You dont have javascript enabled! Please enable it!

সমাজতান্ত্রিক দেশ
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন সম্পর্কে যুগােশ্লাভলীগ

বাংলাদেশের যে স্বাধীনতা আন্দোলন বিগত ২৫ শে মার্চ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ই এপ্রিল শান্তি, স্বাধীনতা ও সাম্যের জন্য সংগঠিত যুগােশ্লাভলীগের এক বৈঠক হয়।
ঐ বৈঠকের পরে যুগােশ্লাভলীগের পক্ষে এক বিবৃতি প্রচারিত হয়। এই বিবৃতিতে পূর্ব বাংলায় অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন, পাকিস্তানের দুটি অংশে স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তনের জন্য জনগণের দাবী, পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্বপাকিস্তানের সমভাবে গণতান্ত্রিক সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদি সমর্থিত হয়।
তাছাড়া, ঐ বিবৃতিতে বলা হয় যে পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক প্রশাসক জনগণের স্বায়ত্তশাসনের আশা আকাঙ্খা দাবিয়ে রাখার জন্য সেনাবাহিনী যে সব কাজ শুরু করে দিয়েছে এবং সামরিক কর্তৃপক্ষ যে ভাবে সেখানে জরুরি অবস্থা ঘােষণা করেছেন তা সারা বিশ্বে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
যুগােশ্লাভলীগের তরফে প্রচারিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সমাজনৈতিক সমস্যাবলী কোনাে দিনই সামরিক শক্তিপ্রয়ােগের মাধ্যমে সমাধান করা যায়নি। পক্ষান্তরে, মন্দ ফল হতেই দেখা গেছে। সামরিক বাহিনীর নিপীড়ন পূর্ব পাকিস্তানে জনগণের মধ্যে নতুনভাবে ঘৃণা ও বিদ্বেষের সৃষ্টি করেছে এবং পূর্ব ও প, পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে বিরাট ব্যবধান রচনা করে শান্তিপূ সমাধানের উপায় একেবারে অসম্ভব করে তুলেছে।
শান্তি, স্বাধীনতা ও সাম্যের জন্য প্রতিষ্ঠিত যুগােশ্লাভ লীগ প্রত্যেক জাতির স্বায়ত্তশাসনের অধিকার সমর্থন করে। তাই লীগ মনে করে যে পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলার) জনগণের অধিকারকে অবশ্যই স্বীকৃতি দিতে হবে। তা হলেই পাকিস্তানের উভয় অংশের জনগণের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে। সামরিক শক্তির মাধ্যমে কোনাে ক্রমেই স্থায়ী মীমাংসা করা যাবে না। পক্ষান্তরে ঐরকম শক্তি ব্যবহারের ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে এবং বিশ্বের ঐ অংশে শান্তি বিঘ্নিত হবে।

সূত্র: কম্পাস, ১৫ মে ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!