চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে মুক্তিফৌজ
এদিকে মুক্তিপাগল জনতা আজ নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, টাঙ্গাইল প্রভৃতি এলাকাগুলি সম্পূর্ণ মুক্ত করেছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসৈন্য অভিযান শুরু করেছেন।
আজ নতুন খবর হলাে বাঙলা দেশে নতুন সরকার হয়েছে। যার সদর দপ্তর হয়েছে চট্টগ্রামে। জঙ্গীশাহীর কবল থেকে বাঙলাদেশকে মুক্ত করার জন্য তৈরী হয়েছে ১২ জনের এক পরিচালক মণ্ডলী। সরকার ও পরিচালক মণ্ডলীর সর্বোচ্চ কর্তৃত্বে আছেন মুজিবর রহমান। সরকারের প্রধান হয়েছেন মেজর জিয়া। আর পরিচালক মণ্ডলীর দ্বিতীয় প্রধান হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক তাজুদ্দিন আমেদ।
আজ সকালে কোন অজ্ঞাত স্থানে স্বাধীন বাঙলার বেতারে ঘােষক সরকার ও সংগ্রাম পরিচালনা কমিটির সংবাদ দিলেন। বিশেষ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে আবেদন জানালেন এই নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। ঐ ঘােষক ঘােষণা করলেন, ভাই সব সগ্রামের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চল। পাকিস্তান রেডিওর মিথ্যা প্রচারে বিভ্রান্ত হয়াে না। স্বাধীন বাঙলা বেতার থেকে কি করতে হবে তা জেনে নাও।
রে জানা গেল ঐ বেতার ঘােষণা করেছে মুক্তিবাহিনী লিবারেশন আর্মি’ আজ সকাল ৮-৪৫ মিঃ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখে যুদ্ধ যাত্রা করেছে।
শিলং এ ধরা পড়া আর এক সংবাদে দৃঢ়তার সঙ্গে ঘােষণা করা হয়েছে শহরাঞ্চলে মুষ্টিমেয় কিছু পকেট বাদে সর্বত্র মুক্তি যােদ্ধারা তাদের তষ্ঠা করেছেন। জঙ্গী শাহীর সামরিক বাহিনী এক কঠিন চাপের মধ্যে পিষ্ট হচ্ছে। ওদের খাদ্য এবং জলাভাব দেখা দিয়েছে।
আশা করা যাচ্ছে ওরা শীঘ্রই আত্মসমর্পণ করবে।
বাঙলাদেশের স্বাধীন বেতার কেন্দ্র ৩.৫০ মিঃ এ ধরা যাচ্ছে পাকিস্তান সময় সকাল ৯ টা, ১টা এবং সন্ধ্যে ৭.৩০ মিঃ এ এখান থেকে সংবাদ শােনা যাচ্ছে।
সামরিক কর্তারা অবাঙ্গালীদের অস্ত্র দিচ্ছে
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জানানাে হয়েছে, পাকিস্তানী সামরিক কর্তৃপক্ষ ঢাকার অবাঙালীদের কাছে অস্ত্র বিতরণ করছে। এরা সামরিক শাসনের প্রতি বিশ্বস্ত আছে এই বিবেচনায় এ কাজ করা হচ্ছে।
পূর্ব বাঙলার পুলিশও বিপক্ষে
পাকিস্তান সামরিক কর্তৃপক্ষ আজ কার্যত স্বীকার করেছে, বাঙলাদেশের পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
রেডিও পাকিস্তান ঢাকা, সব পুলিশকে আগামীকাল কাজে যােগদানের জন্য পুনঃ পুনঃ আহ্বান করছে। এদের গত শনিবার কাজে যােগদানের হুকুম দেওয়া হয়েছিল।
সূত্র: কালান্তর, ২৯.৩.১৯৭১