেবে আসে না।
প্রশ্নঃ তেলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ভারতের পরিকল্পনায় ছাট কাট করতে হয়েছে এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের অর্থনীতিতে ভবিষ্যতে কি মৌলিক পরিবর্তন ঘটবে বলে আপনার অনুমান?
উত্তরঃ মূলগত দিক ঠিকই থাকবে – মিশ্র অর্থনীতির কাঠামো।
প্রশ্নঃ বিদেশী বিনিয়োগ কত দূর সাহায্য করবে আপনাদের?
উত্তরঃ বিদেশী বিনিয়োগকে আমরা স্বাগতঃ জানাই, তবে কয়েকটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে যেখানে আমরা নিজেরা কিছু করতে পারছি না? যেখানে আমাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু আছে সেখানে বিদেশী বিনিয়োগ আমাদের অগ্রগতি বোধ করবে এবং জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তবে কেউ এখানে আসতে চাইছে না, আমাদের সাহায্য করতেও প্রস্তুত নয় কেউই। তারা এমন মূল্য চায় যা খতিয়ে দেখতে হয়।
প্রশ্নঃ বিদেশে ভারত সম্পর্ক বিরূপ প্রচারণা চলছে কেন?
উত্তরঃ আমাদের কর্মসূচী পাশ্চাতাপ্রেম বুঝতে পারছে না। ঐতিহাসিক এবং ভৌগোলিকভাবে এসব হাতে নেয়া হয়েছে। আর পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে অথচ পরিবর্তন যখন ঘটে চলেছে তখনই বিরোধী প্রচার। এর জন্য দায়ী অবশ্য সেই পরিবর্তনের ফলে যারা কষ্টে পড়েছে তারা। নেতিবাচক এসব প্রচার আবার এক দিক থেকে ভাল। উদাহরণ দেই, দুর্ভিক্ষে দিল্লীতে রাস্তায় লোক মরে পড়ে রয়েছে বলে প্রচার চললো। বিদেশ থেকে লোক এসে দেখলেন, না সব ঠিকই আছে। তার পর আমাদের শান্তি পূর্ণ পারমাণবিক বিস্ফোরণের সময় দ্বিগুণ প্রচার চালানো হল। অথচ যারা সামরিক কারণে পরমাণু অস্ত্র মজুদ করছে, সংগ্রহ করছে, তাদের ব্যাপারে কোন কথা নেই। আমরা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরীক্ষা করলাম আর মাত্রাহীন সমালোচনা হল।
প্রশ্নঃ দেশব্যাপী দুর্নীতি রোধে আপনি কি কি অসুবিধার সম্মুখীন?
উত্তরঃ আমি দুর্নীতি নিয়েই সবচেয়ে বেশী বিব্রত কিন্তু তার চেয়েও বেশী ভাবিত এ প্রশ্নে লাগাতার প্রচার নিয়ে। দুর্নীতি যেন শুধু ভারতে এবং কংগ্রেসে দলেই আছে। দুর্নীতি আছে ঠিকই এবং সর্ব পর্যায়ে তা রোধে কঠোর ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতি এখন ব্যাপক। উৎপাদনও কম। অতএব অসাধুতাও চলছে। কিন্তু উৎপাদন বেশী হলে বাজারে জিনিস বাশী থাকলে সমাধান হল, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি এবং একবার সে উন্নয়ন ঘটলে দুর্নীতি রোধ কষ্টসাধ্য নয়।
জনাব ভুট্টোর সাথে কিছু আলাপ
শেঠিঃ আপনার ওয়াশিংটন যাত্রার মূক হেতু কি?
ভুট্টোঃ বর্তমানের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে এ রকম সফরের প্রয়োজনীয়তা অনেক। আর নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফোর্ডের সাথে মতামত বিনিময়ের সুযোগও নিচে চাই।
প্রশ্নঃ পাকিস্থানের জন্য অস্ত্র সংগ্রহই কি আপনার সফরের মূল হেতু নয়?
উত্তরঃ না। আমরা সমস্ত বিষয় নিয়েই আলাপ করব। অতএব অস্ত্র পাঠানোর উপর বিধি নিষেধ তুলে নেওয়ার কথা বলতেই আমার যুক্তরাষ্ট্রের সফর এই বলা ফালাসগাস।
প্রশ্নঃ আপনি আরো অস্ত্রের প্রয়োজন অনুভব করছেন কেন?
উত্তরঃ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত আমাদেরও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে প্রয়োজনীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে পরিপূর্ণ করে তোলা প্রয়োজন। আমরা আগ্রাসী জাতি নই, কখনো ছিলামও না। বরং আমাদের উপরই আগ্রাসন হয়েছে এবং আমাদের দেশকে ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। আর এখনও প্রতিবেশীরা সামরিকভাবে আমাদের ভয় দেখাচ্ছে। আমাদের অঞ্চলটি খুবই নাজুক, যে কোন সময় যে কোন কিছু ঘটে যেতে পারে। আমরা তাই এ সব ব্যাপারে উন্মনা থাকতে পারি না।
প্রশ্নঃ পাকিস্তান কি পারমাণবিক দেশে পরিণত হবে?
উত্তরঃ আমাদের একটি নিয়ন্ত্রিত কর্মসূচী আছে, তবে তা নিতান্তই শান্তীপূর্ণ উদ্দেশ্যে এবং আমরা আশা করি, সে উদ্দেশ্যেই তাকে রাখা যাবে। আমরা সে কর্মসূচীতে কোন পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটাব না যা আণবিক অস্ত্রের পথ নির্দেশক। দেয়ালে পিঠ ঠেকে না যাওয়া পর্যন্ত তার পরিবর্তন ঘটে না। আমি আশা করি, তেমন দিন আসবে না। কেননা আর্থিক সম্পর্ককে উন্নয়ন কর্মকান্ড থেকে অনুন্নয়ন শীল ক্ষেত্রে নিয়োজিত করার পরিমাণ কি হয়, তা আমি জানি। ভারতের অবস্থা দেখেই তা বুঝতে পারছি। ভারতকে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্যে অনেক কিছু বিসর্জন দিতে হয়েছে। সমুদয় অর্থ এবং সম্পদ যদি সার, কৃষি এবং উৎপাদনে নিয়োজিত হত তাহলে ভারতের অবস্থা আজ ভিন্নতর হত এবং তাকে এত অর্থনৈতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হতো না।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের অচলাবস্থা বজায় রেখে আপনি বিহারী সমস্যার সমাধান করবেন কিভাবে? নাকি সে সমস্যা আর গ্রাহ্য নয়?
উত্তরঃ অবশ্যই তা গ্রাহ্য। আমরা সহিন্সু মনোভাব নিয়েছি এবং এক লাখ চল্লিশ হাজার বিহারীকে গ্রহণ করেছি। কিন্তু বাংলাদেশ এখন কখনো বলছে চার লাখ বিহারীর কথা আবার কখোন সাত লাখ। আমি মনে করি না, এসব বিহারী আবার ছিন্নমূল হতে চাইত যদি না বাংলাদেশ সরকারের মনোভাব এত বৈষম্যমূলক হত।
প্রশ্নঃ বিহারী প্রত্যররপণ প্রশ্নে পাকিস্তান কি বাংলাদেশের সাথে আলোচনা শুরু করতে রাজী আছে?
উত্তরঃ ইঙ্গিত আছে যে বাংলাদেশ সরকার পুনরায় আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত। আমরা আলোচনা ভেঙ্গে দেইনি, আমরা অযৌক্তিক শর্ত আরোপ করিনি, অতএব যদি তারা যৌক্তিক ভিত্তি গ্রহণ করে তবে আমরাও আলোচনা আবার শুরু করতে প্রস্তুত। বিভিন্ন বিষয় পাক ভারত সমঝোতার আলোকে আমার মনে হয়, বাংলাদেশ সরকার অর্থপূর্ণ আলোচনায় উৎসাহ পাবে।
প্রশ্নঃ অনেক পাকিস্তানী মনে করে, পাকিস্তান ভেঙ্গে যাওয়ার মানসিক প্রতিক্রিয়া এত সুদূরপ্রসারী যে তা অতিক্রম করতে কয়েক দশক লাগবে। আপনি কি মনে করেন না যে এই মরটা দারুনভাবে অতিরঞ্জিত?
উত্তরঃ যদি এটা অতিরঞ্জিত হয়, তবু এতে সন্দেহ নেই যে এর ভেতরে আছে সত্য। যদি এটা অতিরঞ্জিত হয় তাহলেও তা সত্যেরই অতিরঞ্জন।
প্রশ্নঃ দরিদ্র পূর্বাঞ্চল ছাড়া আপনি ভালই আছেন, এ বক্তব্যের ব্যাপারে আপনি কি বলবেন?
উত্তরঃ আপনি এ কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন তাদের কাছে, যারা পাকিস্তানী নয়। বিদেশীরাই সমস্ত ব্যাপারকে গাণতিক দৃষ্টিতে দেখে। একজন পাকিস্তানী যে দৃষ্টিভঙ্গী নিতে পারে না যদি তা নেয় তবে বলতে হবে তিনি এমন হিসাবী লোক যে শুধু পাউন্ড শিলিং পেন্স এর ভিত্তিতেই ভাবে।
প্রশ্নঃ আফগানিস্থানের প্রেসিডেন্ট দাউদ বলছেন যে, পাকিস্তান তার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে।
উত্তরঃ আমাকে বলতে দিন যে ঐ অভিযোগ কন সত্যতা নেই।
প্রশ্নঃ বালুচিস্তান এবং উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে আপনি কতটা কার্যকরী হয়েছেন?
উত্তরঃ জনগণের তরফ থেকে কোন বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন নেই। কিছু উপজাতীয় সর্দার বিচ্ছিনতাবাদের পথে চলেছেন। বালিচিস্তানে দু তিন জন প্রধান প্রধান উপজাতিয় সর্দার তাদের উপজাতিকে বলেছে যে বিদ্রোহ করতে। যেহেতু উপজাতীয় সর্দাররা সেখানে দেবতা হিসাবে গণ্য অতএব সে আদেশও লোকদের কাছে একেবারে দৈববাণী হিসেবে গৃহীত হল। উপজাতীয় সর্দাররা জনগণকে বলেছেন পাহাড়ে ঊঠে যেতে এবং আইন অমান্য করে যুদ্ধ করতে, জনগণ তাই করেছে।
আমরা অবশ্য একেবারে আধুনিক পথ নিয়েছি। আমরা জনগণকে বুঝিয়েছি, তাদের বলেছি পাহাড় থেকে নেমে আসতে। আমরা স্কুল গড়েছি, পানি এবং বিদ্যুৎ পৌছে দিয়েছি তাদের কাছে। এটা ছিল জনগনের হৃদয় জয়ের যুদ্ধ, আমরা সেখানেই সফলতা অর্জন করেছি।
প্রশ্নঃ আপনার সাফল্যের মূলে কি আছে?
উত্তরঃ প্রথমেই আমি জনগণের উপর বিশ্বাস স্থাপন করি এবং তাদের উৎপাদনশীল শক্তিকে পরিচালিত করি। এ ব্যাপারে আমার কোন হতাশাবাঞ্জক দৃষ্টি নেই। আমি মনে করি না যে জনগণের ভাল হয়। জনগণ অজ্ঞ এবং মূর্খ বলে কিছু যায় আসে না, কারণ তারা তাদের মৌলিক প্রয়োজন বুঝতে সক্ষম। আমি তাই তাদের উপরই আমার বিশ্বাস স্থাপন করি এবং তাদেরকেই আমার অবস্থানের ভিত্তি হিসেবে গণ্য করি। দ্বিতীয়ত, সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, এটাই আমার বিশ্বাস। আমি নিজেও পরিশ্রম করতে চেষ্টা করি। জনগণকে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করলে তাদের প্রতি আত্ননিবেদনের মনোভাবও জাগে। তাদের কল্যাণ এবং উন্নতি সাধন যদি লক্ষ্য হয় তাহলে আমার মনে হয় না কোন ভুল করতে পারি।

 

[pdf-embedder url=”https://songramernotebook.com/wp-content/uploads/securepdfs/2021/02/1975.02.14-bichitra-copy-4.pdf” title=”1975.02.14 bichitra copy”]