You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.25 | না চাইলেও যুদ্ধ হতে পারে | কম্পাস - সংগ্রামের নোটবুক

১৯৭১-১০ই জুলাই
না চাইলেও যুদ্ধ হতে পারে

ভারত সরকার বাংলাদেশের ব্যাপারে “যুদ্ধ” কথাটা ভারতবাসীদের মুখ থেকে শুনতে চান না। মন্ত্রী মহাশয়দের সঙ্গে কোনাে কথা তুলতে গেলে প্রথমেই তারা একটা সীমানা টেনে দেন যুদ্ধ চলবে না। কোনাে অবস্থাতে যুদ্ধ চলবে না এই যদি ধরে নেওয়া হয়, তবে বিচার বিবেচনার ক্ষেত্র অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়ে। এমনিতেই ভারতবাসীরা যুদ্ধ কাকে বলে জানে না, তার উপর এমন সংকটের দিনে যখন ভারত ইচ্ছা না করলেও ভারতের উপরেই পাকিস্তান যুদ্ধ ঘােষণা করে দিতে পারে, তখন এই প্রস্তুতিহীন ভারতবাসীরা কীভাবে যুদ্ধটাকে নেবে?
পাকিস্তান নিজের গরজেই কোনাে যুদ্ধ ঘােষণা করতে পারে না, এমন কথা কি বলা যায়? ওরা প্রতিদিন সীমান্তের এপারে গােলাগুলাে নিক্ষেপ করছে, সীমান্ত বরাবর ভারতীয় বাসিন্দারাও সীমান্ত ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে, প্ররােচনার অন্ত নেই তাদের পক্ষ থেকে।
রাত্রি দিন পাকিস্তান তার অস্ত্রশস্ত্রের সম্ভার অফুরন্ত করার জন্য লেগে আছে। প্রতিরক্ষার জন্য কনক্রিটের বাঙ্কার তৈরি করে নিচ্ছে, ওদের ফায়ারপাওয়ার প্রচণ্ড বাড়িয়ে চলেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মুক্তিফৌজ যদি খুবই শক্তিমান হয়ে ওঠে এবং মুক্তিফৌজেরা ভারত ও বাইরে থেকে সাহায্য পেতেই থাকে তবে নিজের প্রজাদের কাছে হেরে যাওয়ার চেয়ে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করে হারাটা পাকিস্তান শ্রেয় বলে মনে করবে। এক্ষেত্রে আক্রমণই আত্মরক্ষার সবচেয়ে ভাল উপায়। একটা কোনাে যুদ্ধ বাধিয়ে দিলে যুক্ত জাতিসঙ্ঘের সিকিউরিটি কাউন্সিল এসে উপস্থিত হবে এবং এমন এক জায়গায় যুদ্ধবিরতি সীমারেখা টেনে দেবে সিকিউরিটি কাউন্সিল যা মানতে গিয়ে পাকিস্তানের মুখ রক্ষা হয়তাে হয়ে যাবে।…
(সম্পাদকীয়)

সূত্র: কম্পাস, ২৫শে ডিসেম্বর ১৯৭১