You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.13 | জাতিসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম | কম্পাস - সংগ্রামের নোটবুক

মতামত
জাতিসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম
অমর রাহা

সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও শােষণের বিরুদ্ধে বা, এক কথায় ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সগ্রামের কথা প্রথম বলেন মার্কস ও এঙ্গেলস। এঁরা বার বার করে আইরিশ প্রশ্ন তুলে ধরছেন। আর এরই অন্তনিহিত নীতির প্রকাশ, বিশ্লেষণ ও প্রয়ােজনীয় কর্তব্য সম্বন্ধে লেনিন বার বার বিপ্লবী ও প্রগতিশীলদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
কোনাে দেশ বা জাতি যদি অন্য কোনাে দেশ ও জাতিকে শৃঙ্খলাবস্থায় রাখে তবে সেই অত্যাচারী জাতি ও দেশের চরিত্র ও অবস্থা এমন হয় যে নিজেও স্বাধীন ও মুক্ত হয়ে প্রগতির পথে এগােতে পারে না। সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলাে তাই প্রতিক্রিয়াশীলতাই উপনিবেশগুলাের মুক্তি সংগ্রাম পরিশেষে বা অন্তে সাম্রাজ্যবাদী বা ঔপনিবেশিকের মুক্তিরূপেই দেখা দেয়।
এই মুক্তি সংগ্রাম কখনাে সশস্ত্র, কখনাে বা শান্তিপূর্ণ ভাবেই প্রকাশ পায়। এই শতাব্দীর প্রথমদিকে নরওয়ে স্বাধীন হয় স্রেফ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে। কিন্তু, রুশীর জারতন্ত্র অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু রাখায় জাতি সমূহের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার বাস্তবরূপ নেয় ভিন্ন পথে। এমনি ভাবে উদাহরণ সংগ্রহে করলে দেখা যাবে যে সগ্রামের রূপ ও পদ্ধতি সশস্ত্র হবে, না শান্তিপূর্ণ হবে তা নির্ভর করবে ঘটনার ঘাতপ্রতিঘাত ও তদানীন্তনকালীন অবস্থার ওপর। এই তাে ফরাসি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যখন আলজেরিয়া দীর্ঘ ছয়-সাত বছর ধরে সশস্ত্র সংগ্রাম চালাচ্ছিল, তখন এগারটি ফরাসি আফ্রিকান উপনিবেশ স্বাধীন হলাে স্রেফ ব্যালট বক্স মাধ্যমে।
এতদসত্ত্বেও আজ বিংশ শতাব্দীর সপ্তম দশকেও ইতিহাসের কোনাে শিক্ষা গ্রহণ না করে ছােট-বড় ঔপনিবেশিক শক্তি জাতিসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার স্বীকার করতে অক্ষম। উল্টে এমন সব বর্বর পদ্ধতি এরা গ্রহণ করেন যাতে সভ্যসমাজ লজ্জিতই হয়। বাংলাদেশের প্রশ্ন ঠিক এমনিতর, কারণ ইসলামাবাদ এমন পদ্ধতি গ্রহণ করেছে বা করছে যার একমাত্র নজীর বােধহয় মধ্য যুগীয় ইনকুইজিশন”।

মহান অক্টোবর
আজ মহান অক্টোবরের ৫৪-তম বছরে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে নব দিগন্ত সৃষ্টি করেছে।
শান্তি ও জাতিসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রশ্ন নিয়ে লেনিন ও বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে মহান অক্টোবর খুলে দিল নতুন পথ। সােভিয়েত রূপ নিল বিভিন্ন মানুষ, জাতি ও জাতীয় চরিত্রের সম্মিলনস্থল হিসেবে কোনাে বিদ্বেষ নিয়ে নয়, সুসভ্য ও মানবিক অনুভূতি ও বুঝা পড়ার ভাব নিয়েই জন্ম নিল নব সমাজ। সারা বিশ্ব দেখল নব ইতিহাসের প্রত্যুষের নবীন আলাে।
এই নব সমাজ আজ একা নয়। আজ ভৌগলিক দিক দিয়ে বার্লিন হতে ৩৭ প্যারালেল লাইন এবং উত্তর মেরু হতে ১৭ প্যারালেল লাইন পর্যন্ত এই সমাজতান্ত্রিক জগৎ। আর, বিজ্ঞান, অর্থনৈতিক মান এবং টেকনলজি প্রভৃতির দিক দিয়ে, সামগ্রিকভাবে আজ সমাজতান্ত্রিক জগৎ এমন পর্যায়ে এসেছে যে মরণােন্মুখ পুঁজিতন্ত্রবাদ তার মােকাবিলা করতে হিমসিম খাচ্ছে।
এবম্বিধ ঐতিহাসিক ধারায় এখন সেইসব দেশ ও জাতি মুক্তি সগ্রাম করছে যারা এখনও রয়েছে ঔপনিবেশিক জোয়ালে আটকা। সদ্যমুক্ত জাতি ও দেশগুলাের কাছে যেমন মরণােম্মুখ সামাজিক ব্যবস্থা মশার এবং অনুকরণের যােগ্য না হয়ে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলােই হচ্ছে আশা ও শ্রীবৃদ্ধির উদাহরণ বা আদর্শস্থানীয়, ঠিক তেমনি শৃঙ্খলাবদ্ধ দেশ ও জাতির ক্ষেত্রেও ঐ একই কথা।
স্বল্পকথায়, মহান অক্টোবরের ঐতিহ্য বাহক প্রত্যেকটি সমাজতান্ত্রিক দেশ তাই সর্ব সময়েই সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী আন্দোলন বা সংগ্রামের অনুকূলেই নিজ কর্তব্য পালন করে থাকে। অধুনা স্বাক্ষরিত ভারত-সােভিয়েত চুক্তির তৃতীয় অনুচ্ছেদে তাই উল্লেখ করা হয়েছে : …উপনিবেশবাদ ও বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে যে জাতি ও দেশ তার আশা আকাঙ্খার জন্য সগ্রাম করতে, উভয় দেশই তাদেরকে সাহায্য করবে বা সহযােগিতা করবে।
সংগ্রামী বাংলাদেশ ও তার প্রতিবেশী, সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী ঐতিহ্যবহনকারী ভারতীয় জনমত এবং তাদের সংসদীয় প্রতিনিধিরা নিঃশর্তভাবেই উক্ত চুক্তিতে খুশিই হয়েছে।

বাংলাদেশ সম্রামের পটভূমিকা
সংগ্রামী বাংলাদেশ সেদিনও ছিল পাকিস্তানের অংশ। আর এই পাকিস্তানের জন্মের একটা ইতিহাসও আছে।
প্রাক ১৯৪৭ সালের জাতীয় আন্দোলনের ভুলভ্রান্তি ছাড়া সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী আন্দোলনের পথে এসে কণ্টকরূপে দেখা দেয় নানা জাতীয় আভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া। ধর্মভিত্তিক আন্দোলনের দাবীদাওয়ার দ্বিবিধ প্রকাশ পায় হিন্দুমহাসভা ও মুসলীম লীগের মধ্যে দিয়ে। এছাড়া আবার ত্রিশের দশকের বামপন্থী আন্দোলন মুসলিম লীগকে গ্রহণ করল প্রগতিশীল সংস্থা বলে [তখনকার দি কমিউনিস্ট দ্রষ্টব্য] ঠিক তেমনি এই লীগের দাবিকে ডায়ালেকটিক্যাল আবরণ ও আভরণ দিয়ে জনসমক্ষে হাজিরও করা হলাে [জি, অধিকারীর রাইট অব সেলফ-ডিটারমিনেশন অব নেশন দ্রষ্টব্য ]। চতুর সাম্রাজ্যবাদী যেমন সুযােগ নিল জাতীয় আন্দোলনের ভুলভ্রান্তির, ঠিক তেমনি যুদ্ধকালীন বামপন্থী সহযােগীদেরও বােধহয় আরও বেশি করে উৎসাহ দিতে কসুর করল না।
এমনি পরিবেশে, অর্থাৎ জাতীয় তুত্বের ভুলভ্রান্তি এবং বামপন্থীদের লীগ অনুকূলজাত বক্তব্যকে আর্শীবাদ হিসেবে গ্রহণ করে চতুর সাম্রাজ্যবাদ এই উপমহাদেশকে করল দ্বিখণ্ডিত- জন্ম হলাে একদিকে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র পাকিস্তানের এবং উক্ত আবর্জনা ও জঞ্জাল নিয়ে জন্ম নিল ভারত।
কিন্তু, পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ১৯৫২ সাল হতে ধীরে ধীরে এবং দৃঢ়তার সঙ্গে দেখা দিল এক দিগন্ত কারী সংগ্রাম। মাতৃভাষা, ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের অবসান, পূর্ণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বাস্তব রূপায়ন এবং পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্বাঞ্চলকে উপনিবেশ হিসেবে শাসন ব্যবস্থার অবসানের জন্য সংগ্রাম শুরু করল যুব ও তরুণ মন। শেখ মুজিব নেতৃত্ব হলাে এই ধারারই প্রতীক।
তাই যেমন দেখা যায় ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি ঠিক তেমনি হলাে ১৯৬৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি। ২১ শে ফেব্রুয়ারি তরুণরা আত্মত্যাগ করল মাতৃভাষার জন্য, আর ১১ই ফেব্রুয়ারি আত্মত্যাগ হল গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য। গঙ্গা-যমুনা-কাবেরী পাড়ের আমরা তখনও অনুধাবন করতে পারিনি পদ্মামেঘনা-ধরলা পাড়ের সংগ্রামের রূপ ঢং ও গভীরতাকে। এর জন্য আমাদের লজ্জাও হয়নি, যেমন হয়নি অতীত ভুলের সাক্ষাৎ মাশুল যখন দেশ দিল মহাত্মার হত্যার মধ্য দিয়ে। [এই প্রসঙ্গে শুধু এখানে এটুকু বললেই যথেষ্ট হবে যে আজও আমাদেরকে ন্যাশনাল ইনটিগ্রেশন – (বা জাতীয় সংহতি) ও কমনাল হারমনি বা সাম্প্রদায়িক সদ্ভাবের জন্য সংগঠন করতে হয় এবং কালে অকালে প্রচার কার্যও করতে হয়।]
যাক, সে কথা। আমাদের লজ্জা না হলেও পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের মানুষদের লজ্জাবােধ আছে এবং তাই তারা ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র ইত্যাদির বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেছেন মুখ্যত জন্মের প্রথমদিন হতে। মার্কস বলেছেন যে বিপ্লবের প্রথম শর্তই হলাে লজ্জার উদ্রেক লজ্জা হওয়া মানে হচ্ছে নিজের বিরুদ্ধেই ক্রোধ।…

২৫শে মার্চ প্রাক পরবর্তীকাল
সলামবাদ সামরিক চক্র যখন পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের আন্দোলনকে রােধ করতে সক্ষম হলাে না, তখন [চব্বিশ বছর পর ব্যবস্থা করল সাধারণ নির্বাচনের। এবং শেখ মুজিবের নেতৃত্বে সমগ্র পাকিস্তানের ন্যাশনাল এ্যাসেমব্লির ৩১৩ আসনের মধ্যে দখল করল ১৬৯ টি আসন—অর্থাৎ, একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে প্রকাশ পেল।
এই নির্বাচনের আর একটি দিকও আছে। পাকিস্তানের বামপন্থীরা কি ভূমিকা গ্রহণ করেছিল এই নির্বাচনকালে বা কি পেয়েছেন তা তারাই বলবেন। থাক এ কথা।
যাহােক, নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে মেনে না নিয়ে ২৫শে মার্চ রাতে ইসলামাবাদ সামরিক জান্তা শুরু করে “জেনােসাইড,” আর রাতের অন্ধকারে চোরের মতাে এসে ধরে নিয়ে গেল শেখ মুজিবর রহমানকে।
সামরিক বাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত জনসাধারণ বাধ্য হলাে সশস্ত্র প্রতিরােধ করতে। আর এই জনসাধারণের দাবীকে বাস্তব রূপ দিল পাক সৈন্য বাহিনীর বাঙালি অফিসার ও সৈনিকবৃন্দ মেজর জিয়া চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র হতে জনসাধারণকে আহ্বান করল স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য লড়তে, এল মেজর খালেদ, এল মেজর মনজুর মেজর জলিল প্রভৃতি। আর জন্ম নিল মুক্তিবাহিনীর।

সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী মুক্তি সগ্রাম
ইসলামাবাদ হলাে সিয়াটোসেনটো গােষ্ঠীর। আর পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে সাম্রাজ্যবাদীরা আস্তানা করে চালাচ্ছিল সেইসব কাজ যার ফলে ভারতের সংহতি ও সার্বভৌমত্ব সর্বতােভাবেই ক্ষুন্ন হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। অতএব এদিক হতেও বাংলাদেশের মুক্তি বাহিনীর সগ্রাম হলাে সাক্ষাত্তাবে সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী সংগ্রাম এবং সেই সঙ্গে সু-প্রতিবেশীসুলভ দৃষ্টিভঙ্গীজাত আদর্শ।
এদিক দিয়ে সমাজতান্ত্রিক জার্মানির ডাক্তার হেইনার ভিঙ্কলার “বেসলিনার সােইদুং”- এ (১৯৬১, ১৫ই জুলাই] বাংলাদেশের সগ্রামকে সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী সংগ্রাম বলেই উল্লেখ করেছেন, যেমন করেছে যুগােস্লাভিয়া বা অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু, আরও একটা দিক আছে এবং তা হলাে সদ্যমুক্ত স্বাধীন দেশগুলাের দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে। আলজেরিয়া পুরােপুরি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এবং তার প্রকাশ আমরা দেখতে পাই আলজেরিয়া সােভিয়েত যুগ্ম ইস্তাহারে। এই ইস্তাহারে পাকিস্তানের জাতীয় ঐক্য ও সংহতি রক্ষার স্বীকৃতি নাকি রয়েছে…। আর তৃতীয় দিকটা হলাে ইসলামধর্ম অধ্যুষিত উত্তর আফ্রিকান রাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্য রাষ্ট্রগুলাে ধর্মভিত্তিক পাকিস্তান রাষ্ট্রের অনুকূলেই মত প্রকাশ করেছে। অতএব এসব বিচার করলে নানাবিধ প্রশ্ন ওঠার সম্ভাবনা থাকে যদি না গভীর কূটনৈতিক ও অন্যান্য জটিল প্রশ্ন লুক্কায়িত থেকে থাকে। বিশেষ করে চোখে হয়ত পড়তে পারে, ভারত সােভিয়েত চুক্তির ৩নং অনুচ্ছেদ ও আলজেরিয়া সােভিয়েত যুগ্ম ইস্তাহারের পরস্পর বিরােধী অবস্থা।

ভারতের ভূমিকা
ভারতীয় প্রজাতন্ত্র সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী সংগ্রামের ঐতিহ্য বহনকারী বলে দাবী করে এবং সেই জন্যই সরকারিভাবেই জানিয়েছে নৈতিক সমর্থন।
এই নৈতিক সমর্থন জানিয়েও সে একদিকে যেমন অনগ্রসর অর্থনৈতিকজাত অবস্থা সত্ত্বেও উদার ও বৈপ্লবিক মন নিয়ে ভার নিয়েছে লাল-লাখ শরণার্থীর, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের সংগ্রামীদের সমর্থনে বিশ্বজনমত ও রাষ্ট্রমত করবার জন্য বিশেষভাবে সচেষ্ট।
এই প্রচেষ্টায় সে এতদিন যেন একাই ছিল। আর একা থাকার জন্য ছিল বহুধা সংকোচ। মনে হয় মার্শাল টিটোর এদেশে আগমনের পর সেই নিঃসঙ্গতা যেন বেশ কিছু কেটে গেছে। কারণ মার্শাল টিটোর চলে যাওয়ার পরদিনই পররাষ্ট্র দপ্তর মুখপাত্র বলেছেন: প্রয়ােজন হলে আমরা মুক্তি বাহিনীকে সাহায্য করব [ ইংরেজী সাপ্তাহিক লিঙ্ক কিন্তু টিটোর আগমনকে একটা মামুলী কূটনৈতিক ব্যাপার বলে উড়িয়ে দিয়েছে।]
যাক, মহান অক্টোবর দিন আশা করা যায় যে পদ্মা-মেঘনা-ধরলা পাড়ের সংগ্রামীদের বলিষ্ঠ সগ্রাম সৃষ্টি করবে নব দিগন্ত। আর ভারতীয় প্রজাতন্ত্র এই সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নিজের অতীত পাপের যেমন করছে প্রায়শ্চিত্ত ঠিক তেমনি অংশ নিচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী সংগ্রামে। যদি কোনাে মারাত্মক ভুলভ্রান্তি ভারত না করে বসে, বা পাক ফাঁদে পা দিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে তবে সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী সগ্রামে এবং মহান অক্টোবর বিপ্লবের ধারায় ভারতের ভূমিকা সত্যই হয়ে থাকবে স্মরণীয়।

সূত্র: কম্পাস, ১৩ই নভেম্বর ১৯৭১